যে খেলায় আফগানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখছেন অনেকে

আফগান তরুণদের রাগবি অনুশীলন চলছে। ছবি: এএফপি
আফগান তরুণদের রাগবি অনুশীলন চলছে। ছবি: এএফপি
যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে রাগবি খেলাটা নতুনই বলা যায়। তবে খেলাটিতে আফগানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎও দেখছেন দেশটির রাগবি ফেডারেশনের পরামর্শদাতা স্টিফেন।


জনা ত্রিশেক তরুণ ছুটছেন ওভাল আকৃতির বলের পেছনে। ভ্যাপসা গরমে তাঁরা ঘেমে-নেয়ে একাকার। তবু যেন এতটুকু ক্লান্তি নেই! ‘নতুন’ এই খেলাটিতে মজে গেছেন ওই কিশোর-তরুণেরা।

গতকাল কাবুলের এক মাঠে আফগান তরুণদের রাগবি খেলার চিত্র এটি। যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে খেলাটি নতুনই বলা যায়। বহুজাতিক বাহিনীর সদস্যদের দেশটিতে অবস্থানের পর থেকে আফগান কিশোর-তরুণদের মধ্যে রাগবি চর্চার শুরু। এর আগে আফগানদের খেলা বলতে ছিল ফুটবল, ক্রিকেট, তায়কোয়ান্দো আর শরীর গঠন।

১৬ বছর বয়সী লুৎফুল্লাহ কাজেমি আগে ফুটবল খেলত। ফুটবল এখনো আফগানিস্তানে তুমুল জনপ্রিয়। কিন্তু উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় পড়ুয়া লুৎফুল্লাহর ধ্যান-জ্ঞান এখন রাগবিই, ‘রাগবিতে ট্যাকল আর পাস আমার খুব পছন্দ।’ আন্তর্জাতিক রাগবিতে আফগানিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্নও দেখে সে। শুধু লুৎফুল্লাহ নয়, তার মতো আরও অনেকের চোখে এখন রাগবি নিয়ে স্বপ্ন। আর সে স্বপ্ন ছড়িয়ে দিয়েছেন এক ব্রিটিশ—স্টিফেন বুকিং, যিনি বিশ্বাস করেন, রাগবি খেলার জন্য যে শারীরিক যোগ্যতা থাকা দরকার, সেটি আছে আফগানদের, ‘তাদের স্কিল আছে, আছে ফিটনেস ও শক্তিও।’ খেলাটিতে তাই আফগানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎও দেখেন দেশটির রাগবি ফেডারেশনের পরামর্শদাতা স্টিফেন।

আপাতত সেভেন-এ-সাইড রাগবি চর্চা চলছে। ফিফটিন-এ-সাইডে যাওয়ার আগে প্রয়োজনীয় দক্ষতা রাগবি সেভেনেই অর্জন করতে হয়। তবে স্টিফেনের বিশ্বাস, ‘আমি নিশ্চিত, আফগানিস্তান শক্তিশালী একটা ফিফটিন-এ-সাইড দল গড়তে পারবে।’ আফগানিস্তানে রাগবি খেলাটা এখনো বিস্তারের পথে থাকলেও এরই মধ্যে কাবুলে ১৮টি স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয় দল গড়া হয়েছে। রাজধানীর বাইরে রয়েছে আরও ছয়টি দল। কয়েক মাসের মধ্যেই সেখানে বয়সভিত্তিক এবং সিনিয়র দলের তিনটি প্রতিযোগিতা শুরু হবে। মেয়েদের দল গঠনেরও চেষ্টা চলছে।

তবে এখনো বিশ্ব রাগবি সংস্থা ওয়ার্ল্ড রাগবির সদস্য হতে পারেনি আফগানিস্তান। এশিয়ান রাগবি ফেডারেশনের সাহায্য-সহযোগিতায় চলছে আফগানিস্তান রাগবি ফেডারেশনের কার্যক্রম। কোচ ও রেফারিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সাহায্য করে যাচ্ছে এশিয়ান রাগবি ফেডারেশন। বিদেশে অবস্থানরত আফগানদের নিয়ে সেভেন-এ-সাইড দেশটির জাতীয় দলও গঠন করা হয়েছে, যারা অংশ নিয়েছিল গত বছর ইন্দোনেশিয়ায় এশিয়ান গেমসে। যেখানে খুব অল্পের জন্য সেভেন রাগবির কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা হয়নি আফগান দলের। সেই হতাশাই হয়তো আগামী দিনে নতুন শুরুর স্বপ্ন উসকে দিয়েছে আফগানদের চোখে!