বিসিবির কাছে ক্রিকেটারদের ধর্মঘট 'বড় ধাক্কা'

শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে ক্রিকেটারদের মুখপাত্র হয়ে ১১ দফা দাবির কথা জানান সাকিব আল হাসান। ছবি: প্রথম আলো
শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে ক্রিকেটারদের মুখপাত্র হয়ে ১১ দফা দাবির কথা জানান সাকিব আল হাসান। ছবি: প্রথম আলো
>বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেটারদের ধর্মঘটকে বড় ধাক্কা বলেই মনে করছেন বিসিবি মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস। তবে ক্রিকেটারদের দাবিকে গ্রহণযোগ্য মনে করছেন তিনি। কিন্তু দাবিগুলো বোর্ডের কাছে পেশ না করে সংবাদমাধ্যমে আলটিমেটাম দিয়ে ক্রিকেটারদের ধর্মঘটে যাওয়ার সমালোচনা করেছেন জালাল ইউনুস

দেশের ক্রিকেট ঠিকমতো চলছে না—এমন অভিযোগেই কাল সংবাদ সম্মেলনে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। খেলোয়াড়েরা দাবিদাওয়া জানাতে আসছেন ও ধর্মঘট ডাকতে যাচ্ছেন, এ গুঞ্জন দুপুরে ছড়িয়ে পড়লে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কর্মকর্তাদের মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা দেখা গিয়েছিল। ক্রিকেটারদের এই ধর্মঘট যে অনেক বড় ধাক্কা, তা স্বীকার করে নিয়েছেন বোর্ডের মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস। তবে ক্রিকেটারদের দাবিকে গ্রহণযোগ্য মনে করলেও দাবিগুলো বোর্ডের কাছে পেশ না করে সংবাদমাধ্যমে আলটিমেটাম দেওয়ার সমালোচনা করেছেন তিনি।

কাল শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নিজেদের দাবিদাওয়া পেশ করেন সাকিব-তামিম-মুশফিকসহ অন্য ক্রিকেটাররা। ১১ দফা দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ক্রিকেটীয় কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন দেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারেরা। তাঁদের দাবিদাওয়ার মধ্যে বেশির ভাগই পারিশ্রমিক, সম্মান, জাতীয় দলে চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়ের সংখ্যা বাড়ানো ও ঘরোয়া ক্রিকেটের কাঠামো ঠিক করা নিয়ে। ক্রিকেটারদের মুখপাত্র হয়ে দাবিগুলো পেশ করে বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব বলেন, ‘দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কোনো ক্রিকেট কার্যক্রমে অংশ নেবেন না ক্রিকেটাররা।’

ক্রিকেটারদের ধর্মঘটে যাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় প্রথম আলোকে জালাল ইউনুস বলেন, ‘দাবি দেওয়া হলো, আমাদের কাছে সেগুলো পেশ না করে আগেই সংবাদমাধ্যমে আলটিমেটাম দিয়ে দেওয়া হলো। আলটিমেটাম কখন দেয়? যখন আপনি সমঝোতা করতে বসে ব্যর্থ হন, তাহলে না হয় কথা ছিল। বলছি না এটা অগ্রহণযোগ্য। যৌক্তিক। সব দেশেই আছে। খেলোয়াড়দের দাবিদাওয়া থাকতেই পারে। যে দাবিগুলো করেছে অযৌক্তিক নয়। তারা আমাদের কাছে পেশ করত। খেলোয়াড়দের প্রতিনিধি হিসেবে কয়েকজন আমাদের কাছে এসে বলত যে আমরা আলোচনা করতে চাই।’

জালাল ইউনুস মনে করেন, বোর্ড আলোচনা করতে না চাইলে খেলোয়াড়েরা তখন যেতে পারত। বোর্ডকে আলাপ-আলোচনার সুযোগ দেওয়া হয়নি বলেই মনে করছেন তিনি, ‘আলোচনা না করতে চাইলে তখন যেতে পারত। প্রথমেই আলটিমেটাম দিয়ে দিল। তাও আবার এই মুহূর্তে। সুযোগই দেওয়া হলো না আলাপ আলোচনা করতে। এটা আমরা আশা করি না। প্রতিটি খেলোয়াড়ের জন্য বিসিবি সভাপতির দরজা খোলা। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধানকেও যদি বলত, তার কাছেও যদি দিত। বলত যে আমরা আলাপ-আলোচনা করতে চাইনি বলে এই আলটিমেটাম। এ কারণেই আমাদের কাছে এটি বড় ধাক্কা।’

এ ধর্মঘটে ক্রিকেট কিছুটা এলোমেলো হয়ে গেছে বলে মনে করেন মিডিয়া কমিটির প্রধান, ‘যেভাবে তারা বলেছে এতে ক্রিকেট এলোমেলো হয়ে গেছে, যেটি ভালো নয়। সব দাবি নিয়েই তো আলোচনা করে যেত, সমাধান করা যেত। তার মানে রাতের মধ্যে সব দাবি মেনে নিতে হবে। সবার আগে আলাপ আলোচনা করতে পারত।’