রশিদ খান যখন ফটোগ্রাফার

হঠাৎ ফটোগ্রাফার হয়ে উঠলেন আফগান অধিনায়ক রশিদ খান। ছবি: শামসুল হক
হঠাৎ ফটোগ্রাফার হয়ে উঠলেন আফগান অধিনায়ক রশিদ খান। ছবি: শামসুল হক
>বাংলাদেশ-আফগানিস্তান দুই দলই আজ অনুশীলন করেছে। অনুশীলনের ফাঁকে ফাঁকে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ঘটল নানা বিচিত্র ঘটনা। ছোট ছোট এসব ঘটনাগুলো কিন্তু চোখ এড়ায়নি প্রথম আলোর ক্রিকেট প্রতিবেদক রানা আব্বাসের

রশিদ খান লেগ স্পিনটা দুর্দান্ত করেন, সেটি তো জানাই। আলোকচিত্রী হিসেবেও যে তিনি মন্দ নন, সেটি প্রমাণ করতে যেন অনুশীলন শেষে তুলে নিলেন ঢাউস লেন্সের ক্যামেরাটা। কিন্তু ছবি তুলতেই খানিকটা বিপত্তি দেখা গেল। যে আলোকচিত্রীর ক্যামেরা নিয়েছেন, তাঁকে জানালেন, ‘সব তো ঝাপসা দেখা যাচ্ছে!’ আলোকচিত্রী রশিদকে বোঝালেন, বড় লেন্সে কাছের বস্তুর ছবি তুলতে গেলে ঝাপসা দেখাবে। বিষয়টা বুঝতে পেরেই আফগান তারকা ক্যামেরা তাক করলেন দূরে দাঁড়ানো সাংবাদিকদের দিকে। রশিদের ছবি তোলা কেমন হয়েছে, সেটি অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে বোঝা গেল না। তবে ছবি তুলে তিনি বেশ আনন্দ পেয়েছেন, সেটি পরিষ্কার।

‘কর্নেল স্যালুট দে’
বাংলাদেশ দলের তরুণ পেসার ইবাদত হোসেন উইকেট পেলেই স্যালুট দেন। বিমানবাহিনীর সদস্য, স্যালুট দিতেও তিনি পটু। গত বিসিএলে ইবাদতকে এই উদ্‌যাপন করার পরামর্শ দিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। তবে একটা শর্ত ছিল মাহমুদউল্লাহর—তাঁকে আউট করে স্যালুট দেওয়া যাবে না! আজ জহুর আহমেদ চৌধুরী ফিল্ডিং অনুশীলন করার সময় সাকিব আল হাসান সেটি জেনেই রসিকতা করছিলেন, ‘কর্নেল, সরাসরি থ্রোয়ে রানআউট করতে পারলে স্যালুট দিবি!’ কর্নেল যে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের একটি পদবি—এ সংশোধনীটা অবশ্য সাকিবকে দেওয়া হয়নি ইবাদতের।

মুশফিকের ভুল জার্সি
কদিন আগে টেস্টে চালু হয়েছে জার্সি নম্বর। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড এরই মধ্যে সাদা পোশাকে জার্সি নম্বর যোগ করে খেলাও শুরু করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের জার্সি নম্বরে কেমন লাগে, সাদা পোশাকে নম্বরের রংটা কেমন হবে—অজানাই ছিল। এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে সাধারণ দর্শকদের দেখার বাকি থাকলেও অফিশিয়াল ছবি তোলার সৌজন্যে আজ জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে উপস্থিত সাংবাদিকদের সুযোগ হলো চট্টগ্রাম টেস্টের আগে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের জার্সি নম্বর দেখে নেওয়ার। ছবি তোলার সময় মুশফিকুর রহিম পরে এলেন ‘৫৩’ নম্বর জার্সি। পেছনে নাম দেখেই বোঝা গেল জার্সিটা মেহেদী হাসান মিরাজের! তা মুশফিকের জার্সি কোথায়? বাংলাদেশ দলের অভিজ্ঞ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান যেন পণ করেছেন, টেস্টের আগে জার্সির ভাঁজ ভাঙা যাবে না!

সাকিবের ‘ভয়ে’…
অনুশীলনের শুরুতে নেটে সাকিব আল হাসান বোলিং করলেন মুশফিককে। বল উঠছে কেমন (বাউন্স), ঠিক জায়গায় পড়ছে কি না—বোলিংয়ের ফাঁকে ফাঁকে নানা কিছু জেনে নিচ্ছিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক হঠাৎ লক্ষ্য করলেন, মুশফিকের শর্ট ফাইন লেগে (দূরত্বের হিসেবে জায়গাটা স্টেডিয়ামের গ্যালারির ওপর) দুজন দাঁড়িয়ে আছেন। সাকিব তাঁদের উদ্দেশ্যেই হাঁক ছুড়লেন, ‘ভাই আপনারা ওখানেই থাকেন। বল গেলে কুড়িয়ে দেবেন।’ বাঁ হাতি অলরাউন্ডারের অনুরোধে তাঁরা কী বুঝলেন কে জানে। কাঁচুমাচু হয়ে ‘দুঃখিত এখানে দাঁড়িয়ে আর দেখব না, আমরা চলে যাচ্ছি…’ বলেই উধাও হয়ে গেলেন দুজন। স্টেডিয়ামের কাজ করতে আসা দুই শ্রমিক আসলে ভেবেছিলেন সাকিব বুঝি বকা দিচ্ছেন, বলছেন ওখান থেকে সরে যেতে। দুজনের কাণ্ড দেখে সাকিব হাসতে হাসতে দলের লজিস্টিক সহকারী রুস্তমকে পাঠালেন সেখানে দাঁড়াতে।