বাংলাদেশের জন্য জিততে চান আবাহনীর পর্তুগিজ কোচ

ফাইনালে ওঠার ব্যপারে প্রত্যয়ী লেমোস। ছবি : এএফসি ওয়েবসাইট
ফাইনালে ওঠার ব্যপারে প্রত্যয়ী লেমোস। ছবি : এএফসি ওয়েবসাইট
>

এএফসি কাপের আন্ত-আঞ্চলিক সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে আজ এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভের বিপক্ষে মাঠে নামবে আবাহনী লিমিটেড। উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বেলা তিনটায়। ম্যাচটা জিতে ফাইনালে যাওয়ার ব্যাপারে বেশ আত্মবিশ্বাসী আবাহনীর স্প্যানিশ কোচ মারিও লেমোস।

প্রথম লেগে ৪-৩ গোলের ব্যবধানে জিতেছে আবাহনী। দ্বিতীয় লেগে ন্যূনতম ড্র করলেই এএফসি কাপের ইন্টার জোনাল ফাইনালে উঠে যাবে আবাহনী। কিন্তু নিজেদের মাঠে এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভ গোল করে ম্যাচ জিতে গেলেই সমস্যা। বাদ পড়ে যাবে আবাহনী। আবাহনীর পর্তুগিজ কোচ মারিও লেমোস কী ভাবছেন? আবাহনীর ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা কেমন দেখছেন এই স্প্যানিশ কোচ?

লেমোস জানেন, ম্যাচটা কত কঠিন। বিশেষ করে নিজেদের মাঠে এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভ আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে মাঠে নামবে, ‘ ম্যাচটা অনেক কঠিন ম্যাচ হবে। এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভ অনেক কঠিন একটা দল। তাদের সামর্থ্য তাঁরা ঢাকাতেই দেখিয়েছে। তাঁরা ঘরের মাঠে অপরাজিত। আমরা জানি, আমরা অনেক কঠিন এক ম্যাচ খেলতে যাচ্ছি।’
তবে প্রথম লেগে পাওয়া জয়ের কারণে আবাহনীর খেলোয়াড়েরাও বেশ উদ্বুদ্ধ। দ্বিতীয় লেগ থেকে ইতিবাচক ফলাফল অর্জন করাই লক্ষ্য তাদের বলে জানিয়েছেন লেমোস, 'তবে আমার মনে হয় আমাদের দুই দলের মধ্যকার গত ম্যাচটা আমাদের একটু আশা দিয়েছে, সাহস জুগিয়েছে। আমরা যদি ঢাকায় চার গোল করতে পারি, তবে অবশ্যই পিয়ংইয়ংয়েও আমরা গোল করতে পারব। আমার খেলোয়াড়েরা গত ম্যাচের পর থেকে অনেক আত্মবিশ্বাসী। আমি জানি ম্যাচটা কঠিন, কিন্তু আমরা ফাইনালে যেতে চাই। আর ফাইনালে যেতে হলে আমাদের অবশ্যই পিয়ংইয়ং থেকে একটা ইতিবাচক ফলাফল বের করে আনতে হবে।'

এই ম্যাচে আবাহনীকে কীভাবে খেলাবেন লেমোস? কেমন হবে রণপরিকল্পনা? লেমোস প্রথম লেগের পরিকল্পনার চেয়ে তেমন বেশি পরিবর্তন আনতে রাজি নন, 'ঢাকায় আমরা যেভাবে খেলেছি, এখানেও আমরা সেভাবেই খেলার পরিকল্পনা করছি। আমাদের যে সামান্য সুবিধাটুকু আছে, সেটা কাজে লাগাতে হবে। আমাদের অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে, ঝুঁকি নেওয়া যাবে না। ঝুঁকি নিলেই তাদের সুবিধা হয়ে যাবে। আমরা চাইব এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভই যেন ঝুঁকিগুলো নেয়, কেননা আগের ম্যাচটায় হেরেছে তাঁরা। তবে এটাও সত্যি, আমি চাইব না আমার দল সবকিছু বাদ দিয়ে শুধু রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলুক। যদিও গত ম্যাচে আমরা পাঁচজন ডিফেন্ডার নিয়ে খেলেছি। আমাদের লক্ষ্য থাকবে প্রতি-আক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলার। শুধু রক্ষণ করে গেলে এই ম্যাচ থেকে প্রত্যাশিত ফলাফল পাওয়া সম্ভব নয়। আশা করব, এপ্রিল টোয়েন্টি-ফাইভ যেন ঝুঁকি নেয়, তাহলে সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমরা প্রতি-আক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলতে পারব, গোল করতে পারব। পিয়ংইয়ংয়ে আমাদের মূল লক্ষ্য গোল করা। গোল করতে পারলে দুই লেগ মিলিয়ে আমরাই সুবিধাজনক অবস্থানে থাকতে পারব।'

দলে নতুন আশা মিসরীয় ডিফেন্ডার ঈসাকে নিয়ে আশাবাদী লেমোস। এই তারকার কারণে দলের রক্ষণভাগ আরেকটু নিশ্ছিদ্র হবে বলে মনে করছেন তিনি, ‘তপু (তপু বর্মণ), ফাহাদ (আতিকুর রহমান ফাহাদ) এই ম্যাচ খেলতে পারবে না। পুরো মৌসুমের জন্য ওরা মাঠের বাইরে চলে গিয়েছে। আমরা চেষ্টা করব যাতে মিডফিল্ডে মামুনুল ইসলামকে খেলানো যায়। আশা করব সে যেন দ্রুত ম্যাচ ফিটনেস ফিরে পায়। মিশরীয় ডিফেন্ডার ঈসা নাসেরও আমাদের সঙ্গে খেলবে, নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরেছে সে, এটা আমাদের জন্য অনেক ভালো একটা খবর। ও আমাদের রক্ষণভাগকে নিশ্ছিদ্র করে তুলতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। ও বেশ লম্বা খেলোয়াড়, তাই আশা করছি সেট পিসেও আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। সব মিলিয়ে আবাহনীর জার্সি গায়ে ঈসা প্রথম ম্যাচে কেমন খেলে, সেটা দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।'

প্রথম লেগে মাঠে আসা দর্শকদের সমর্থন জয়ের পেছনে বড় অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে, স্বীকার করেছেন লেমোস, ‘বাংলাদেশের সকল দর্শক ও আবাহনীর সকল সমর্থককে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। সেদিন মাঠের পরিবেশ দুর্দান্ত ছিল। আপনাদের সমর্থন আমাদের উৎসাহ জুগিয়েছে আরও ভালো খেলার জন্য। এমনকি আমরা যখন গোল খেলাম তখন দর্শকেরা আমাদের সমর্থন দিয়ে গেছেন। আমি সব মিলিয়ে আমাদের দর্শক-সমর্থকদের নিয়ে অনেক গর্বিত। আমরা শুধুই আবাহনীকে খেলোয়াড়-কর্মকর্তা হয়ে এখানে আসিনি। আমরা বাংলাদেশকেও প্রতিনিধিত্ব করছি এখানে। ফাইনালে ওঠার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব। আমরা চেষ্টা করব এটা যেন এই মৌসুমের শেষ ম্যাচ না হয়। সেপ্টেম্বরের ২৫ তারিখ ফাইনাল ম্যাচটা আমরা যেন ঢাকায় খেলতে পারি সেটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।’