ইন্দোনেশিয়াকে হারানোর সুখস্মৃতি অবিস্মরণীয়

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশের প্রথম দল। ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশের প্রথম দল। ছবি: সংগৃহীত
>১০ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ ফুটবল বাছাইপর্ব শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে দশমবারের মতো বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে খেলছে বাংলাদেশ। ১৯৮৫ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে অংশ নিয়েই দুটি ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে সে দুটি জয় রোমাঞ্চ জাগায় আজও।

বিশ্বকাপ ফুটবলে বাছাইপর্বের মিশনটা বাংলাদেশের জন্য ৩৪ বছরের পুরোনো। ১৯৮৫ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন নিয়ে বাছাইপর্বে খেলেছিল বাংলাদেশ। ১৯৮৬ মেক্সিকো বিশ্বকাপের সেই মিশনটা কিন্তু খুব মন্দ ছিল না। ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের বিপক্ষে জয় এসেছিল। গ্রুপের অপর প্রতিপক্ষ ভারতের বিপক্ষে হারলেও দুটি ম্যাচেই হয়েছিল হাড্ডাহাড্ডি লড়াইটা হয়েছিল। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে নিজেদের দশম মিশনে মাঠে নামার আগে ৩৪ বছর আগে ফিরে গেলে কেমন হয়! আগামী ১০ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২০২২ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামার আগে প্রথম মিশনের সুখস্মৃতিগুলো কিছুটা হলেও অনুপ্রেরণার হতে পারে জেমি ডে’র দলের জন্য।

প্রতিপক্ষ দলগুলো

১৯৮৬ সালের মেক্সিকো বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৮৫ সালের মার্চ-এপ্রিল মাসে। গ্রুপ থ্রিতে (বি) বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল ভারত, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া। জাকার্তায় ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে ২-০ গোলের হার দিয়ে বিশ্বকাপ বাছাই শুরু। প্রথম মিশনে থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে জয় তুলে নিয়েছিল। তৎকালীন ঢাকা স্টেডিয়ামে ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে জয়টি ছিল ২-১ গোলে। ঘরের মাঠেই থাইল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের ব্যবধান ছিল ১-০। বাকি চারটি ম্যাচেই হেরেছিল বাংলাদেশ।

প্রথম গোল

৯ বারের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ৪৮ ম্যাচ খেলে ৩৩ গোল করেছে বাংলাদেশ। তবে প্রথম গোলের জন্য ইতিহাস হয়ে থাকবেন আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু। ১৯৮৫ সালের ৩০ মার্চ ঢাকায় ভারতের বিপক্ষে সমতাসূচক গোলে বাংলাদেশের গোলে খাতা খুলেছিলেন চুন্নু। যদিও শেষ পর্যন্ত ম্যাচটিতে ২-১ গোলে হেরে যায় দল।

ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডকে হারানোর সেই স্মৃতি
প্রথমবার বাছাইপর্বে খেলতে নেমেই ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে এক দারুণ জয় তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ। ১৮ মার্চ প্রথম লেগে জাকার্তায় অ্যাওয়ে ম্যাচে ইন্দোনেশিয়ার কাছে ২-০ গোলে হারলেও ঢাকার ফিরতি ম্যাচে এক গোলে পিছিয়ে পড়েও ২-১ গোলের এক দারুণ জয় পায় বাংলাদেশ। খেলাটি হয়েছিল ২ এপ্রিল। বাংলাদেশের পক্ষে গোল করেছিলেন কায়সার হামিদ ও আশরাফউদ্দিন চুন্নু। ঢাকা স্টেডিয়ামে ১১ মিনিটের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ইন্দোনেশিয়া। ৭৫ মিনিটে হেডের গোল করে সমতায় ফেরান ডিফেন্ডার কায়সার।

৩৪ বছর আগের সেই গোলের গল্পটা কায়সারের মুখে এখনো তরতাজা, ‘আমরা ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়ি। গোলের পর ইন্দোনেশিয়া আমাদের ওপর আরও বেশি চাপ সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু চুন্নু ভাইয়ের কর্নার থেকে হেডে গোল করে সমতা আনি। আর পরে তো চুন্নু ভাইয়ের গোলেই ম্যাচটা জিতলাম।’

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের প্রথম জয়। সেই জয়ের স্মৃতি আজও উজ্জ্বল কায়সারের মানসপটে, ‘গ্যালারি ভর্তি দর্শক। মাঠের সে যে কী অবস্থা। আমরা তো মাঠ থেকেই বের হতে পারছিলাম না। সেদিন ঢাকার দর্শকেরা প্রাণভরে উৎসব করেছিল।’

এরপর ৫ এপ্রিল থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ১-০ গোলে জয় তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ। গোলটি করেছিলেন ইলিয়াস হোসেন।