'যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন' আবাহনীর ইতিহাস গড়ার লড়াই

আবাহনীর এ হাসি আজ ধরে রাখতে হবে পিয়ংইয়ংয়ে। ফাইল ছবি, প্রথম আলো
আবাহনীর এ হাসি আজ ধরে রাখতে হবে পিয়ংইয়ংয়ে। ফাইল ছবি, প্রথম আলো
>উত্তর কোরিয়ার পিয়ংইয়ংয়ে আজ বাংলাদেশ সময় বিকেল তিনটায় এএফসি কাপের ইন্টার জোনাল সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভের মুখোমুখি আবাহনী লিমিটেড। ঢাকায় প্রথম লেগ ৪-৩ গোলে জেতায় আজকের ম্যাচটি ড্র করলে প্রথম বাংলাদেশি ক্লাব হিসেবে ইন্টার জোনাল ফাইনালে নাম লেখাবে আবাহনী। তবে যেকোনো ব্যবধানে হারলেই বিদায়ঘণ্টা বাজবে আকাশি নীল বাহিনীর।

এএফসি কাপের ইন্টার জোনাল সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে আজ উত্তর কোরিয়ার এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভ এসসির মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশের আবাহনী লিমিটেড। ঘরের মাঠে প্রথম লেগ ৪-৩ গোলে জেতার পর আজ পিয়ংইয়ংয়ে ইতিহাস গড়ার অপেক্ষায় দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এ ক্লাব। আজ বাংলাদেশ সময় বিকেল তিনটায় শুরু হতে যাওয়া ম্যাচটা নিদেনপক্ষে অমীমাংসিত রাখতে পারলেই প্রথম বাংলাদেশি ক্লাব হিসেবে ইন্টার জোনাল ফাইনালে নাম লেখাবে আবাহনী। কিন্তু এ ম্যাচটি যেকোনো বিচারেই আবাহনীর জন্য তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা হয়ে উঠেছে।

রোববার চীন হয়ে ‘নিষিদ্ধ দেশ’ উত্তর কোরিয়ায় পা রেখেছে আবাহনী। বাইরের পৃথিবীর কাছে রহস্যাবৃত সমাজতান্ত্রিক উত্তর কোরিয়ায় আবাহনীর খেলোয়াড়েরা কেমন আছেন, সেটি জানার কোনো উপায়ই নেই। থাকবে কীভাবে? ইন্টারনেট যে এক প্রকার নিষিদ্ধ বস্তু উত্তর কোরিয়ায়। সেখানে সাধারণ মানুষের ইন্টারনেট ব্যবহারের অধিকার নেই—এমনটাই শোনা যায়। আবাহনী ক্লাবের কর্মকর্তারাও ঢাকা থেকে রোববারের পর থেকে এত বড় একটা ম্যাচ খেলার অপেক্ষায় থাকা দলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। মোট কথা এক প্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থাতেই আজ ইতিহাস গড়ার লড়াইয়ে নামবে আকাশি নীল জার্সির দলটি।

ঢাকায় গত ২১ আগস্ট প্রথম লেগের ম্যাচে আবাহনী ছিল দুর্দান্ত। কিন্তু গোলরক্ষক ও রক্ষণের ভুলে দুটি গোল হজম করায় জয় তুলে নিয়েও পূর্ণ তৃপ্তিটা পাওয়া হয়নি তাদের। বিশেষ করে গোলরক্ষক ও দলের অধিনায়ক শহীদুল আলম সোহেলের শিশুতোষ ভুলে তৃতীয় গোলটি হজম করাটা হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। পিয়ংইয়ংয়ে কিম ইল সুং স্টেডিয়ামের কৃত্রিম মাঠে নিজেদের চেনা পরিবেশে উত্তর কোরিয়ার লিগ ১৮ বার জয় করা এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভ যে মরণ কামড় দেবে—এটা বলে দেওয়াই যায়।

এ ম্যাচে তাই আবাহনীর খেলোয়াড়দের মানসিক দৃঢ়তা খুব জরুরি। কৌশলী ফুটবল খেলা, আর নিজেদের বাজে ভুলগুলোর পুনরাবৃত্তি না করাই আবাহনীকে এনে দিতে পারে সাফল্য। আজকের ম্যাচের আগ দলের অবস্থা কেমন, কোনো বাড়তি চোট সমস্যা আছে কিনা, খেলোয়াড়েরা উত্তর কোরিয়ায় গিয়ে পরিপূর্ণ সুস্থতা নিয়ে আছেন কিনা কিংবা দলের পর্তুগিজ কোচ মারিও লেমেসে নতুন কোনো কৌশল ভাবছেন কিনা, জানা যায়নি এসবের কিছুই। তবে আগেই একটা আভাস পাওয়া গিয়েছিল পিয়ংইয়ংয়ের আজকের ম্যাচটিতে আবাহনী পরিবর্তন নিয়ে নামবে। আজ একাদশে থাকতে পারেন অভিজ্ঞ মামুনুল ইসলাম। সেই সঙ্গে মিসরীয় ডিফেন্ডার আলাদিন নাসের এলসাঈদ ঈসা হতে পারেন দলের বড় ভরসা। সাসপেনশনের কারণে তিনি প্রথম লেগে ছিলেন না। ঢাকার ম্যাচে রক্ষণের যে দুর্বলতাগুলো ফুটে উঠেছিল, সেটি ঈসা ঢেকে দিতে পারেন কিনা, তার ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছুই। আবাহনী আজ পারলে কিন্তু উৎসবে মেতে উঠবে বাংলাদেশের ফুটবল।