রোনালদোও পারবেন না ইউনাইটেডকে সেরা বানাতে

সমর্থকদের তালির জবাবে সুলশারের অভিবাদন। ইউনাইটেডের খেলায় অবশ্য তালি দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না সমর্থকেরা। ছবি: এএফপি
সমর্থকদের তালির জবাবে সুলশারের অভিবাদন। ইউনাইটেডের খেলায় অবশ্য তালি দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না সমর্থকেরা। ছবি: এএফপি

চ্যাম্পিয়নস লিগে নিজেদের সবচেয়ে বাজে শুরু করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। দুই দিন পরেই ইউরোপা লিগে আরেক অপ্রীতিকর রেকর্ড গড়েছে আরেক ফুটবল পরাশক্তি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। এমনিতেই চ্যাম্পিয়নস লিগে সুযোগ না মেলায় ইউরোপিয়ান ফুটবলের দ্বিতীয় টুর্নামেন্ট ইউরোপা লিগে খেলতে হচ্ছে তাদের। অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রতিপক্ষ পেয়েও পুরো ম্যাচে গোলে কোনো শট নিতে পারেনি ইউনাইটেড। ইউনাইটেডের এমনই অবস্থা যে সাবেক খেলোয়াড় লি শার্পের দাবি, সেরা সময়ের ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও এ দলকে প্রিমিয়ার লিগের সেরা চারে নিতে পারতেন না!

চ্যাম্পিয়নস লিগের নিয়মিত অংশ নেওয়া ইউনাইটেড খুব বেশি ম্যাচ খেলেনি ইউরোপা লিগে। কাল নেদারল্যান্ডসের এজের বিপক্ষের ম্যাচটি তাদের ২৫তম ম্যাচ ছিল। তবে এর আগের ২৪ ম্যাচে অন্তত প্রতিপক্ষের গোলমুখে অন্তত একটি হলেও শট নিতে পেরেছিল ইউনাইটেড। গতকাল সেটাও পারেনি ওলে গুনার সুলশারের দল। ইউনাইটেডের হতাশার গল্প এখানেও শেষ হলে চলত। কালকের ম্যাচ নিয়ে এ নিয়ে প্রতিপক্ষের মাঠে টানা দশ ম্যাচ জয়হীন ইউনাইটেড। প্রতিপক্ষের মাঠ এতটা বাজে সময় ৩০ বছর আগে সর্বশেষ দেখেছিল দলটি। ১৯৮৯ সালে টানা ১১ অ্যাওয়ে ম্যাচ জয়হীন ছিল ইউনাইটেড।

স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের আমলের সে ঘটনা আবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন তাঁরই ছাত্র সুলশার। ফার্গুসনের আরেক ছাত্র শার্প অবশ্য বর্তমান ইউনাইটেড দলকে গোনাতেই ধরতে চাচ্ছে না। তাঁর ধারণা লিভারপুল বা ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার ক্ষমতা নেই ইউনাইটেড স্কোয়াডের, ‘আমার ধারণা ইউনাইটেড তবু (রোনালদোও যদি থাকত) ওদের সঙ্গে পারবে। তবে কেউ যদি মৌসুমে ২৫-৩০ গোল করে তবে ব্যবধানটা অনেক কমে যাবে।’

রোনালদোর পক্ষেও এই ইউনাইটেডকে সেরা বানানো সম্ভব নয়, কিন্তু শার্পের ধারণা তাঁর মতো কেউ থাকলে অন্তত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারত তাঁর সাবেক দল, ‘কয়েক মৌসুম আগে লুইস সুয়ারেজ লিভারপুলের পক্ষে কী করত তা দেখেছি। আপনার যদি এমন কেউ থাকে যে চাপের মুখে মাঝ মাঠ থেকে বল টেনে গোল করতে পারে, সেটা অনেক কিছুই বদলে দেয়। এ ছাড়া এমন কেউ যদি থাকে যে ট্যাপ ইন করতে পারে, হেড থেকে গোল দিতে পারে। বক্সের বাইরে থেকে শট নিতে পারে। একজন খেলোয়াড়ের কাছ থেকে এভাবে নানা উপায়ে গোল পেলে, আপনার সব সময় সুযোগ থাকে। ইউনাইটেডের মতো এক ক্লাব যত সুযোগ সৃষ্টি করে, গোল খাওয়ার চেয়ে করার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। যদি আপনার কাছে রোনালদো, মেসি কিংবা হ্যারি কেনও থাকে তবে আপনি সব সময় এগিয়ে থাকবেন।’

বর্তমান ইউনাইটেড দলে মাত্র একজন খেলোয়াড়কেই বিশ্বমানের মনে করেন শার্প। কিন্তু পল পগবাকে দুর্ভাগা বলেই মনে হচ্ছে সাবেক এই উইঙ্গারের, ‘আমার ধারণা পগবা তার নিজের দিনে ম্যাচ বদলাতে পারে। এবং আমরা এর কিছুটা দেখেছিও। কিন্তু ওয়েইন রুনি এবং রোনালদো যে দলে খেলেছে, সে তেমন শক্তিশালী এক দলে খেলছে না। ফলে নিয়মিত ওকে ভালো খেলতে দেখছি না। আমার ধারণা আরও এক বা দুজন ভালো খেলোয়াড় দরকার ইউনাইটেডের। রোনালদোকে ফেরাতে পারেনি ওরা, এটা দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু গ্যারেথ বেলকে কী আনা যায় না?’

শার্প অবশ্য যা বলছেন, তাতে মনে হয় না ইউনাইটেডের দুঃসময় এত সহজে কাটবে, ‘বিশ্বের কয়জন খেলোয়াড় প্রতি সপ্তাহে এ কাজটা (নিয়মিত গোল করা) করতে পারে? খুব কম খেলোয়াড়ই তা পারে। আর আপনি যখন চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলবেন না, তখন কীভাবে তাদের নিজেদের দলে টানবেন?’