হাথুরু নেই তো কী হয়েছে!

সেঞ্চুরি করে দলের জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন করুণারত্নে। ছবি: এএফপি
সেঞ্চুরি করে দলের জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন করুণারত্নে। ছবি: এএফপি
গল টেস্ট নিউজিল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা। পঞ্চম দিনে লাঞ্চের আগেই ২৬৮ রানের লক্ষ্য ছুঁয়েছে স্বাগতিকেরা


চণ্ডিকা হাথুরুসিংহের অধীনে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জিতেছিল শ্রীলঙ্কা। সেই হাথুরুসিংহেকে তাঁর ‘কর্মগুণে’র জন্যই সম্পর্কটা শুধু কাগজে-কলমে রেখেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড (এসএলসি)। এ সিদ্ধান্তের পর লঙ্কান সংবাদমাধ্যম একটা শঙ্কাও তুলে ধরেছিল, ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে কৌশল ঠিক করে দেবে কে? অন্তর্বর্তীকালীন কোচ আছে ঠিকই কিন্তু তিনি তো আর হাথুরুর মতো ‘থিংক ট্যাংক’ নন। জবাবটা দিয়ে দিলেন খেলোয়াড়েরাই। হাথুরু নেই তো কী হয়েছে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জিততে কোনো অসুবিধাই হয়নি দিমুথ করুণারত্নের দলের।

জয়ের জন্য চতুর্থ ইনিংসে ২৬৮ রানের লক্ষ্য পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। গলে স্পিনবান্ধব উইকেট টেস্টের চতুর্থ ও পঞ্চম দিনে আরও ভয়ংকর হয়। কাল চতুর্থ দিনে বিনা উইকেটে ১৩৩ রান তুলে লঙ্কানরা বুঝিয়ে দিয়েছিল, বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা দল প্রতিপক্ষ হলেও সেটি কোনো সমস্যা নয়। বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ইংল্যান্ড যেমন প্রথম টেস্টে মাঠে নেমেই হেরেছে তেমনি ফাইনাল খেলা আরেক দলকেও তাঁদের প্রথম টেস্টে হারানো সম্ভব। আজ তা প্রমাণ করতে মাত্র ৩৬.১ ওভার লেগেছে শ্রীলঙ্কা। সময়ের হিসেবে লাঞ্চের কিছু পরই ৬ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। স্বাগতিকদের জয় প্রায় নিশ্চিত থাকায় নির্দিষ্ট সময়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায়নি দুই দল। প্রথম সেশনের খেলার সময় আরবও ৩০ মিনিট বাড়ানো হয়।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৬ বছর পর শ্রীলঙ্কার এই প্রথম টেস্ট জয়ে চতুর্থ ইনিংসের নায়ক দুই ওপেনার। আরও নির্দিষ্ট করে বললে অধিনায়ক করুণারত্নে। ২৪৩ বলে ১২২ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন করুণারত্নে। ৬৪ রান করেছেন আরেক ওপেনার লাহিরু থিরিমান্নে। ওপেনিং জুটিতে ১৬১ রান তোলেন দুজন। আর এখানেও উঠে আসছে হাথুরুসিংহের প্রসঙ্গ। শ্রীলঙ্কার মাটিতে এর আগে চতুর্থ ইনিংসে স্বাগতিকদের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ওপেনিং জুটিতে জড়িয়ে আছে হাথুরুসিংহের নাম। ১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১১০ রান তুলেছিলেন রোশন মহানামা ও হাথুরুসিংহে। শ্রীলঙ্কা সেই টেস্ট জিততে না পারলেও করুণারত্নে-থিরিমান্নেরা কিন্তু দেখিয়ে দিলেন।

এশিয়ার মাটিতে চতুর্থ ইনিংসে এটি এগারোতম সফল রান তাড়ার নজির। অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ও দনঞ্জয়া সিলভা দুই প্রান্ত ধরে রেখে জয় নিশ্চিত করেছেন শ্রীলঙ্কার। হাথুরু কোচ থাকতে বেশ ভালোই ঠোকাঠুকি হয়েছে ম্যাথুসের সঙ্গে। আর দিনেশ চান্ডিমাল ও নিরোশান ডিকভেলাকে তো দল থেকে ছেঁটেই ফেলেছিলেন হাথুরু। এ দুজনকে দলে ফিরিয়েই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জিতল শ্রীলঙ্কা। প্রথম ইনিংসে ৫০ আর দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৩ বলে ২৮ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে ম্যাথুসও বুঝিয়ে দিলেন, যতই ক্রান্তিকালীন সময় যাক এই শ্রীলঙ্কা হাথুরু ছাড়াও পারে।