রসগোল্লার স্বাদ যখন তেতো

ভূমিকা বদলেই গেলেই মিইয়ে যাচ্ছেন শামি। ছবি: এএফপি
ভূমিকা বদলেই গেলেই মিইয়ে যাচ্ছেন শামি। ছবি: এএফপি

যশপ্রীত বুমরা কাল যেভাবে শুরু করেছিলেন, তাতে অনিল কুম্বলে ও জিম লেকারের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইনআপের প্রথম পাঁচজনই বুমরার শিকার হয়ে ফিরে গেছেন ড্রেসিংরুমে। ইনিংসের সব উইকেটই এক বোলারের ভাগে যাওয়ার তৃতীয় উদাহরণ ঘটার আশা অবশ্য শেষ করে দিয়েছেন মোহাম্মদ শামি। উইন্ডিজের হয়ে একাই লড়াই করে যাওয়া শিমরন হেটমায়ারকে আউট করে দিয়েছেন মোহাম্মদ শামি।

শামির এমন বেরসিক আচরণে অবশ্য উচ্ছ্বসিতই হবেন বিরাট কোহলি। একজন পেস বোলারের কাছ থেকে তো ওটাই চাইবেন অধিনায়ক। তবে ব্যাট হাতে শামির পারফরম্যান্স ঠিকই অস্বস্তি ফেলতে পারে দলকে। ব্যাট হাতে শামির কাছে দলের যে খুব চাওয়া-পাওয়া আছে, এমন নয়। তবু টানা ছয় ইনিংসে একজনের নামের পাশে শূন্য বসাটাও যে স্বাভাবিক নয়। কাল রাকিম কর্নওয়ালের কাছেও মাত্র দ্বিতীয় বলেই নিজের উইকেট খুইয়ে এসেছেন শামি। আরও একবার শূন্য হাতে, মানে গোল্লা নিয়ে। রসিকজনেরা যাকে আদর করে রসগোল্লাও বলেন! এ নিয়ে ছয় ইনিংসে কোনো রান করতে পারেননি, এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ এ সময়ে মাত্র ৮ বল খেলতে পেরেছেন শামি।

শামি ব্যাটিং পারেন না, এমন নয়। টেস্টে ৪৩৩ রান আছে তাঁর। আছে একটি ফিফটিও। কিন্তু সেই অ্যাডিলেড টেস্টে গোল্ডেন ডাক পাওয়ার পর থেকেই আর শামি স্বাভাবিক খেলতে পারছেন না। ক্যারিয়ারে প্রতি ৪ ইনিংসে একবার শূন্য রানে আউট হওয়া ইশান্ত শর্মাই যেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং পেয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি তুলে নিয়েছেন, সেখানে দুই টেস্টে মাত্র ৩ বল খেলে দুইবার আউট হয়েছেন শামি!

শামির তবু ভাগ্য ভালো, এর মাঝে দুবার আউট হওয়ার আগেই দলের ইনিংস শেষ হয়ে গিয়েছিল। না হলে যে টানা ছয় ইনিংসে শূন্য রানে আউট হওয়ার বিশ্ব রেকর্ড হয়ে যেত তাঁর। আপাতত সে রেকর্ড আরও দুজনের সঙ্গে ভাগাভাগি করে দখলে রেখেছেন অজিত আগারকার (৫ বার)। ১৯৮৫ সালে টানা ৫ ইনিংসে শূন্য হাতে ফিরেছেন অস্ট্রেলিয়ার বব হল্যান্ড। আবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই ১৯৯৯-২০০০ সিরিজেই টানা পাঁচবার স্কোর কার্ডে কোনো অবদান না রেখেই ফিরেছেন ভারতের আগারকার। আবার ৫ শূন্যের রেকর্ডের শেষ ভাগীদার মোহাম্মদ আসিফের রেকর্ডটা শুরু হয়েছে ভারতের বিপক্ষেই।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজটার দৈর্ঘ্য মাত্র দুই ম্যাচ। ফলে আগারকারের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামার কোনো সুযোগ নেই শামির। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদেরও ভারতকে দুবার অলআউট করার ক্ষমতা দেখা যাচ্ছে না। না হলে যে ফর্মে আছেন শামি, আগারকারের মতো এক সিরিজে পাঁচবার শূন্য পাওয়ার ভারতীয় রেকর্ডটা হয়ে যেতেও পারত। সে রেকর্ডের ভাগীদার অবশ্য আরও একজন। ১৯৮৩ সালে এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই মাত্র ৬ ইনিংসেই ৫ বার শূন্য হাতে ফিরেছিলেন মহিন্দর অমরনাথ!