'মিলান-ডার্বি' দেখল ইন্টারের উত্থান

জয়সূচক গোল করার পর কোচের সঙ্গে লুকাকুর উল্লাস। ছবি : এএফপি
জয়সূচক গোল করার পর কোচের সঙ্গে লুকাকুর উল্লাস। ছবি : এএফপি
>

গতকাল ইতালিয়ান লিগে মুখোমুখি হয়েছিল মিলান শহরের দুই ক্লাব এসি মিলান ও ইন্টার মিলান। লড়াইয়ে লাল-কালো এসি মিলানকে ২-০ গোলে হারিয়ে শহরে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রেখেছে নীল-কালো ইন্টার।

এক কালে এই ‘ডার্বি’ খেলতে দেখা যেত বিশ্বখ্যাত সব তারকাদের। এই শতাব্দীর প্রথম দশকের কথাই ধরা যাক। এসি মিলানের কাকা, পাওলো মালদিনি, কাফু, আন্দ্রেয়া পিরলো, রোনালদোরা মুখোমুখি হতেন ইন্টারের হাভিয়ের জানেত্তি, লুইস ফিগো, প্যাট্রিক ভিয়েরা, এস্তেবান ক্যাম্বিয়াসো ও জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচদের।

তারও আগের কথা ভাবা যাক। নব্বইয়ের দশকে এসি মিলানের মালদিনি, কোস্টাকুর্টা, মার্সেল দেশাই, প্যাট্রিক ক্লুইভার্ট ও জর্জ উইয়াহদের সঙ্গে ‘মিলান ডার্বি’তে সমান-সমান পাল্লা দিতেন রোনালদো, জানেত্তি, ইভান জামোরানো, জিউসেপ্পে বার্গোমি ও ডিয়েগো সিমিওনেরা। তখন বিশ্ব ফুটবল শাসন করত এই দুই ক্লাব। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই দুই ক্লাবের জৌলুশও কমেছে। ক্লাবের জৌলুশ কমার সঙ্গে সঙ্গে আবেদন কমেছে ‘মিলান-ডার্বি’রও। জুভেন্টাসের একচ্ছত্র আধিপত্যের এই যুগে দুই মিলানের ম্যাচ এখন এই দুই ক্লাবের সমর্থক ছাড়া কেউ তেমন আকর্ষণ অনুভব করেন না না। গতকালই যেমন, দুই দল যে লিগে মুখোমুখি হলো, কয়জনই বা জানতেন সেটা? লড়াইয়ে এসি মিলানকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ইন্টার। গোল করেছেন বেলজিয়ামের স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকু ও ক্রোয়েশিয়ার মার্সেলো ব্রোজোভিচ।

মান নামতে নামতে দুই দলেরই এখন বেহাল দশা। ইন্টার তাও নিজেদের অবস্থার উন্নতি করার চেষ্টা করছে গত কয়েক বছর ধরে, এসি মিলানের অবস্থা একদম তথৈবচ। মালদিনি-বারেসি-কাকা-পিরলোদের ক্লাবে এখন খেলেন মাতেও মুসাক্কিও, হাকান চালহানোগ্লু, সামু কাস্তিয়েহোর মতো সাধারণ মানের খেলোয়াড়। মিলানকে আগে কোচিং করাতেন আরিগো সাচ্চি, ফাবিও ক্যাপেলো বা কার্লো আনচেলত্তির মতো কোচেরা। বর্তমান কোচ মার্কো জিয়ামপাওলোর নাম ফুটবল রোমান্টিকদের টানে না তেমন। তাও যেটা বললাম, ইন্টার তাও নিজেদের অবস্থার উন্নয়ন করার জন্য, জুভেন্টাসের একাধিপত্যে ছেদ টানার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। এই মৌসুমে তারা কোচ করে নিয়ে এসেছে ইতালিয়ান লিগের অন্যতম সেরা কোচ আন্তোনিও কন্তেকে। দলে আছেন রোমেলু লুকাকু, নিকোলো বারেলা, মিলান স্ক্রিনিয়ার, ডিয়েগো গোডিন ও লওতারো মার্টিনেজের মতো কার্যকরী তারকারা।

গতকাল মিলান ডার্বিতেও ফুটে উঠেছে দুই দলের মানগত তারতম্যের এই বিষয়টা। মানের দিক দিয়ে ইন্টারের কোচ যে মিলানের কোচের চেয়ে যোজন-যোজন এগিয়ে, সেটাও বোঝা গেছে। গোলরক্ষক জিয়ানলুকা দোনারুমা ‘সুপার ম্যান’ হয়ে গিয়েছিলেন বলে রক্ষা, না হয় আধা হালির জায়গায় পুরো এক হালি গোল খেয়েই মাঠ ছাড়তে হতো এসি মিলানকে। প্রথমার্ধে যাও একটু খেলেছিল এসি মিলান, দ্বিতীয়ার্ধে সেটাও পারেনি। এই জয় নিয়ে এবার লিগে প্রথম চার ম্যাচেই জয় তুলে নিল ইন্টার।

সে গতিতে এগোচ্ছে ইন্টার, সে গতি বজায় রাখলে জুভেন্টাসের আট বছরের আধিপত্য ঘুচে যাওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র!