দুর্দান্ত বার্সেলোনার সহজ জয়

মেসির জাদুকরী শটে চার নম্বর গোলটি পায় বার্সেলোনা। ছবি: এএফপি
মেসির জাদুকরী শটে চার নম্বর গোলটি পায় বার্সেলোনা। ছবি: এএফপি

অবশেষে দম নিতে পারছেন মেসি ভক্তরা! ফুটবলের এই জাদুকর আজ লা লিগায় সেভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে জাদুকরী এক ফ্রি কিকে বল জালে জড়িয়েছেন। চলতি মৌসুমে এটি তাঁর প্রথম গোল।

কোনটি ম্যাচের সেরা গোল? প্রথমার্ধে সুয়ারেজের বাইসাইকেল শটে করা গোল নাকি দ্বিতীয়ার্ধে রক্ষণ দেয়ালের ওপর দিয়ে নেওয়া শটে মেসির গোলটি! এ বিষয়ে আলোচনা হতেই পারে। তবে লা লিগায় সেভিয়ার বিপক্ষে রাতটি বার্সেলোনারই ছিল। সুয়ারেজের গোলে শুরু হয়ে ম্যাচ শেষ হয়েছে মেসির গোলে। ন্যু ক্যাম্পে অতিথিরা গোল হজম করেছে এক হালি। শেষ মুহূর্তে রোনাল্ড আরোখো আর ডেম্বেলে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছে। তবে নয়জনের দল পেয়েও ব্যবধান কমাতে পারেনি সেভিয়া। বার্সেলোনা ম্যাচ জিতেছে ৪-০ গোলের ব্যবধানে।

ডি ইয়ং থেকে ডেম্বেলে; ডেম্বেলে বলা বাড়ান সেমেদোর দিকে। ডেম্বেলের কাছ থেকে বলের দখল নেন নেলসন সেমেদো। ডি বক্সে ফাঁকায় থাকা সুয়ারেজের দিকে হাওয়ায় ভাসিয়ে বল বাড়ান তিনি। বার্সেলোনার উরুগুইয়ান তারকাও বাইসাইকেল শটে যে গোলটি করলেন তা চোখে লেগে থাকার মতো।

এর আগে অবশ্য বেশ কবার চরম বাঁচা বেঁচে যায় কাতালানরা। শুরুর দিকে বার্সেলোনার নড়বড়ে রক্ষণের সুযোগ নেয় সেভিয়া। তবে বারবার সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন সেভিয়ার ডাচ ফরোয়ার্ড লুক ডি ইয়ং। একাদশ মিনিটে লুক ডি ইয়ংয়ের শট থেকে নিজেদের রক্ষা করেন টের স্টেগেন। এরপর সুবিধাজনক জায়গায় বল পেয়েও জালে জড়াতে পারেননি লুক ডি ইয়ং নিজের ভুলে। ২৬ মিনিটেও ভাগ্য তাঁর বিপক্ষে ছিল। তা না হলে ওকাম্পোসের ক্রসে হেড করলে সেটা মাটিতে ড্রপ খেয়ে ক্রসবারের ওপর দিয়ে কেন যাবে!

দুর্দান্ত এক বাইসাইকেল কিকে গোল করেন সুয়ারেজ। ছবি: এএফপি
দুর্দান্ত এক বাইসাইকেল কিকে গোল করেন সুয়ারেজ। ছবি: এএফপি

এদিকে ২৭ মিনিটে সুয়ারেজের গোলে এগিয়ে সেভিয়াকে পেয়ে বসে বার্সেলোনা। মিনিট চারেক পর অতিথিদের বুকে ফের চুরি চালায় স্প্যানিশ জায়ান্টরা। এবার তাদের নায়ক ভিদাল। আর্থারের দুর্দান্ত শটটি ছিল অনেকটা মুখে তুলে দেওয়ার মতো। ভিদাল শুধু পা ছুঁয়ে দিয়েছেন বলে। ব্যবধান আরও বাড়াতে স্রেফ দুই মিনিট দেরি করেছে ভালভার্দের শিষ্যরা। এবার আর্থারের চমৎকার এক ক্রস নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দারুণ পায়ের কাজ দেখান ডেম্বেলে। সেভিয়ার ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে ডান পায়ের আড়াআড়ি শটে বল জালে জড়ান ফরাসি এই তারকা।

দ্বিতীয়ার্ধে ৫৯ মিনিটে মেসির শট কোনোমতে ঠেকান সেভিয়ার গোলরক্ষক। ৬৭ মিনিটে সেভিয়ার গোলরক্ষককে একা পেয়েও জোড়া গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন ডেম্বেলে। মিনিট দশেক পর সুয়ারেজকে আটকাতে পড়ে গিয়ে বল হাতে লাগান সেভিয়ার খেলোয়াড়। ডি বক্সের বাইরে ফ্রি কিক পায় বার্সেলোনা। সেভিয়ার রক্ষণ দেয়ালের ওপর দিয়ে মেসির নেওয়া ফ্রি কিকের বর্ণনা কোনো উপমাতেই দেওয়া সম্ভব নয়। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হওয়ার ৫ মিনিট আগে মেসির শটটি আটকে না দিলে নিশ্চিত জোড়া গোল পেতেন মেসি। পরের মিনিটেই গোলের সুযোগ পান সুয়ারেজ। তিনিও এবার বল জালে জড়াতে ব্যর্থ। অগত্যা ৪ গোল নিয়েই খুশি থাকতে হয় মেসি-সুয়ারেজদের।     

তবে আজকের ম্যাচে সবচেয়ে হতভাগ্য বলা চলে রোনাল্ড আরোখোকে। নিজের অভিষিক্ত ম্যাচে ১৫ মিনিটও খেলা হয়নি এই উরুগুইয়ান তরুণের। সেভিয়ার হার্নানদেজকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন তরুণ এই ডিফেন্ডার। রেফারির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ডেম্বেলে দেখেন ম্যাচের দ্বিতীয় হলুদ কার্ড। তাঁকেও মাঠ ছাড়তে হয়। তর্কে জড়িয়ে হলুদ কার্ড দেখেন বার্সেলোনার আরেক খেলোয়াড় বুসকেটস। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হওয়ার তিন-চার মিনিট আগে দুই লাল কার্ডের ঘটনায় নয়জনের দলে পরিণত হয় বার্সেলোনা। যদিও বার্সার এই দুর্বলতা কাজে লাগাতে পারেনি সেভিয়া।