বিসিবির আম্পায়াররা চাকরি ছাড়েন শূন্য হাতে

কোনো আর্থিক নিরাপত্তা নেই বিসিবির আম্পায়ারদের। ছবি: ফাইল ছবি
কোনো আর্থিক নিরাপত্তা নেই বিসিবির আম্পায়ারদের। ছবি: ফাইল ছবি

সেলিম শাহেদ বললেন তাঁর এক সময়ের সতীর্থের কথা। আনিসুর রহমান—জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক পেসার। ওই যে, ১৯৯৪ সালের সার্ক ক্রিকেটের বোলিং-সেনসেশন। দুটি ওয়ানডের বেশি গড়ায়নি তাঁর ক্যারিয়ার। একটা সময় ঘরোয়া ক্রিকেটের বড় নাম আনিস খেলা ছাড়ার পর এসেছিলেন আম্পায়ারিংয়ে। আইসিসির প্যানেল আম্পায়ারও হয়েছিলেন। কিন্তু তিনিই এখন আম্পায়ারিংয়ের মায়া ত্যাগ করেছেন। দেশ ছেড়ে ‘উন্নত’ জীবনের খোঁজে পাড়ি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার সেলিম শাহেদ দেশে আম্পায়ারদের অবস্থা বর্ণনা করতে এই একটি উদাহরণই দিলেন।

অনেকেই মনে করেন ক্রিকেটে অনেক টাকা। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের খোলা আকাশে টাকা উড়ে বেড়াচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতাটা বেরিয়ে আসে আনিসুর রহমানদের কথা চিন্তা করলে। আইসিসির প্যানেল আম্পায়ার হয়েও এ পেশা থেকে খুব বেশি উপার্জন নেই তাঁর। সেলিম শাহেদের কথায়, ‘আনিসের মতো সাবেক ক্রিকেটার, আইসিসির প্যানেল আম্পায়ার অথচ, সে যুক্তরাষ্ট্র গেছে একেবারে খালি হাতে। বোর্ড থেকে সে কোনো টাকায় পায়নি। কারণ সে স্থায়ী চাকুরে ছিল না। আনিস একটা উদাহরণ। বাংলাদেশে অন্য আম্পায়ারদের অবস্থা আরও খারাপ। বোর্ডের অবশ্যই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। ক্রিকেটারদের বাইরে যারা খেলার সঙ্গে জড়িয়ে যেমন আম্পায়ার, গ্রাউন্ডসম্যান তাদের সবার অবস্থারই গ্রহণযোগ্য মাত্রায় পরিবর্তন দরকার। নয়তো ক্রিকেট এগোবে না।’

সাবেক ক্রিকেটার হিসেবে সেলিম শাহেদ সাকিবদের আন্দোলনকে সমর্থন করেন। নব্বইয়ের দশকে নিজেরাও বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলন করেছেন। নিজেরাও ক্লাবগুলোর কাছ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন পাওনা টাকা-পয়সার ব্যাপারে। কিন্তু টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার ১৯ বছর পরেও যখন খেলোয়াড়েরা একই ধরনের অপ্রাপ্তির কথা বলেন সেটি হতাশই করে সাবেক এই ক্রিকেটারকে, ‘খেলোয়াড়দের আন্দোলনে অবশ্যই যুক্তি আছে। ক্রিকেট এগিয়ে নিতেই এই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে। হতাশ লাগে যখন দেখি ২০ বছর আগে আমরা যেসব নিয়ে অভিযোগ করেছি, সাকিবরা ২০ বছর পরেও একই অভিযোগ নিয়ে আন্দোলন করছে। তবে আমি মনে করি বিসিবি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান করবে।’