ইউরোপের 'সুপার' সেরা হওয়ার লড়াই আজ

শিরোপা উঠবে কোন দলের ঘরে? ছবি : টুইটার
শিরোপা উঠবে কোন দলের ঘরে? ছবি : টুইটার
>উয়েফা সুপার কাপে বাংলাদেশ সময় আজ রাত ১টায় মুখোমুখি হবে লিভারপুল ও চেলসি। ইউরোপের শীর্ষ দলগুলোকে নিয়ে আয়োজিত চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতেছে লিভারপুল। আর ইউরোপে দ্বিতীয় সারির ক্লাবগুলো নিয়ে আয়োজিত ইউরোপা লিগের শিরোপা জিতেছে চেলসি

এবার ইউরোপের শীর্ষ দুই প্রতিযোগিতা জিতেছে লিভারপুল ও চেলসি। শীর্ষ দলগুলোকে নিয়ে আয়োজিত চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতেছে লিভারপুল, আর ইউরোপের দ্বিতীয় সারির ক্লাবগুলোর প্রতিযোগিতা ইউরোপা লিগের শিরোপা উঠেছে চেলসির ঘরে। এ দুই দলের মধ্যে সেরা কোন দল? তা নির্ধারিত হবে আজ রাতে। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে উয়েফা সুপার কাপে মুখোমুখি হবে এ দুটি ক্লাব, আজ রাত একটায় (বাংলাদেশ সময়)।

বেশ কিছু দিক দিয়ে এবারের সুপার কাপ অনন্য। ইতিহাসের প্রথমবারের মতো ‘অল-ইংলিশ’ সুপার কাপ দেখতে যাচ্ছে বিশ্ব। এর আগে ইতালি ও স্পেনের ক্লাবগুলো এ গর্বের অংশীদার হলেও আগে কখনোই দুই ইংলিশ ক্লাব এ ট্রফির লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়নি। ১৯৯০ সালে ইতালির দুই ক্লাব সাম্পদোরিয়া আর এসি মিলান পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছিল এ শিরোপার জন্য। ইউরোপিয়ান কাপ উইনার্স কাপের (ইউরোপা লিগের আগে কাপ উইনার্স কাপের বিজয়ীরাই খেলতেন সুপার কাপে) বিজয়ী সাম্পদোরিয়াকে সেবার ৩-১ গোলে হারিয়েছিল ইউরোপিয়ান কাপ (তৎকালীন চ্যাম্পিয়নস লিগ) জয়ী এসি মিলান।

স্পেনের ক্লাবগুলো পরস্পরের সঙ্গে সুপার কাপে মুখোমুখি হয়েছে পাঁচ বার, গত পাঁচ বছরে চার বার। এই প্রথম পুরুষদের ইউরোপীয় প্রতিযোগিতার কোনো ম্যাচে রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন একজন মহিলা রেফারি—স্টেফানি ফ্র্যাপার্ট। ২৫ বছর বয়সী এ ফরাসি রেফারির সহকারী হিসেবেও থাকবেন দুজন নারী রেফারি, ম্যানুয়েলা নিকোলিসি ও মিশেল ও’নিল। গত মাসে অনুষ্ঠিত মহিলা বিশ্বকাপের ফাইনালেও ম্যাচ পরিচালনা করেছিলেন এ তিনজন।

দুটি ক্লাব বিপরীতমুখী ফর্ম নিয়ে খেলতে যাচ্ছে এ ম্যাচে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ম্যাচে নরউইচ সিটিকে ৪-১ গোলে হারিয়ে লিভারপুল আছে ফুরফুরে মেজাজে। ওদিকে ইউরোপা লিগ জয়ী চেলসির অত সুখ নেই। নতুন কোচ ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের অধীনে লিগের প্রথম ম্যাচেই প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে এক হালি গোল হজম করেছে তারা। লিভারপুলকে হারাতে হলে নিজের দলের দুর্বলতাগুলো ঢাকতে হবে তাদের। আর সে কাজে বেশ ভালো কাঠখড় পোড়াতে হবে ল্যাম্পার্ডকে।

দলের ফর্ম ফেরানোর কাজটা সহজ হবে না ল্যাম্পার্ডের জন্য। মূল একাদশের বেশ কয়েক জন খেলোয়াড় এখনো চোটে আক্রান্ত, প্রয়োজনীয় ম্যাচ ফিটনেস নেই। ব্রাজিলের উইঙ্গার উইলিয়ান, জার্মান সেন্টারব্যাক আন্তোনিও রুডিগার, ইংল্যান্ডের তিন তরুণ তারকা রুবেন লফটাস-চিক, ক্যালাম হাডসন-ওডোই ও রিস জেমস, কেউই এখনো পুরোপুরি সুস্থ না। সুস্থ নন ফরাসি মিডফিল্ডার এনগোলো কান্তেও। তাও ম্যাচ শুরুর আগে একদম শেষ মুহূর্তে কান্তের ফিটনেস পরীক্ষা হবে, পাস করতে পারলে হয়তো ম্যাচে দেখা যাবে তাঁকে। সব মিলিয়ে বলা যায় ল্যাম্পার্ডের হাতে সুস্থ খেলোয়াড়ের সংখ্যাও অনেক কম।

লিভারপুলের চোট সমস্যা অত বেশি না হলেও, তাদের যে একজন খেলোয়াড় চোটে আক্রান্ত, সেটাই কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপের কপালে চিন্তার ভাঁজ বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। দলের মূল গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার পায়ের মাংসপেশির চোটে পড়ে মাঠের বাইরে চলে গেছেন কয়েক সপ্তাহের জন্য। দলের নতুন গোলরক্ষক আদ্রিয়ানের ওপর ভরসা করতে হচ্ছে ক্লপকে। স্বাভাবিকভাবেই এ দুই গোলরক্ষকের মধ্যে গুণ ও মানে বেশ তফাৎ। চেলসি এ সুবিধাটা কড়ায় গন্ডায় বুঝে নিতে পারলে তা বেশ চিন্তার কারণ হবে ক্লপের জন্য।

এমনিতেই তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সঙ্গে লিভারপুলের সম্পর্ক বেশ মধুর। ২০০৫ চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে এ মাঠেই ‘মিরাকল অব ইস্তাম্বুল’কাব্য লিখে এসি মিলানকে হারিয়েছিল লিভারপুল। এবার কী ঘটবে? লিভারপুলের আরেকটি সুখস্মৃতি না চেলসির প্রত্যাবর্তন? শেষ বাঁশি বাজার পরই এ প্রশ্নের জবাব মিলবে।