এত সাংবাদিক আগে দেখেননি নতুন কোচ

বাংলাদেশে এসে ক্রিকেট উন্মাদনাটা টের পাচ্ছেন রাসেল ডমিঙ্গো। ছবি: বিসিবি
বাংলাদেশে এসে ক্রিকেট উন্মাদনাটা টের পাচ্ছেন রাসেল ডমিঙ্গো। ছবি: বিসিবি
>

বাংলাদেশ দলের নতুন কোচ রাসেল ডমিঙ্গো আজ দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। খেলোয়াড়দের সঙ্গে পরিচিতিপর্ব শেষে তিনি এলেন সংবাদ সম্মেলনে। মিরপুরের জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলন দেখে অবাকই হলেন তিনি

রাসেল ডমিঙ্গো আজ ঘুম থেকে উঠেছেন সকাল ছয়টায়। গুলশানের একটি হোটেল থেকে ২০ মিনিটে চলে এসেছেন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। ঢাকা শহরের যানজট সম্পর্কে আগেই ধারণা ছিল বলে তিনি ভেবেছিলেন অন্তত দেড় ঘণ্টা তো লাগবেই। কিন্তু অল্প সময়ে এসে বেশ অবাক হয়েছেন।

বাংলাদেশ দলের নতুন কোচ অবাক হয়েছেন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে এসেও। বলেই ফেললেন, ‘আমি জীবনে এত রিপোর্টার একসঙ্গে দেখিনি। এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকার বড় কোনো ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে বড়জোর আট–নয়জন রিপোর্টার থাকে। কাল বিমানবন্দরে মনে হয় ১০০ ক্যামেরা ছিল। এতেই বাংলাদেশ ক্রিকেট সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়ে গেছি। এই যে বাংলাদেশের মানুষের ক্রিকেট নিয়ে এত আবেগ, এটাই হয়তো আমাকে এখানে আসতে অনুপ্রাণিত করেছে।’

বাংলাদেশের কোচ হয়ে এবারই প্রথম, তবে বাংলাদেশে তিনি আগে অনেকবার এসেছেন। প্রথমবার এসেছিলেন ২০০৪ সালে, দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে। অন্যবারের সঙ্গে এবারের আসার মধ্যে অবশ্যই বড় পার্থক্য আছে। প্রতিবার এসেছেন প্রোটিয়াদের হয়ে। এবার তাঁকে নিতে হচ্ছে নতুন চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশকে আরেক ধাপে নিয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জটা তিনি উতরে যাবেন কীভাবে, সেটির বিশদ বর্ণনা তিনি দিয়েছেন বিসিবির পরিচালকদের দেওয়া সাক্ষাৎকারের সময়ই। তাঁর প্রেজেন্টেশন মনে ধরেছে বলেই বিসিবি বেছে নিয়েছে তাঁকে। প্রেজেন্টেশনে কী ছিল যে বিসিবির শীর্ষ কর্তাদের খুব মুগ্ধ করেছে? ডমিঙ্গো বললেন, ‘দেখুন আমি অনূর্ধ্ব–১৫, ১৭, ঘরোয়া ক্রিকেট, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করেছি। জানি সিস্টেমটা কী।’

নিজের সঞ্চিত অভিজ্ঞতা, প্রজ্ঞা আর নিখুঁত পরিকল্পনায় ডমিঙ্গো সাফল্য এনে দিতে চান বাংলাদেশকে। তবে বাস্তবতাও মনে করিয়ে দিলেন। কল্পনার ফানুস উড়িয়ে মিথ্যে স্বপ্ন তিনি দেখাতে চান না, ‘এখানে পৃথিবী বদলে দিতে আসিনি। উপমহাদেশে সব সময়ই ক্রিকেট খেলা হয়। আমরা আশা করি না বাংলাদেশ ক্রিকেট আমাদের সঙ্গে মানিয়ে নেবে। বরং আমাদের মানিয়ে নিতে হবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে। প্রক্রিয়া তৈরির উপায় আমাদের বের করতে হবে। এখানকার সংস্কৃতির সঙ্গে আমাদের মানিয়ে নিতে হবে।’

কদিন পর দেশের মাঠে আফগানিস্তান ও টি-টোয়েন্টি ত্রিদেশীয় সিরিজ। আন্তর্জাতিক সিরিজের পর যে বিরতি পাওয়া যাবে, তখন বসে থাকবেন না ডমিঙ্গো। তিনি বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে যেতে চান। পাইপলাইন থেকে কিছু খেলোয়াড় তুলে আনার কাজ শুরু করবেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে নতুন কিছু দুর্দান্ত ক্রিকেটার চায় বাংলাদেশ। সেটি বাস্তবায়ন করাও ডমিঙ্গোর চ্যালেঞ্জ।

শুরুতেই ক্রিকেটের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের প্যাশন সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন ডমিঙ্গো। এই আবেগের আরেক নাম যে চাপ, সেটি নিশ্চয়ই অজানা নয় তাঁর। বাংলাদেশের দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ এই চাপ কীভাবে সামলাবেন, সেটি জানালেন মিরপুরের সংবাদ সম্মেলনে, ‘পাঁচ বছর ধরের প্রধান কোচ হিসেবে কাজ করছি। মানুষ আমাদের কাছে প্রত্যাশা করে আমরা যেন প্রতিপক্ষকে নিয়মিত হারাই। এই প্রত্যাশা ও চাপ সম্পর্কে অবগত। আমি সামনের দিকে তাকাচ্ছি। এই মানুষগুলোর সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমি রোমাঞ্চিত। একজন কোচ হিসেবে চাপ উপভোগ করি।’