কোটি টাকার জরিমানা গুনে এবার যদি হুঁশ হয়!

অস্ট্রেলীয় টেনিস তারকা নিক কিরগিওস। ছবি: এএফপি
অস্ট্রেলীয় টেনিস তারকা নিক কিরগিওস। ছবি: এএফপি
সিনসিনাটি মাস্টার্সে আম্পায়ার ফের্গাস মারফির কিছু সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি নিক কিরগিওস। মেজাজ হারানোর আক্কেলসেলামি হিসেবে কোটি টাকা জরিমানা হয়েছে অস্ট্রেলীয় এ টেনিস তারকার


টেনিস খেলোয়াড়দের আয় দেখে অন্য ক্রীড়াবিদেরা ঈর্ষা করতে পারেন। তবে শুধু দেদার আয় নয়, বল আর র‌্যাকেটের এ খেলায় জরিমানার অঙ্কটাও চোখ কপালে তুলে দেওয়ার মতো। নিক কিরগিওস যেমন এক ম্যাচেই আক্কেলসেলামি গুনছেন ১ লাখ ১৩ হাজার ডলার, প্রায় এক কোটি টাকা! এখানেই তাঁর শাস্তি নাও শেষ হতে পারে।

গত বুধবার সিনসিনাটি মাস্টার্সে রাশিয়ার কারেন খাচানভের কাছে হেরে যান অস্ট্রেলীয় এই টেনিস তারকা। মেজাজ হারানোর জন্য সুখ্যাত কিরগিওস টান টান লড়াইয়ের সে ম্যাচে আম্পায়ার ফের্গাস মারফির কিছু সিদ্ধান্ত মানতে পারেনি। এই ২৪ বছর বয়সী মেজাজ হারিয়ে আম্পায়ারের উদ্দেশে অকথ্য গালি দিয়েছেন, চেয়ারের দিকে তাকিয়ে থুতু ছিটিয়েছেন, রাগে কোর্ট ছেড়েছেন নিয়মের তোয়াক্কা না করে, সজোরে বল মেরেছেন রাগ দেখিয়ে, ভেঙেছেন দুটি র‍্যাকেট।

ছেলেদের টেনিসের অভিভাবক সংস্থা এটিপি এমন আচরণ মানতে পারেনি। আম্পায়ারের প্রতি অশ্রদ্ধার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে চেয়েছে তারা। তাই বড় অঙ্কের জরিমানা। সেটিও দেওয়া হয়েছে দ্রুত। কিরগিওসের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। আরও বড় শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। সেই শাস্তির মধ্যে থাকতে পারে ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা। নতুন আর্থিক জরিমানা হলে অঙ্কটা বাংলাদেশি মুদ্রায় কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

বিশাল আর্থিক জরিমানা হজম করায় কিরগিওসকে সামাজিক মাধ্যমে খোঁচাও হজম করতে হচ্ছে। কম টাকা তো তিনি কামান না, এ রকম আক্কেলসেলামি দিলে ক্ষতি কী! এই ট্রলটা কিরগিওসকে হজম করতেই হতো। কিছুদিন আগে ইচ্ছাকৃতভাবে রাফায়েল নাদালের বুক বরাবর বল মেরে সমালোচনার জবাবে কিরগিওস যে বলেছিলেন, ‘উনি কতগুলো গ্র্যান্ড স্লাম জিতেছেন, কত ডলার প্রাইজমানি কামিয়েছেন। একটা দুটো বলের আঘাত না হয় বুক পেতে নিলেনই!’

নাদাল তখনই কিরগিওসের বিরুদ্ধে ‘প্রতিপক্ষের প্রতি শ্রদ্ধার ঘাটতি’র অভিযোগ এনেছিলেন। নোভাক জোকোভিচের সঙ্গেও লেগে গিয়েছিল তাঁর। দর্শকদের ভালোবাসা পেতে জোকোভিচ নাটুকেপনা করেন বলে মন্তব্য করেছিলে কিরগিওস।

আম্পায়ার মারফির সঙ্গেও তাঁর ঝামেলা নতুন নয়। গত জুনে কুইনস ক্লাবে এক লাইন আম্পায়ার ম্যাচ পাতাচ্ছে বলে মন্তব্য করায় মারফি তখন শৃঙ্খলাভঙ্গের পয়েন্ট কাটেন। গত ইতালিয়ান ওপেনে কোর্টে চেয়ার ছুড়ে মেরেছিলেন কিরগিওস।

কোর্টের বাইরেও তাঁর ‘এন্টিকস’ কম নয়। স্তানিসলাস ভাভরিঙ্কার প্রেমিকাকে নিয়ে স্পর্শকাতর মন্তব্য করে আলোচিত হয়েছিলেন ২০১৫ সালে। পরের বছর সাংহাই মাস্টার্সে ‘যথেষ্ট চেষ্টা’ না করার অভিযোগে ৮ সপ্তাহ নিষিদ্ধ হন টেনিসের এই ব্যাড বয়।

এটিপি মনে হচ্ছে কিরগিওসকে নিয়ে ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছে। তাঁকে শোধরানো যাবে না ধরে নিয়েই হয়তো এমন কড়া শাস্তি। এবার যদি তাঁর হুঁশ ফেরে!