গ্রিজমান তবে লাভজনক বিনিয়োগই

গ্রিজমানের জোড়া গোলে বার্সেলোনা পেয়েছে দুর্দান্ত জয়। ছবি: এএফপি
গ্রিজমানের জোড়া গোলে বার্সেলোনা পেয়েছে দুর্দান্ত জয়। ছবি: এএফপি
লা লিগায় রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে ৫-২ গোলের ব্যবধানে জিতেছে বার্সেলোনা। বার্সেলোনার হয়ে জোড়া গোল করেছেন আঁতোয়ান গ্রিজমান। একটি করে গোল করেছেন পেরেজ, জর্ডি আলবা ও ভিদাল। আর রিয়াল বেতিসের হয়ে একটি করে গোল করেছেন নাবিল ফেকির ও লরিয়েন মরোন।


আঁতোয়ান গ্রিজমানের বার্সেলোনায় আসা নিয়ে নাটকের পর্বগুলো অনেকেরই দেখা হয়তো। নাটকের সমাপ্তি হয়েছে অ্যাটলেটিকো ছেড়ে গ্রিজমানের বার্সেলোনায় যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে। ১২০ মিলিয়ন ইউরো তো আর কম কথা নয়! গ্রিজমান তাঁর পেছনে করা বার্সেলোনার ১২০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিয়োগের প্রতিদান দিতে শুরু করেছেন।

গ্রিজমানদের পায়েই বল ঘোরাফেরা করছিল। তবু ১৫ মিনিটের মাথায় গোল হজম করে সমর্থকদের আত্মারাম খাঁচাছাড়াই করে দিয়েছিলেন বার্সার খেলোয়াড়েরা! লা লিগার মৌসুম যে তাঁদের শুরুটা হয়েছে পরাজয়ের তেতো স্বাদ নিয়ে। তবে কি এই ম্যাচেও মন খারাপ করে বাড়ি ফিরতে হবে? এমন শঙ্কায় যখন বার্সেলোনা সমর্থকেরা, তখনই গ্রিজমান নামক এক ফরাসি নায়কের আগমন। গ্রিজমানের নৈপুণ্যে শেষ পর্যন্ত মেসিহীন বার্সেলোনা শুধু ঘুরেই দাঁড়ায়নি, রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে রিয়াল বেতিসকে। ন্যু ক্যাম্পে গ্রিজমানের জোড়া গোলের সুবাদে বার্সেলোনা ৫-২ গোলের ব্যবধানে জিতেছে।

মেসিভক্তরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন—রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে লা লিগার মৌসুম শুরু করবেন বার্সার আর্জেন্টাইন এই তারকা। কিন্তু নিজের সেরা ছাত্রটিকে নিয়ে কে ঝুঁকি নিতে চাইবে বলুন! মেসির চোট নিয়ে এক সুতা পরিমাণও ঝুঁকি নেননি ভালভার্দে। আস্থা রেখেছেন গ্রিজমানদের ওপর। এদিকে গ্রিজমানও হাতে-কলমে প্রমাণ করে দিয়েছেন, তাঁকে কেন বাগিয়ে এনেছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা।

শুধু মেসিই নন, দলে ছিলেন না সুয়ারেজ, উসমান ডেম্বেলের মতো তারকারাও। আক্রমণে দলের সেরাদের ছাড়া নেমে শুরুতেই হোঁচট খান ভালভার্দের শিষ্যরা। তবে বল দখলে এগিয়ে থেকে বেতিসকে চেপে ধরেই খেলছিল বার্সেলোনা। কিন্তু পাল্টা আক্রমণে উঠে আসা বেতিস ১৫ মিনিটের মাথাতেই এগিয়ে যায় নাবিল ফেকিরের গোলে। আড়াআড়ি শটে টের স্ট্যাগানকে পরাস্ত করেন ফেকির।

পিছিয়ে পড়েও হাল ছাড়েনি বার্সেলোনা। তবু কোনোভাবেই গোলের দেখা পাচ্ছিল না লা লিগা চ্যাম্পিয়নরা। অবশেষে ৪১ মিনিটে গ্রিজমানের গোলে সমতায় ফিরে প্রথমার্ধ শেষ করে বার্সেলোনা।


দ্বিতীয়ার্ধে শিষ্যদের কানে কী মন্ত্র পড়ে দিয়েছিলেন ভালভার্দে, সেটা জানা যায়নি। তবে দ্বিতীয়ার্ধের ১০ মিনিটের মধ্যেই তিন গোল করে স্কোরলাইন ৪-১ করে ফেলে বার্সেলোনা। প্রথমার্ধে গোলের খাতা খোলা গ্রিজমানই দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটা করেন। ৫০ মিনিটে সার্গি রবার্তোর বাড়ানো বল ২০ গজ দূর থেকেই শট নেন বার্সার ফরাসি এই তারকা। ৫৬ মিনিটে দুর্দান্ত প্লেসিং শটে বল জালে জড়ান কার্লেস পেরেজ। এরপর ৬০ মিনিটে জর্ডি আলবার গোলে জয় অনেকটা নিশ্চিত করে ফেলে স্প্যানিশ জায়ান্টরা।

৪-১ স্কোরলাইন থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় পাওয়া রিয়াল বেতিসের জন্য যখন অসম্ভব মনে হচ্ছিল তখন ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়ায় ভিদালের গোল। ৭৭ মিনিটে বুসকেটেসের বদলি হিসেবে নামা ভিদাল বেতিসের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন। ৭৯ মিনিটে লরিয়েন মরোনের গোলে ব্যবধান কমায় অতিথিরা। ততক্ষণে অবশ্য ন্যু ক্যাম্পের গ্যালারিতে উল্লাস শুরু হয়ে গেছে।