বিসিবিকে ঘাবড়াতে না করছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড

অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে কাল অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দল। ছবি: এএফপি
অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে কাল অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দল। ছবি: এএফপি

ঢাকা-দিল্লির উড়ানে উঠতেই কাল বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরীকে এক সাংবাদিক রসিকতা করে জানতে চাইলেন, ‘মাস্ক এনেছেন সঙ্গে?’ নিজামউদ্দীন উত্তরটাও দিলেন একই সুরে, ‘কেন, দিল্লিতে মাস্ক পাওয়া যায় না?’

দিল্লির বাতাস এ মুহূর্তে যে স্বাভাবিক অবস্থায় নেই, সেটি জানাই। কিন্তু বারবার প্রশ্ন উঠছে এই তীব্র বায়ুদূষণের মধ্যেই কেন আয়োজন করা হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত টি-টোয়েন্টি ম্যাচ? কাল বিকেলে বিমান বাংলাদেশের ঢাকা-দিল্লির ফ্লাইটে আড্ডাচ্ছলে বিষয়টির অনানুষ্ঠানিক ‌‘ব্রিফ’ করলেন নিজামউদ্দীন। তীব্র বায়ুদূষণের মধ্যে কেন ম্যাচটা হয়ে যাবে, বিসিবির প্রধান নির্বাহী সেটি সবিস্তারে ব্যাখ্যা দিলেন, ‘আমরা বিসিসিআইয়ের (ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড) সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছে আমরা যেন ঘাবড়ে না যাই। বায়ু দূষণ নিয়ে তারাও চিন্তিত। কিন্তু এ মুহূর্তে আসলে ম্যাচ সরিয়ে নেওয়া বা অন্য কিছু করা তাদের জন্য ভীষণ কঠিন। ওদের কিছু বাধ্যবাধকতা আছে।’

বাধ্যবাধকতা হচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে ম্যাচ আয়োজনের ক্ষেত্রে মানতে হয় ‘রোটেশন পলিসি’। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে এক মৌসুমে প্রত্যেক আঞ্চলিক সংস্থাকে নির্দিষ্ট সংখ্যক ম্যাচ বরাদ্দ দিতে হয়। বাংলাদেশের মতো এক ভেন্যুতে ঘন ঘন ম্যাচ আয়োজনের সুযোগ থাকে না বিসিসিআইয়ের। দিল্লি ক্রিকেট সংস্থা যেমন দুই বছর পর তাদের মাঠে একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ আয়োজনের সুযোগ পেল। এ সুযোগ কি তারা হাতছাড়া করতে চাইবে? আর হুট করে ম্যাচ বরাদ্দ কাটছাঁট করার উপায় নেই বিসিসিআইয়ের। বিসিবির প্রধান নির্বাহী আশাবাদী, ম্যাচটা সফল আয়োজনে বায়ুদূষণ বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে না, ‘দুই দলের ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য। ভারত যে এ মাঠে অনেক বেশি ম্যাচ খেলে, তাও নয়। সমস্যা হলে দুই দলের হবে। মাত্র তিন ঘণ্টার ম্যাচ তো, আশা করি খুব বেশি সমস্যা হবে না।’

>

দিল্লির তীব্র বায়ু দূষণের মধ্যেই আজ সন্ধ্যায় ভারতের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে নামছে বাংলাদেশ। বিসিসিআই অবশ্য দূষণ নিয়ে ঘাবড়াতে না করেছে বিসিবিকে

কাল শুধু বিসিবির প্রধান নির্বাহীই নন, একই ফ্লাইটে দিল্লিতে এসেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানও। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বোর্ডের ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান, দুই নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন ও হাবিবুল বাশার। ছিলেন ধারাভাষ্যকার আতহার আলী খানও।

নাজমুলের অবশ্য দিল্লির ম্যাচ দেখার কোনো পরিকল্পনাই ছিল না। পরশু শুক্রবার হঠাৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডেকে তাঁকে বলেছেন, সিরিজের প্রথম ম্যাচ মাঠে থেকে দেখতে। নাজমুল নিজেও শঙ্কায় আছেন দিল্লির বায়ুদূষণ নিয়ে, ‘খেলোয়াড়রা বলল, ওদের নাক-টাক নাকি জ্বলছে! এ ধরনের দূষণে আমার নিজেরও সমস্যা হয়। কী আর করা! ওদের (বিসিসিআই) বোধ হয় উপায় নেই। ভাবছি খুব একটা বাইরে বের হব না!’

নাজমুলের বের না হলেও চলছে। কিন্তু খেলোয়াড়দের খোলা আকাশের নিচেই লড়তে হবে। আজ অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশকে বায়ু দূষণের চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ জানাবে ভারতীয় দল। সাকিব আল হাসান-তামিম ইকবালের মতো বড় দুই তারকাকে ছাড়া খেলতে নামা বাংলাদেশ নামতে পারে তিন পেসার নিয়ে। মোস্তাফিজুর রহমান-শফিউল ইসলামের সঙ্গে থাকতে পারেন তিন বছর পর দলে ফেরা আল আমিন হোসেন। লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলামকে একাদশে রাখাটাই স্বাভাবিক। যেহেতু এ সিরিজেও তামিম নেই, টপ অর্ডারে সৌম্য সরকার-লিটন দাসের সঙ্গে চমক হয়ে আসতে পারেন আন্তর্জাতিক অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা মোহাম্মদ নাঈম শেখ।