তবু রশিদের কাছে বাংলাদেশই প্রেরণা

আফগানিস্তান অধিনায়ক রশিদ খান । ছবি: প্রথম আলো
আফগানিস্তান অধিনায়ক রশিদ খান । ছবি: প্রথম আলো

রশিদ খানের কথা শুনলে আন্তর্জাতিক ময়দানে বাংলাদেশ ক্রিকেটের শুরুর দিনগুলো মনে পড়বেই। বড় দলগুলোর সঙ্গে খেলার জন্য তখন হাপিত্যেশ করত বাংলাদেশ। ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা স্বাগতিকদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার পর আফগানিস্তান অধিনায়কের কণ্ঠে এমন আকুতিই ঝরল।

২০১৭ সালে স্থায়ীভাবে ওয়ানডে মর্যাদা পায় আফগানিস্তান। দলটি টেস্ট খেলুড়ে দেশের কাতারে নাম লিখিয়েছে গত বছর। নিজেদের তৃতীয় টেস্টেই বাংলাদেশকে হারিয়ে আফগানিস্তান বুঝিয়ে দিয়েছে এ সংস্করণে দলটি টিকে থাকতেই এসেছে। টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়েও শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আফগানিস্তান। উন্নতির গ্রাফটা এমন হলে যেকোনো দলই আরও বড় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলে নিজেদের আরও সুসংহত করতে চাইবে। কাল ত্রিদেশীয় সিরিজের বৃষ্টিস্নাত ফাইনাল শেষে রশিদ খান এমন কথাই বলেছেন আর এ ক্ষেত্রে তিনি উদাহরণ হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশকে।

আসলে বড় দলগুলোর সঙ্গে খেলার অভ্যাস গড়ে না তুললে তাদের হারানো অনেক কঠিন। একেবারে নিয়মিত না হোক কিছুটা বিরতি দিয়েও বড় দলগুলোর সঙ্গে খেললে তাদের শক্তি ও সামর্থ্য টের পাওয়া যায়। তাতে চোখের সামনে ভেসে ওঠে বড় দল হয়ে ওঠার পথটাও। বাংলাদেশ যেমন ২০০৭ বিশ্বকাপে প্রভিডেন্সে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে জয়ের স্বাদ পেয়েছিল আগের পাঁচ বছরে ৭টি ম্যাচ খেলার পর। এরপর মাঝের আট বছরে আরও ৭ ম্যাচ খেলার পর ২০১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানা দুই জয়ের মুখ দেখে বাংলাদেশ।

রশিদ খান বাংলাদেশের প্রসঙ্গ তুলে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘বাংলাদেশ সেরা উদাহরণ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তারা অনেক ম্যাচ খেলার পর সেরা সাফল্য পেয়েছে বিশ্বকাপে। ভালো দল হয়ে উঠতে চাইলে আমাদেরও বড় দলগুলোর সঙ্গে বেশি বেশি খেলা উচিত। সেটি অবশ্যই চার বছরে এক ম্যাচ না।’ বড় দলগুলোর সঙ্গে কম খেলার উদাহরণও দেন আফগান অধিনায়ক, ‘গত পাঁচ বছরে আমরা ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে দুটি করে ম্যাচ খেলেছি (সবগুলোই বিশ্বকাপে)। বেশি ম্যাচ খেললে তাদের শক্তি ও সামর্থ্য সমন্ধে জানতে পারতাম। এটা নিয়ে ভাবা উচিত।’

বড় দলগুলোতে ভালো পেসারের প্রাচুর্য থাকে। গতিও থাকে অনেক বেশি। স্কটল্যান্ড কিংবা আয়ারল্যান্ডের মতো দলে এমন পেসার (১৪০ কিমির বেশি) নেই বললেই চলে। এমনকি বাংলাদেশ দলেও কোনো পেসার নিয়মিত ১৪০ কিমির বেশি গতিতে বল করতে পারেন না। বড় দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত না খেলায় এমন পেসারদের মুখোমুখি হওয়ার অভিজ্ঞতা খুব বেশি না থাকার আক্ষেপও ঝরেছে রশিদের কণ্ঠে, ‘এসব দলে চারজন করে পেসার থাকে যারা ১৪০-এর ওপরে বল করে। কিন্তু আমরা স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলে থাকি, যাদের এমন পেসার নেই বললেই চলে।’

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে কুলীন দলগুলোর সঙ্গে খেলতে না পারায় কষ্টও লুকিয়ে রাখেননি রশিদ। আফগানিস্তানের এ তারকা লেগ স্পিনার অবশ্য জানালেন, টেস্ট সংস্করণে ভালো খেলেই তিনি সবার ভুল ভাঙানোর কথা বললেন, ‘বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে না পারায় আমরা খুব কষ্ট পেয়েছি। তবে আমরা টেস্টে ভালো খেলে প্রমাণ করতে পারি, (টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে না নেওয়ার) সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল। আবারও এটাও ভাবতে হবে মাত্র তিন টেস্ট খেলা কোনো দলকে চ্যাম্পিয়নশিপে রাখা যায় না।’