আর্জেন্টিনাকে হারানো ভারতীয় কোচ মুগ্ধ বাংলাদেশ যুবদলে

আর্জেন্টিনাকে হারানো দলের ৫ সদস্য ছিল অনূর্ধ্ব-১৮ সাফ ফুটবলে। সে দলটির সঙ্গে সাফে ভালোই লড়ল বাংলাদেশ। ছবি: ফেসবুক ও বাফুফে
আর্জেন্টিনাকে হারানো দলের ৫ সদস্য ছিল অনূর্ধ্ব-১৮ সাফ ফুটবলে। সে দলটির সঙ্গে সাফে ভালোই লড়ল বাংলাদেশ। ছবি: ফেসবুক ও বাফুফে

গত বছর আগস্টে স্পেনের অনূর্ধ্ব-২০ কোতিফ কাপে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিল ভারত। সে ম্যাচে শেষ ৪০ মিনিট ১০ জনে খেলেছিল তারা। ঐতিহাসিক সেই জয়ে দুই অর্ধে একটি করে গোল করেছিলেন দীপক ট্যাংরি ও আনোয়ার আলী। হঠাৎ সেই প্রসঙ্গ টেনে নিয়ে আসার কারণ আছে। কাঠমান্ডুতে সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবলের ফাইনালে বাংলাদেশ যুবদল ভারতের যে দলটির সঙ্গে খেলেছে, সে দলে খেলেছেন আর্জেন্টিনাকে হারানো দলটির ৫ জন। এরা হলেন—গোলরক্ষক প্রভসুকান সিং গিল, নরেন্দ্রর গ্যালত, জিতেন্দ্র সিং, জিকসন সিং ও বিকরাম। ৫ জনই খেলে থাকেন একাদশে। এদের মধ্যে প্রভসুকান তো দলটির নিয়মিত অধিনায়কই। কিন্তু প্রথম ম্যাচে এই গোলরক্ষক চোটের কারণে অধিনায়কের দায়িত্ব বর্তায় ডিফেন্ডার জিতেন্দ্রর সিংয়ের কাঁধে।

ভারতীয় যুবদলের কোচ, যিনি আর্জেন্টিনাকে হারানো সেই দলেও কোচ ছিলেন, সেই ফ্লুড পিন্টো দারুণ প্রশংসা করেছেন বাংলাদেশের তরুণ ফুটবলারদের, ‘দুর্দান্ত একটা দল দেখলাম। টিম স্পিরিট মুগ্ধ করার মতো। শেষ পর্যন্ত লড়াই করে আমাকে মুগ্ধ করেছে। অনূর্ধ্ব-১৯ এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপেও বাংলাদেশ ভালো করবে।’

সাফে বাংলাদেশের ‘ভারত মিশন’ খুব খারাপ হয়নি। গ্রুপপর্বে গোলশূন্য ড্র হলেও ফাইনালটা ছিল রীতিমতো ‘আগুনে।’ গোল, পাল্টা গোলে সমতা, তিন-তিনটি লাল কার্ড, প্রথমার্ধের শেষের থেকে বাংলাদেশের নয়জনের দল হয়ে যাওয়া-একটি ফুটবল ম্যাচে এর বেশি নাটকীয়তা আর হতে পারত না। প্রায় ৫০ মিনিট এক খেলোয়াড় কম নিয়ে খেলেও ভারতের সঙ্গে সমান তালে লড়াই করেছে বাংলাদেশ। ৯০ মিনিট পর্যন্ত ম্যাচটি ছিল ১-১ গোলে ড্র। ৯১ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত গোলে ফাইনালের মীমাংসা করে দিয়েছেন রবি বাহাদুর।

ভারতের আর্জেন্টিনাকে হারানোর প্রসঙ্গে আরেকটা তথ্য যোগ করা যেতে পারে। আর্জেন্টিনাকে হারানো ভারতের দলটিকেই ২০১৫ সালে সিলেটে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৬ সাফ ফুটবলে দুইবার হারিয়েছিল বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ও ফাইনালে। গত বছর ভারতের সেই ঐতিহাসিক জয়ের পর দীর্ঘশ্বাস ফেলেছে বাংলাদেশের সেই কিশোর ফুটবলাররা। তাদের মনে প্রশ্ন ছিল-আমরা যে ভারতকে হারিয়ে দিলাম, তারাই কিনা তিন বছরের ব্যবধানে এখন হারিয়ে দিচ্ছে আর্জেন্টিনা যুবদলকে! ওরা কোথায় এগিয়ে যাচ্ছে আর আমরা কোথায় পড়ে রয়েছি!’

অথচ বাংলাদেশের সে চ্যাম্পিয়ন দলের ৪ ফুটবলার ছাড়া বাকিদের খোঁজ নেই। এদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো আছেন ফরোয়ার্ড সাদউদ্দিন। আবাহনী লিমিটেডের হয়ে খেলা এই ফুটবলার বর্তমানে জাতীয় দলে আছেন। আতিকুর ও স্ট্রাইকার সারোয়ার জামান নিপু (অনূর্ধ্ব-১৬ সাফের সেরা খেলোয়াড়) শেষ বছরে খেলেছেন আরামবাগে। আর ফাহিম মোর্শেদ এবার অনূর্ধ্ব ১৮ দলের হয়ে সাফ খেললেন। গোটা দলকে একসঙ্গে রাখলে, দলটিকে নিয়ে পরিকল্পনামাফিক এগোলে যে বাংলাদেশেরই লাভ হতো, সেটি প্রমাণ করে দিয়েছে ভারতের যুব দলটিই।

যুব প্রকল্পে বিনিয়োগের যে কোনো বিকল্প নেই, তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ তো প্রতিবেশী দেশটিই!