লি টাকের কাছে হেরে বিদায় বসুন্ধরার

দুর্দান্ত খেলেছেন লি টাক। ছবি: প্রথম আলো
দুর্দান্ত খেলেছেন লি টাক। ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ২০১৬ সালে ঢাকা আবাহনীর হয়ে হ্যাটট্রিক করেন লি টাক। ৩ বছর পর আজ একই মাঠে হ্যাটট্রিক পেলেন এই ইংলিশ প্লে মেকার। এবার হ্যাটট্রিক মালয়েশিয়ার সুপার লিগের ক্লাব তেরেঙ্গানু এফসির জার্সিতে। যে হ্যাটট্রিকের মাহাত্ম্যটা অনেক বড়। লি টাকের হ্যাটট্রিকে বাংলাদেশের প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস চূর্ণ। ৪-২ গোলে এই ম্যাচ জিতে শেখ কামাল ক্লাব কাপের সেমিফাইনালে উঠে গেছে তেরেঙ্গানু। আগামী পরশু ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে তাদের প্রতিপক্ষ কলকাতা মোহনবাগান। একই দিনে অন্য সেমিফাইনালে চট্টগ্রাম আবাহনীর সামনে দাঁড়াবে ভারতের আই লিগের দল গোকুলাম কেরালা।

সেমিফাইনালে উঠতে আজ জয়ের বিকল্প ছিল না বসুন্ধরার সামনে। সেই জয়ের খোঁজে ২৭ মিনিটে বিশ্বনাথের ক্রস থেকে দারুণ এক হেডে বসুন্ধরাকে এগিয়ে দেন দানিয়ের কলিনদ্রেস। কিন্তু এরপর ৪৩ ও ৪৫ মিনিটে গ্যালারি বিষাদে ভরিয়ে তোলে তেরেঙ্গানু। এই ম্যাচ হারলে তাদেরও আর সেমিতে যাওয়া হতো না। তাই তেড়েফুঁড়ে এত দ্রুত তারা উঠে আসে যে, খেই খারিয়ে বসুন্ধরার রক্ষণ তিন মিনিটের মধ্যে দিয়ে বসে দু’দুটি পেনাল্টি।

প্রথমে স্টপার ইয়াছিন অহেতুক এক ফাউল করেন। দুই মিনিট পরই ছোট ডিয়ের ভেতরে পোস্টের দিকে যাওয়া মোহাম্মদ শাইফিককে ফেলে দেন বখতিয়ার। নেপালের রেফারি সুদেশ কুমার দুবারই দ্রুত পেনাল্টির বাঁশি দেন। পেনাল্টিতে দুবারই বসুন্ধরার গোলরক্ষক আনিসুর রহমানকে তাঁর বাঁ দিকে সহজে পরাস্ত করেন লি টাক। ৭৫ মিনিটে সেই লি প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে অসাধারণ কোনাকুনি এক শটে করলেন ৩-১। হ্যাটট্রিক! কারও কারও চোখে এটি এই ক্লাব কাপের সেরা গোল।

শেষ দিকে লেবানিজ স্ট্রাইকার জালাল কদোর গোল স্কোরলাইনে ব্যবধান কমিয়েছে মাত্র। তার আগে আজালিনুল্লাহ ৭৮ মিনিটে ৪-১ করলে ম্যাচ পুরোপুরি চলে যায় তেরেঙ্গানুর হাতে। বাকি সময়ে বসুন্ধরার শুধু বিদায়ের প্রহর গুনছিল। বসুন্ধরার বিদায়ে এই ক্লাব কাপে বাংলাদেশের দল রইল আর একটি, স্বাগতিক চট্টগ্রাম আবাহনী।

হ্যাটট্রিকের আনন্দ, দল উঠেছে চট্টগ্রামের এই ক্লাব কাপের শেষ চারে। লিগ টাক কতটা খুশি বোঝা গেল তাঁর কথায়, ‘এটি আমার জন্য দারুণ এক রাত। এই রাত আমি কখনো ভুলব না। বাংলাদেশে খেলতে আমার ভালো লাগে। এবার এসেও খুব উপভোগ করছি।’

কিন্তু উপভোগ করতে পারেননি বসুন্ধরার স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোন। যিনি আগের ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় মহাগুরুত্বপূর্ণ এই লড়াইয়ে ছিলেন গ্যালারিতে। সহকারী কোচ মাহবুব হোসেন (রক্সী) যতই নির্দেশনা দিন, কাজ হয়নি তাতে। তেরেঙ্গানুর দৃঢ় রক্ষণ দৃঢ় ছিল। আর মাঝমাঠে লি টাকের মতো প্লে মেকার দারুণ সব রক্ষণ চেরা থ্রু দেন। বসুন্ধরার ডিফেন্ডাররাও ভালো খেলেননি। বিশ্বনাথ ছিলেন অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক। সময় মতো নামতে পারেনি।

ম্যাচ শেষে হতাশ আজকের কোচ মাহবুব হোসেনের কথায় ঝরে পড়ল কিছুটা ক্ষোভ, ‘প্রথম পেনাল্টি নিয়ে আমার আপত্তি আছে। রেফারি দূরে থাকায় দেখেননি। ইয়াছিন প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের পায়ে মারেনি।’ এরপর যোগ করেন, ‘আমরা সেমিতে উঠতে না পারলেও এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। ঘরোয়া মৌসুম আর এএফসি কাপের জন্য আমরা একটা ধারণা পেলাম। আজ সময় মতো গোল পেয়েছি। কিন্তু পরপর দুটি পেনাল্টি আমাদের পেছনে ঠেলে দেয়।’