জোড়া পেনাল্টি ঠেকিয়েও জেতানো গেল না দলকে

পেনাল্টি ঠেকিয়ে সতীর্থদের বাহবা কুড়াচ্ছেন ক্রুল। ছবি : এএফপি
পেনাল্টি ঠেকিয়ে সতীর্থদের বাহবা কুড়াচ্ছেন ক্রুল। ছবি : এএফপি
>ম্যাচে দুই-দুইটা পেনাল্টি সেভ করলেন ডাচ গোলরক্ষক টিম ক্রুল। তাতে লাভ হলো কোথায়? ঠিকই ম্যাচ হেরে গোমড়ামুখে বাড়ি ফিরতে হলো!

‘পেনাল্টি ঠেকানোর বিশেষজ্ঞ’ হিসেবে ডাচ গোলরক্ষক টিম ক্রুলের নামডাক আজকের নয়।

২০১৪ বিশ্বকাপের কথা মনে আছে? কোয়ার্টার ফাইনালে টুর্নামেন্টের চমক কোস্টারিকার মুখোমুখি নেদারল্যান্ডস। সেবার তাদের মূল গোলরক্ষক আয়াক্সে খেলা ইয়াসপার চিলেসেন। পরবর্তী সময়ের এই চিলেসেন বার্সেলোনায় খেলেছেন। তো, সেই কোয়ার্টারের লড়াইয়ে মূল সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর দুই দলের কেউই গোল করতে পারল না। অতিরিক্ত সময় চলার সময়েই ডাচ কোচ লুই ফন গাল বুঝতে পেরেছিলেন, পেনাল্টি শুটআউটে গড়াবে ম্যাচটা। সে সময় বিচিত্র এক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। মূল গোলরক্ষককে বদলে মাঠে নামালেন দুই নম্বর গোলরক্ষক টিম ক্রুলকে।

সাধারণত ফুটবলে গুরুতর চোটে না পড়লে কিংবা পারফরম্যান্স ও লালকার্ড-সংক্রান্ত কোনো ব্যাপার না ঘটলে গোলরক্ষক পরিবর্তন করা হয় না। সেদিন কোনো চোটেও পড়েননি চিলেসেন। খেলেছিলেনও দুর্দান্ত। তাহলে? এমন কি হয়েছিলেন যে চিলেসেনের জায়গায় ক্রুলকে নামতে হলো?

উত্তর পাওয়া গেল কিছুক্ষণ পর। পেনাল্টি শুটআউটে কোস্টারিকার দুটি শট আটকে নায়ক বনে গেলেন ক্রুল। ওদিকে নিজেদের পাঁচ শটে গোল করে সেমিফাইনালে উঠে গেল ডাচরা। ম্যাচ শেষে লুই ফন গাল সবাইকে সেটাই বললেন, যেটা একটু আগে সবাই প্রত্যক্ষ করেছে। চিলেসেনের চেয়ে ক্রুল পেনাল্টি আটকানোয় বেশি পারদর্শী। ওই ম্যাচের আগে চিলেসেনের একটিও পেনাল্টি ঠেকানোর রেকর্ড ছিল না। তাই ফন গাল যখন দেখলেন, ম্যাচ আস্তে আস্তে পেনাল্টি শুট আউটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, পেনাল্টি ঠেকানোর ক্ষেত্রে দলের সবচেয়ে কুশলী গোলরক্ষককে মাঠে নামানোর লোভটা সামলাতে পারেননি তিনি। আর সে সিদ্ধান্তের ফল তো সবাই দেখলেন।

গত কাল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে নিজের পেনাল্টি ঠেকানোর ক্ষমতার কথা আবার মনে করিয়ে দিলেন ক্রুল। নিউক্যাসল ইউনাইটেড থেকে আয়াক্স, এজেড আলকমার, ব্রাইটন ঘুরে এখন নরউইচ সিটির গোলবার সামলান তিনি। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে গতকাল নিজেদের মাঠে আতিথ্য দিয়েছিল নরউইচ। ওয়েলশ উইঙ্গার ড্যানিয়েল জেমসের কল্যাণে প্রথমে পেনাল্টি পায় ইউনাইটেড। মার্কাস রাশফোর্ডের মাটিঘেঁষা দুর্বল শট আটকে দেন ক্রুল। তাঁর কিছুক্ষণ পর সেই জেমসের ক্রস থেকেই গোল করে ‘পাপমোচন’ করেন রাশফোর্ড। কিছুক্ষণ পর ডি-বক্সে হ্যান্ডবল হওয়ার কারণে আবারও পেনাল্টি পায় ইউনাইটেড। প্রথম শটে রাশফোর্ড গোল করতে ব্যর্থ হয়েছেন দেখেই কি না, এবার পেনাল্টি নেওয়ার দায়িত্ব পড়ল সদ্য চোট থেকে দলে ফেরা স্ট্রাইকার অ্যান্থনি মার্সিয়ালের কাঁধে। তিনি শটটা মারলেন বামদিকে। লাভ হলো না। আবারও ক্রুলের দুর্দান্ত ক্ষিপ্রতার প্রদর্শনী। একই ম্যাচে দুই-দুইটা পেনাল্টি সেভ করলেন ক্রুল!

পরে যদিও এই কৃতিত্বের ফসল ঘরে ওঠাতে পারেননি ক্রুলরা। ৩-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইউনাইটেড। পরে মার্সিয়ালও একটা গোল করেছেন।

প্রিমিয়ার লিগের অষ্টম গোলরক্ষক হিসেবে একই ম্যাচে দুটি পেনাল্টি সেভ করার কৃতিত্ব দেখালেন ক্রুল। সর্বশেষ এই কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন আরেক ডাচ গোলরক্ষক, মার্টেন স্টেকেলেনবার্গ। ২০১৬ সালে ম্যানচেস্টার সিটির দুটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন এভারটনের এই গোলরক্ষক।