মেসিকে অন্ধকারে রাখা বিশ্বকাপ ফুটবলের নায়কের বিদায়

বল পায়ে আর দৌড়াতে দেখা যাবে না ডিয়েগো ফোরলানকে। ফাইল ছবি
বল পায়ে আর দৌড়াতে দেখা যাবে না ডিয়েগো ফোরলানকে। ফাইল ছবি
>পেশাদার ফুটবলকে বিদায় বলে দিয়েছেন ডিয়েগো ফোরলান। ২০১০ বিশ্বকাপে তাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্সেই চতুর্থ হয়েছিল উরুগুয়ে। ওই বিশ্বকাপে ৫ গোল করেছিলেন, জিতেছিলেন সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গোল্ডেন বলও। পরের বছরই উরুগুয়ের হয়ে জেতেন কোপা আমেরিকা।

২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ ছিল লিওনেল মেসির জন্য প্রথম নায়ক হওয়ার মঞ্চ। দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছিলেন বিশ্বকাপকে তাঁর রঙে রাঙাতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হতাশার বিবর্ণ আঁধারে ঢেকে গিয়েছিলেন আর্জেন্টাইন তারকা। আর সেই মঞ্চে আলো ছড়িয়েছিলেন ডিয়েগো ফোরলান। বিশ্বকাপের আগে সম্ভাব্য নায়ক হিসেবে যাঁর নাম খুব বেশি উচ্চারিত হয়নি, সেই উরুগুয়ের ফোরলানই হয়েছিলেন বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়। পেশাদার ফুটবলকে বিদায় বলে দিয়েছেন উরুগুইয়ান এই কিংবদন্তি।

উরুগুয়ের জার্সিটা তুলে রেখেছেন চার বছর আগেই। ২০১৫ সালের মার্চে জাতীয় দল থেকে অবসর নিলেও ক্লাব ফুটবলে খেলা চালিয়ে গেছেন এরপর অনেক দিন। তবে সাম্প্রতিক কালে সেখানেও দেখা যাচ্ছিল না ফোরলানকে। সব ধরনের ফুটবল থেকে অবসরের আনুষ্ঠানিক ঘোষণাটাই শুধু বাকি ছিল। সেই ঘোষণাও গতকাল মঙ্গলবার দিয়ে দিয়েছেন ৪০ বছর বয়সী ফোরলান। ২১ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারের ইতিটা টেনেই দিয়েছেন তিনি।

গত বছর মে মাসে হংকংয়ের ক্লাব কিটচের হয়ে শেষবার মাঠে নেমেছিলেন ফোরলান। ওই মৌসুমে ক্লাবের হয়ে লিগও জিতেছিলেন। কিটচের সঙ্গে চুক্তি শেষ হওয়ার পর আর নবায়ন করেননি। গতকাল অবসরের ঘোষণায় বলেছেন, ‘এটা সহজ ছিল না। আমি চাইনি এমন কোনো সময় আসুক। কিন্তু আমি জানতাম এমন কিছু ঘটবে। আমি পেশাগতভাবে ফুটবল খেলা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

বিখ্যাত উরুগুইয়ান ক্লাব পেনারলের যুবদলে খেলেছেন। তবে আর্জেন্টিনার ক্লাব ইন্দিপেন্দিয়েন্তের হয়ে ১৯৯৭ সালে পেশাদার ফুটবলে অভিষেক হয় ফোরলানের। এরপর ইউরোপে পাড়ি জমিয়ে খেলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ভিয়ারিয়াল, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, ইন্টার মিলানের মতো ক্লাবে। ইউনাইটেডের হয়ে জিতেছেন প্রিমিয়ার লিগ ও এফ এ কাপ; অ্যাটলেটিকোর হয়ে জিতেছেন ইউরোপা লিগ। লা লিগার সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার পিচিচি ট্রফি জিতেছেন দুবার।

২০০৪-০৫ মৌসুমে ভিয়ারিয়ালের হয়ে ৩৮ ম্যাচে ২৫ গোল করেন প্রথমবার। পরেরবার অ্যাটলেটিকোর হয়ে ২০০৮-০৯ মৌসুমে ৩৩ ম্যাচে ৩২ গোল করেন। ওই দুবারই জেতেন ইউরোপের লিগ ফুটবলের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু। ক্যারিয়ারের শেষ দিকে কেরেজো ওসাকা ও মুম্বাই সিটির হয়েও খেলেছেন, সব মিলিয়ে ক্লাব ফুটবলে ৫২৫ ম্যাচে করেছেন ২২২ গোল।

জাতীয় দলের হয়েও সমান উজ্জ্বল ফোরলান। ১১২ ম্যাচে ৩৬ গোল করে একসময় তিনি উরুগুয়ের সর্বোচ্চ গোলদাতাও ছিলেন, পরে সে রেকর্ড ভেঙে দেন লুইস সুয়ারেজ। ২০১০ বিশ্বকাপে তাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্সেই চতুর্থ হয় উরুগুয়ে। ওই বিশ্বকাপে ৫ গোল করেছিলেন, জিতেছিলেন সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গোল্ডেন বলও। পরের বছরই উরুগুয়ের হয়ে জেতেন কোপা আমেরিকা।