ভারতীয়দের ভালোবাসায় মুগ্ধ শোয়েব

শোয়েব আখতার। ভারতের ক্রিকেটপ্রেমীদের নিয়ে তাঁর অনেক স্মৃতি। ছবি: এএফপি
শোয়েব আখতার। ভারতের ক্রিকেটপ্রেমীদের নিয়ে তাঁর অনেক স্মৃতি। ছবি: এএফপি
>ইউটিউবে এক ভিডিওতে ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছ থেকে ভালোবাসা পাওয়ার কথা জানিয়েছেন শোয়েব আখতার। সেখানকার ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রতি নিজের ভালোবাসার কথাও জানিয়েছেন ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’খ্যাত পাকিস্তানের এ সাবেক ফাস্ট বোলার।

খেলোয়াড়ি জীবনে মাঠে ছিলেন শত্রু। কিন্তু সামর্থ্যের সঙ্গে তারকাদ্যুতি থাকলে যা হয় আরকি—‘শত্রু তুমি বন্ধু তুমি’! ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা মাঠের বাইরে শোয়েব আখতারকে ভালো না বেসে পারেনি। মাঠের ভেতরে বল হাতে গতির ঝড় তোলার জন্যও তাঁকে ভালোবেসেছেন অনেক ভারতীয়, এমনকি তা নিজের দলের বিপক্ষেও! এমন ফাস্ট বোলারের আবির্ভাব তো সব সময় হয় না। আইপিএলে অবশ্য সে সংকটে পরতে হয়নি। এ মঞ্চে শোয়েবকে কোনো কুণ্ঠা ছাড়াই ভালোবেসেছেন ভারতীয়রা। কৃতজ্ঞতার সুরে সে ভালোবাসারই প্রাপ্তিস্বীকার করলেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি এ পেসার।

পরশু নিজের ভেরিফাইড ইউটিউব চ্যানেল একটি ভিডিও প্রকাশ করেন শোয়েব। কলকাতা তাঁর পছন্দের ভেন্যুগুলোর একটি, আর সেখানকার স্টেডিয়াম ইডেন গার্ডেনে ক্যারিয়ারের সেরা কিছু পারফরম্যান্স রয়েছে, ভিডিওতে এসব কথাই বলেছেন বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির এ পেসার, ‘কলকাতা অসাধারণ। সেখানকার লোকজনও দুর্দান্ত। গোটা ভারত জুড়েই ভালোবাসা পেয়েছি। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। সম্ভবত আমার সেরা কিছু পারফরম্যান্স সেখানকার মাঠে। ইডেন গার্ডেনে আমার অনেক স্মৃতি। এটা আমার অন্যতম পছন্দের একটি মাঠ’।

ক্রিকেটের ময়দানি লড়াইয়ে ভারত-পাকিস্তান চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। শোয়েবের খেলোয়াড়ি জীবনে এ প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঝাঁজ এখনকার চাইতেও বেশি ছিল। ১৯৯৯ ভারতের মাটিতে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলেছিলেন শোয়েব। ইডেনে প্রথম টেস্টে তাঁর দুটি ডেলিভারি ক্রিকেট ইতিহাসের অংশ। বিশেষ করে পেসারদের ইতিহাসে তো বটেই। টানা দুটি আগুনে গতির ইয়র্কায় বোল্ড আউট করেছিলেন রাহুল দ্রাবিড় ও শচীন টেন্ডুলকারকে। লাখখানেক দর্শকে টইটম্বুর ইডেনের গ্যালারিতে নেমে এসেছিল পিনপতন নীরবতা। ইউটিউবে সে দুটি আউটের ভিডিও দেখলে মুহূর্তটা বোঝা যায়। কোলাহলে ভরপুর গ্যালারির নিস্তব্ধতা ছাপিয়ে ভেসে আসে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের আনন্দ-উল্লাসের শব্দ।

শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ২০০৮ সালে শোয়েবকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তখন আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে তাঁর খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছিল। সরকারের হস্তক্ষেপে বিষয়টি সুরাহা হয়। ৪৬ টেস্টে ১৭৮ উইকেট নেওয়া সাবেক এ পেসার সে সময় নিয়ে বলেন, ‘তখন পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা ছিল। পিসিবি চেয়ারম্যান অন্যায়ভাবে নিষিদ্ধ করেছিল। এতে আইপিএলে আমার চুক্তিতে সমস্যাও হয়েছিল। নিষেধাজ্ঞার বিপক্ষে মামলা করতে যাব এমন সময় হস্তক্ষেপ করেছিল সরকার। এ জন্য আমি কৃতজ্ঞ।’

১৬৩ ওয়ানডেতে ২৪৭ উইকেট নেওয়া শোয়েবকে আইপিএলে নিয়ে আসতে বড় ভূমিকা ছিল ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী ও নাইট রাইডার্স মালিক শাহরুখ খানের। ভিডিওতে শোয়েব তাঁদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে প্রথম ম্যাচে মাঠে নামার অভিজ্ঞতাও ভাগ করে নেন ৪৪ বছর বয়সী কিংবদন্তি, ‘মাঠে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে হাজারো দর্শক উৎফুল্ল মনে বরণ করে নিয়েছে। কলকাতার হয়ে খেলার সময় তাদের অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। সব দর্শকের সমর্থন ছিল। সংবাদমাধ্যম থেকে গোটা ভারত আমাকে সমর্থন দিয়েছে।’