সাকিবকে নিয়ে ভনের সঙ্গে 'যুদ্ধ' ক্রিকেটপ্রেমীদের

সাকিব আল হাসান। ছবি: প্রথম আলো
সাকিব আল হাসান। ছবি: প্রথম আলো
সাকিব আল হাসানের শাস্তি কম হয়েছে বলে মনে করেন মাইকেল ভন। ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক এ নিয়ে টুইট করার পর শুরু হয়েছে এক অন্য রকম যুদ্ধ


সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তোলপাড় চলছে ক্রিকেট বিশ্বে। শাস্তির পক্ষে-বিপক্ষে মতামত দিচ্ছেন সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটাররা। মাইকেল ভন শুরু থেকেই সাকিবের শাস্তি পাওয়ার পক্ষে। শুধু তা–ই নয়, সাকিবের শাস্তি কম হয়েছে বলেও মনে করেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক। ভন এ নিয়ে টুইট করার পর থেকেই শুরু হয়েছে এক অন্য রকম যুদ্ধ। টুইটার ব্যবহারকারী অনেক ক্রিকেটপ্রেমীই তোপ দাগছেন ভনকে। এদিকে ভনও দমে যাওয়ার পাত্র নন। জবাব দিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনিও।

জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করে দুই বছর নিষিদ্ধ হয়েছেন সাকিব। এর মধ্যে এক বছর স্থগিত নিষেধাজ্ঞা। এ নিয়ে ভনের প্রথম টুইটটি ছিল, ‘সাকিব আল হাসান যে শাস্তিই পাক না কেন, কোনো সমবেদনা নেই। এ যুগে খেলোয়াড়েরা কী করতে পারবে আর কী পারবে না, তা সব সময়ই বলা হয়। এবং তাদের কী কী জানাতে হবে, সেটাও বলা হয়। দুই বছর পর্যাপ্ত না। আরও বড় শাস্তি হওয়া উচিত ছিল।’ ব্যস, আর যায় কোথায়! ভনের সে টুইটে হামলে পড়া বেশির ভাগই বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমী। সাবেক ইংল্যান্ডে ওপেনারের সমালোচনায় মুখর হন তাঁরা।

সাকিব ইস্যুতে ক্রিকেটপ্রেমীদের জবাব দিয়ে এমন বেশ কয়েকটি টুইট করেছেন ভন। ছবি: টুইটার
সাকিব ইস্যুতে ক্রিকেটপ্রেমীদের জবাব দিয়ে এমন বেশ কয়েকটি টুইট করেছেন ভন। ছবি: টুইটার

সেখানেই এক টুইটার ব্যবহারকারী ভন ও সাকিবের ক্যারিয়ারের তুলনামূলক তথ্য-উপাত্ত পেশ করে মন্তব্য করেন, ‘আগে (সাকিবের) সমপর্যায়ে এসো।’ ভন তাঁর জবাবে লেখেন, ‘আমি গড়পড়তা ছিলাম তা মেনে নিচ্ছি...কিন্তু দুর্নীতিগ্রস্ত ছিলাম না।’ সমালোচনাকারীদের তাক করে বেশ কয়েকটি টুইট করেন ভন। একটি টুইটে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে লিখেছেন, ‘যারা গালাগালি করছেন, তাঁদের প্রতি বলছি, দুর্নীতি নিয়ে আমার সহ্যক্ষমতা শূন্য। কোন দলে খেলছেন, সেটি কোনো বিষয় না। এখন ক্রিকেটাররা জানে কোন কাজটি করা যাবে, কোন কাজটি করা যাবে না। তারা আরও জানে, তেমন কিছু হলেই জানাতে হবে। সেটি না করার পরিণতিও তারা জানে।’

ভনের এ টুইটে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘গার্ডিয়ান’-এ গত বছরের অক্টোবরে প্রকাশিত একটি সংবাদের লিংক দিয়ে এক টুইটার ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন, ‘এ নিয়ে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’ গার্ডিয়ানের সেই খবরের শিরোনাম ‘স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত ক্রিকেটারদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় ইংলিশ খেলোয়াড়েরা।’ সাকিব দুর্নীতিগ্রস্ত নয়, সে একটি ভুল করেছে, অপরাধ করেনি...ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড নিয়ে কথা উঠলেই পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেন—ভনের প্রতি আরেক টুইটার ব্যবহারকারী এ মন্তব্য করার পর তিনি জবাব দেন, ‘গোটা বিশ্বকে দুর্নীতিগ্রস্ত ভেবে নেওয়া মনের ভুল।’

ভনের আরেকটি টুইট। ছবি: টুইটার
ভনের আরেকটি টুইট। ছবি: টুইটার

ঘটনার এখানেই শেষ নয়। ভনের উদ্দেশে এক টুইটার ব্যবহারকারী লেখেন, ‘আইসিসিকে না জানানোটা দুর্নীতি নয়, ভুল। এ দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে না পারলে আবার স্কুলে যাওয়া শুরু করুন।’ ভন এ টুইটেরও জবাব দিয়েছেন, ‘বাচ্চাদের রাখতে আমি প্রতিদিনই স্কুলে যাই। এখন সব খেলোয়াড়ই নিয়ম জানে। প্রস্তাব পেলে জানিয়ে দাও। সে তা করেনি। সে দুর্নীতিগ্রস্ত।’

বোঝাই যাচ্ছে, ভনের সঙ্গে ক্রিকেটপ্রেমীদের বিরোধের জল আরও অনেক দূর গড়াবে।