বুমরাকে পারলে সতীর্থ বানাতেন রবার্টস-অ্যামব্রোসরা

বুমরার বোলিং মুগ্ধ করেছে অ্যামব্রোস-রবার্টসকে। ছবি : টুইটার
বুমরার বোলিং মুগ্ধ করেছে অ্যামব্রোস-রবার্টসকে। ছবি : টুইটার
>অ্যান্টিগা টেস্টে বলতে গেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে একাই ধসিয়ে দিয়েছেন ভারতের পেসার জসপ্রীত বুমরা। বুমরার বোলিংয়ে মুগ্ধ দুই কিংবদন্তি ক্যারিবীয় পেসার কার্টলি অ্যামব্রোস ও অ্যান্ডি রবার্টস।

৮-৪-৭-৫। এটা অ্যান্টিগা টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে বুমরার বোলিং পরিসংখ্যান। ক্যারিবিয়ানে গিয়ে বল হাতে আগুন ঝরাচ্ছেন বুমরা। আর সে আগুনে জ্বলেপুড়ে খাক হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নিজের দলের খারাপ অবস্থা দেখে মন খারাপ হবে কী, উল্টো বুমরার বোলিং দেখে মন খুলে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দুই ক্যারিবীয় কিংবদন্তি কার্টলি অ্যামব্রোস ও অ্যান্ডি রবার্টস।

বুমরার বোলিং দেখে নিজেদের সোনালি সময়ের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে অ্যামব্রোসের, ‘মাঝে মাঝে বুমরা আমাদের সেই সোনালি সময়ের কথা মনে করিয়ে দেয়। গতি, ক্ষিপ্রতা, বৈচিত্র্য— সবকিছু মিলিয়ে। যেভাবে সে ব্যাটসম্যানদের বোকা বানায়, যেভাবে বুদ্ধির খেলায় ও ব্যাটসম্যানদের হারিয়ে দেয়, সবকিছু মিলিয়েই আমার মনে হয় আমাদের সময়ে জন্মালে ও আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন অংশ হতেও পারত। ও বোলার হিসেবে এতটাই উঁচুমানের, যেকোনো যুগে খেলার যোগ্যতা রাখে সে।’

বুমরার বোলিং দেখে নব্বই দশকে নিজের নতুন বলের সঙ্গী, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশের কথা মনে পড়ে গিয়েছে অ্যামব্রোসের, ‘পিচ আর ব্যাটসম্যানের কথা মাথায় রেখে বুমরা নিয়মিত বলের লেংথ পরিবর্তন করে। আমি এটা গত বিশ্বকাপে দেখেছি। ব্যাটসম্যানদের অনেক সমস্যা হয় এটা করলে। এ দিক দিয়ে ওর বোলিং দেখলে আমার কোর্টনি ওয়ালশের কথা মনে পড়ে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে ও বলের লেংথ বাড়ায়-কমায়।’

বুমরার মতো বোলার রবার্টসদের যুগে জন্মালে, অনায়াসে উইন্ডিজ দলে সুযোগ পেলেন, ‘ওর চেয়ে বিচিত্র অ্যাকশনের কোনো বোলার দেখিনি আমি কখনো। ওর এই বিচিত্র অ্যাকশনের পেছনে কি কৌশল কাজ করছে, সেটা বের করার জন্য অনেক ভাবতে হবে আমার। তবে ও যদি আমাদের যুগে জন্মাত, অবশ্যই ওকে আমরা আমাদের দলে নিতাম। বুমরা সে ধরনের পেসার, যে ধরনের পেস বোলার আমাদের বোলিং আক্রমণে ছিল না।’

বোলিং করার সময় বুমরার মাথা খাটানোর প্রবণতাটা অ্যামব্রোসের মতো রবার্টসকেও মুগ্ধ করেছে, ‘বোলিং করার সময় চিন্তা-ভাবনার দিকে একটু লক্ষ্য করুন। দুটো বল ব্যাটসম্যানের ভেতরে ঢোকাচ্ছে, তো একটা বাইরে বের করছে। দুটি বাইরে বের করলে তৃতীয় বলটা আবার পায়ের ভেতরে ঢোকাচ্ছে। এভাবে আমরাও চিন্তা করতাম। এভাবেই যুগ যুগ ধরে পেস বোলাররা চিন্তা করে এসেছে। চ্যাম্পিয়ন বোলাররা বোঝে, কখন কোন ধরনের বল করলে লাভ হবে। এটা বুমরাও বোঝে। সঠিক সময়ে সঠিক ধরনের বল করতে পারার জন্য অনেক বছরের অভিজ্ঞতা লাগে, অনেক সময় লাগে। কিন্তু বুমরা কয়টা ম্যাচ খেলেছে? ও অনেক দ্রুত শেখে সবকিছু। তাই নয় কি? আমার মতে বুমরার সবচেয়ে বড় গুণ এটা। কেউ এটাকে পরিপক্বতা বলে, কিন্তু আমি বলি ক্রীড়াজ্ঞান। বহু বোলার আছে, যাদের বোলিংয়ে অনেক বৈচিত্র্য থাকা সত্ত্বেও মাথা খাটিয়ে বল করতে পারে না। অনেক বছর লেগে যায় শেখার জন্য। এটাই পেস বোলারদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র, কীভাবে মাথা খাটিয়ে বল করা যায়।’

মাত্র এগারো টেস্ট খেলা বুমরার জন্য কিংবদন্তিদের এমন প্রশংসাবাণী আরও উন্নতি করতে অনুপ্রেরণা জোগাবে বই কি!