চীনের জাতীয় দলে ব্রাজিলের ফুটবলার

ব্রাজিলের এলকেসন খেলবেন চীনের হয়ে। ফাইল ছবি
ব্রাজিলের এলকেসন খেলবেন চীনের হয়ে। ফাইল ছবি

মেড ইন...না, চায়না নয়; ব্রাজিল! চীনের জাতীয় ফুটবল দলে এবার খেলবেন এমন একজন, যিনি আদতে ব্রাজিলিয়ান। চীনা বংশোদ্ভূত নন; একেবারে খাঁটি ব্রাজিলের। ব্রাজিল জাতীয় দলের স্কোয়াডে জায়গাও করে নিয়েছিলেন। সেই এলকেসন চীনের ফুটবল ইতিহাসে চীনা নন এমন প্রথম ফুটবলার হিসেবে খেলবেন। ১০ সেপ্টেম্বর মালদ্বীপের বিপক্ষে ২০২২ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে তাঁকে দেখা যাওয়ার জোর সম্ভাবনা।

২০১৩ সালে ব্রাজিল ছেড়ে চীনের ক্লাব ফুটবল খেলতে আসেন এলকেসন। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার কিংবা দ্বিতীয় স্ট্রাইকার দুই ভূমিকাতেই খেলতে পারেন। চীনা ক্লাবে কাজ করার সময়ই ৩০ বছর বয়সী এই ফুটবলার নজরে পড়েছিল বিশ্বকাপজয়ী কোচ মার্সেলো লিপ্পির। ইতালিয়ান এক কোচ এখন চীনের জাতীয় দলের দায়িত্বে। তিনিই পরবর্তী ম্যাচের জন্য ডেকেছেন একেলসনকে। এর আগে অবশ্য নাগরিকত্ব নিতে হয়েছে। এমনকি নিজের নামটায় চীনা ভাবও এনেছেন এলকেসন। তাঁর নাম এখন আই কেসেন।

আই কেসেন নতুন নামে নতুন অধ্যায় কীভাবে শুরু করেন সেটাই দেখার। ২০১১ সালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচে ব্রাজিল স্কোয়াডে থাকলেও মাঠে আর নামা হয়নি। তখন খেলে ফেললেও অবশ্য সমস্যা হতো না। ফিফার নিয়ম অনুযায়ী এক জাতীয় দলের হয়ে খেলে অন্য দলে নাম লেখাতে মাঝখানে যে বিরতি লাগে, সেটা এরই মধ্যে পেরিয়ে এসেছেন তিনি।

এর আগে লন্ডনে জন্ম নেওয়া নিকো ইয়েনারিসকেও চীন নাগরিকত্ব দিয়েছে। নিকো অবশ্য আধা-চায়নিজ। জাতীয় দলের দুয়ার এখনো খেলোনি তাঁর জন্য। কাতার, বাহরাইন বা আরব আমিরাতের মতো দলগুলোতে ভিনদেশে জন্ম দেওয়া খেলোয়াড়দের আধিক্য দেখা যায়। কিন্তু চীনারা নিজেদের জাতীয়তাবোধ নিয়ে ভীষণ নাকউঁচু। ফুটবলে সাফল্য পেতে মরিয়া হলেও কখনো ওই পথে আগে হাঁটেনি। এলকেসনকে দিয়ে দুয়ারটা খুলল। কে জানে, সামনে হয়তো আরও ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার খেলোয়াড় ঢুকে পড়বে তাদের জাতীয় দলে। দক্ষিণ আমেরিকার অনেক ফুটবলারই যে এখন চীনা লিগে খেলে। অবিশ্বাস্য অঙ্কের বেতনও মেলে সেখানে।

চীনা সুপার লিগে এক শর বেশি গোল আছে এলকেসনের। তবে চীনেরই অনেকের পছন্দ হয়নি লিপ্পির এই সিদ্ধান্ত। চীনা নন এমন কোনো খেলোয়াড়কে তারা দেখতে রাজি নয়। এলকেসন অবশ্য বলছেন, ‘আমি বিশ্বকে বলতে চাই, আনুষ্ঠানিকভাবেই আমি নতুন একটা যাত্রা শুরু করেছি। আমি একজন চায়নিজ, এতগুলো বছর ধরে এখানকার মানুষ আমাকে যে ভালোবাসা দিয়েছে, তার কিছুটা এবার ফিরিয়ে দিতে চাই।’

ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ের ৭১ নম্বরে থাকা চীন কেবল একবারই বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলেছে। ২০০২ সালের সেই আসরে অবশ্য তারা কোনো গোল করতে পারেনি, পায়নি কোনো পয়েন্টও।