এমন দিন প্রতিদিন চায় বাংলাদেশের ক্রীড়াজগৎ

ফুটবল-ক্রিকেট মিলিয়ে সিনিয়র ও বয়সভিত্তিক পর্যায়ে বাংলাদেশের তিনটি দল মাঠে নেমেছিল। কোথাও হারেনি বাংলাদেশ। ছবি: প্রথম আলো ও সংগৃহীত
ফুটবল-ক্রিকেট মিলিয়ে সিনিয়র ও বয়সভিত্তিক পর্যায়ে বাংলাদেশের তিনটি দল মাঠে নেমেছিল। কোথাও হারেনি বাংলাদেশ। ছবি: প্রথম আলো ও সংগৃহীত
>

শনিবার দিনটা বাংলাদেশের খেলার জগতের জন্য ছিল দারুণ একটা দিন। সব জায়গা থেকেই এসেছে আনন্দ-সংবাদ। এমন দিনই তো সব সময় চায় বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন।

ক্রীড়াঙ্গনে কাল দারুণ একটা দিন কাটল বাংলাদেশের। দেশ ও দেশের বাইরে ছিল বাংলাদেশের খেলাধুলার জয়জয়কার। ফুটবল-ক্রিকেট মিলিয়ে সিনিয়র ও বয়সভিত্তিক পর্যায়ে বাংলাদেশের তিনটি দল মাঠে নেমেছিল। সব জায়গা থেকেই এসেছে ভালো খবর। দুই জয়ের বিপরীতে এক ড্র। কিন্তু থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২-২ গোলের ড্রটায় বাংলাদেশের জন্য বেশি গৌরবের। বাংলাদেশের নারী ফুটবল ইতিহাসের সেরা সাফল্য বলা যায়।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মেয়েদের ড্র ছাড়াও নেপালের কাঠমান্ডুতে শ্রীলঙ্কাকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে অনূর্ধ্ব-১৮ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শুভ সূচনা করেছে বাংলাদেশ। আর দেশের মাটিতে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে আফগানিস্তানের বিপক্ষে আরাধ্য জয়টা তো আছেই।

হারতে হারতে বাঁচল অস্ট্রেলিয়া!
আরেকটু হলেই গৌরবের এক ইতিহাস গড়ে ফেলত বাংলাদেশের কিশোরী ফুটবলাররা। কিন্তু যা করতে পেরেছে, সেটিও কম কি! এশীয় ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়াকে তো প্রায় হারিয়েই দিচ্ছিল তারা। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়েছে।
থাইল্যান্ডের চনবুরিতে অনূর্ধ্ব-১৬ এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপের এ ম্যাচে ২১ মিনিটে তহুরার গোল এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। সেই লিড ৭৫ মিনিট পর্যন্ত ধরে রেখেছিল দল। মেয়েদের র‌্যাঙ্কিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান ৮ আর বাংলাদেশ ১৩০। ১২২ ধাপ এগিয়ে থাকা দলের বিপক্ষে দুর্দান্ত ফুটবল খেলেছে মেয়েরা। ৭৫ মিনিটে অস্ট্রেলিয়া সমতা ফেরানোর পর ৭৬ মিনিটে আবারও তহুরা গোল করে এগিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ৮০ মিনিটেই আবার অস্ট্রেলিয়ার সমতা। ‘রোলার কোস্টার রাইড’ এই ম্যাচ উল্টো আফসোস করছে বাংলাদেশ। আরেকটু সতর্ক হলেই যে ম্যাচটা নিজেদের করে নিতে পারত বাংলাদেশ।

নেপালে শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া
কাঠমান্ডুতে সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপে শ্রীলঙ্কাকে কাল ৩-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ যুবদল। অনেকেই মনে করতে পারেন শ্রীলঙ্কাকে হারানো, এ আর এমন কি! আসলেই খুব বড় কোনো ঘটনা হয়তো এটি নয়। বয়সভিত্তিক ফুটবলে শ্রীলঙ্কার কাছে আগে হারের রেকর্ড নেই বাংলাদেশের। তবে কাল লঙ্কানদের বিপক্ষে জয়ের ধরনটা কিন্তু ফুটবলপ্রেমীদের আশাবাদী করতেই পারে। গতকালকের ম্যাচে গোল করেছেন তানভীর হোসেন, ফাহিম মোর্শেদ আর ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। এর মধ্যে দুই ‘ফাহিম’ কিন্তু নিজেদের প্রতিভা নতুন করে চিনিয়েছেন সবাইকে। দারুণ এক ভলিতে নিজের গোলটি করেন ২০১৫ সালে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবল দারুণ প্রতিভাবান হিসেবে আবির্ভূত হওয়া ফাহিম মোর্শেদ। এই কয়েক বছরে যে নিজের প্রতিভায় মরচে পড়তে দেননি, কাল তিনি তার প্রমাণ দিলেন। ২০১৭ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপে কাতারকে হারানোর অন্যতম নায়ক ফয়সাল আহমেদ ফাহিমও কাল দারুণ এক গোলে সবাইকে বার্তা দিয়ে রেখেছেন। স্ট্রাইকার সংকটের এই দেশে এই দুই ‘ফাহিম’ ভরসা জোগাতেই পারেন ভবিষ্যতের জন্য।

সাকিবের ব্যাটে কাটল আফগান-জুজু
আফগানিস্তানকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ শেষবারের মতো হারিয়েছিল সেই ২০১৪ সালে। এরপর থেকে আফগানরা টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের জন্য কঠিন এক ধাঁধার নাম। এই তো কয়েক দিন আগেই চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের কাছে একমাত্র টেস্ট ম্যাচটিতে ২২৪ রানে হারতে হয়েছে সাকিবদের। ত্রিদেশীয় সিরিজের একটি ম্যাচেও আফগানদের বিপক্ষে হার হয়েছে সঙ্গী। কাল চট্টগ্রামে ফিরতি ম্যাচটা তাই ছিল কিছুটা নিজেদের সম্মান পুনরুদ্ধারেরই। সেটিতে সফল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তবে এই জয়ে অধিনায়ক সাকিবের ভূমিকাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর ৪৫ বলে অপরাজিত ৭০ রানের ইনিংসেই জয়টা নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশের।