লি-ই চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় বাধা, বড় 'শত্রু'ও

আজ মুখোমুখি আবাহনী লিমিটেড ও তেরেঙ্গানু এফসি। ছবি: প্রথম আলো
আজ মুখোমুখি আবাহনী লিমিটেড ও তেরেঙ্গানু এফসি। ছবি: প্রথম আলো
আজ শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপের ফাইনালে চট্রগ্রাম আবাহনীর মুখোমুখি হবে মালয়েশিয়ার তেরেঙ্গানু এফসি। ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৬ টায়


শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ট্রফি জয়ের স্বপ্নে বিভোর স্বাগতিক চট্রগ্রাম আবাহনী। কিন্তু সন্ধ্যা ৬টায় শুরু ফাইনালের মহারণ সহজ হবে না চট্টগ্রামের ক্লাবটির জন্য। স্বাগতিক দলের সামনে যে মালয়েশিয়ার তেরেঙ্গানু এফসি। দলটি তাদের দেশে সুপার লিগের সপ্তম হলেও একটি জায়গায় ইতিহাস গড়ে ফেলেছে। ক্লাবের ৬৩ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক আসরে এসেই উঠে গেছে ফাইনালে।

শক্তি বিচারে ফাইনালে কিছুটা এগিয়ে অতিথি দলটি। কিন্তু কাল এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে দুই কোচই চট্টগ্রাম আবাহনীকে দিলেন ফেবারিটের তকমা। ফাইনালের আগে চট্টগ্রাম আবাহনী বিশ্রাম পেয়েছে দুই দিন, তেরেঙ্গানু এক দিন। দশ দিনে পাঁচটি ম্যাচ খেলতে হচ্ছে, এক দিন বেশি বিশ্রাম অবশ্যই বাড়তি সুবিধা। যদিও চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচ মারফুল হক হেসে বলেছেন, ‘ওরা সেমিফাইনাল খেলেছে ৯০ মিনিট, আমরা ১২০। কাজেই এক দিক থেকে বিশ্রামের সময়টা সমানই।’

একটি জায়গায় স্পষ্ট এগিয়ে তেরেঙ্গানু—লি টাকের মতো ম্যাচের মোড় ঘোরানো ফুটবলার দলটির প্রাণ। দ্রুতগতির ফুটবল হয়তো খেলে না তেরেঙ্গানু, কিন্তু দলটির ফুটবলারদের ব্যক্তিগত নৈপুণ্য দারুণ। ২০ জন ফুটবলার নিয়ে আসা দলটিতে ব্রুনো জুনিচির মতো ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত ফরোয়ার্ড আছেন, যিনি প্রথম ম্যাচেই পেয়েছেন চার-চারটি গোল। তবে অধিনায়ক ও ঢাকা আবাহনীতে খেলে যাওয়া ইংলিশ প্লেমেকার লি টাক একাই এক শ। লি-ই আজ চট্টগ্রামের সামনে সবচেয়ে বড় বাধা, বড় শত্রুও।

তেলেঙ্গানুর কোচ মোহাম্মদ নাফুজি অবশ্য সেটি মানেন না। এ বছর মূল কোচ পদত্যাগ করায় সহকারী থেকে প্রধান কোচের দায়িত্ব পাওয়া নাফুজি বলছেন, ‘লি খুবই ভালো ফুটবলার ঠিক আছে। কিন্তু আমরা শুধু ওর ওপর নির্ভর করি না।’ ফাইনাল নিয়ে আশাবাদী কোচ তাই বলত পারেন, ‘ফাইনাল জিতে চ্যাম্পিয়ন হতে চাই, তাহলে গর্ব করতে পারব।’ তবে তিনি বলতে ভোলেননি, ‘এখানে প্রতিপক্ষ স্বাগতিক। তারা দারুণ দল। এ কারণে সহজ হবে না ম্যাচটা। আমার টিম আন্ডারডগ। হোম টিমই ফেবারিট।’

জয় পেতে তেরেঙ্গানুর মূল খেলোয়াড়দের আটকাতে হবে, এটা জানে চট্টগ্রাম আবাহনী। একই সঙ্গে নিজেদের মূল খেলোয়াড় স্ট্রাইকার লুকা, চিনেদু, মিডফিল্ডার দিদিয়ের, মানিক, জামালদেরও মাঠে দিতে হবে সেরাটা। মারুফ বলছেন, ‘লি টাক আর সুজুকি জুনিচির সমন্বয়টা ভাঙতেই হবে আমাদের।’ লির ফ্রি-কিক চট্টগ্রাম আবাহনীর জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে। সেমিতে মোহনবাগানের জালে লি-র প্রথম গোলটা দেয়ালের ফাঁক গলে ফ্রি-কিকে, তবে দ্বিতীয় গোলটি বিশ্বমানের। তাঁকে সামলানো সহজ নয় জানেন মারুফুল, ‘মেসির ফ্রি-কিক শত টেকনোলজি ব্যবহার করেও ফেরাতে পারছে না। একইভাবে লি যদি অসাধারণ কিছু করে ফেলে, তাহলে সেটা আটকানো সত্যিই কঠিন।’

দুই দলের মূল পার্থক্য—তেরেঙ্গানুর মাঝমাঠ ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করে। তারপরও ওপর ওঠে। চট্টগ্রাম আবাহনী নিজেদের অঞ্চল থেকে ছোট ছোট পাসে খেলাটা গড়ে এবং প্রতিপক্ষের সীমানায় এসে দ্রুত আক্রমণ করে। চট্টগ্রাম আবাহনীর আক্রমণভাগ ভালো। মাঝমাঠেও ভালো বিদেশি আছেন, যাঁরা গতিটা ধরে রাখতে পারেন। এসবই ফাইনাল জয়ের রসদ চট্টগ্রাম আবাহনীর।

শুরু থেকেই এই টুর্নামেন্টের শিরোপা পুনরুদ্ধারের কথা বলে এসেছেন মারুফুল হক। কথা রাখতে পারলে গোটা আয়োজনটাই সার্থক হয়!