পরীক্ষিত সৈনিকেই ভরসা মাহমুদউল্লাহর

রাজকোটে সৌম্যর মতো ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে ভালো কিছু চান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ছবি: প্রথম আলো
রাজকোটে সৌম্যর মতো ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে ভালো কিছু চান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ছবি: প্রথম আলো
>আগামীকাল রাজকোটে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারত। প্রথম ম্যাচে জিতে বেশ ফুরফুরে অবস্থায় আছে পুরো দল। সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়েই আগামীকাল মাঠে নামবে বাংলাদেশ, এমনই আশাবাদ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর।

ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিতে এক অভাবনীয় অর্জনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ। সিরিজের বাকি দুই ম্যাচের মধ্যে আর এক ম্যাচ জিতলেই ঐতিহাসিক সিরিজ জয় হয়ে যাবে বাংলাদেশের। সম্ভাব্য সিরিজ জয়কে সামনে রেখে কি পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ?

সংবাদ সম্মেলনে সেটিই জানতে চাওয়া হলো অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর কাছ থেকে। অধিনায়ক ইতিবাচক ক্রিকেট খেলার দিকেই জোর দিলেন, ‘অবশ্যই এটা (সিরিজ জয়) খুব বড় সুযোগ। বিশেষ করে যখন আপনি যখন প্রথম ম্যাচে জিতবেন। ছেলেরা খুব উদ্যমী আছে। আশা করি আমরা ভালো খেলব আগামীকাল। গত কিছুদিন বাংলাদেশের ক্রিকেটে যা হয়েছে, তারপর সিরিজ জিতলে বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য দারুণ হবে। আগামীকাল ভারতকে হারাতে হলে আমাদের ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। তারা নিজেদের মাটিতে এবং সারা বিশ্বেই ভালো দল। প্রথম বল থেকেই আমাদের ভালো খেলতে হবে। ফোকাসের জায়গাগুলো হচ্ছে আমাদের মানসিকতা, আমাদের কীভাবে ম্যাচটা খেলতে পারছি সেটা, ইতিবাচকতা এবং মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা যা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সময়ে আমরা যেন সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারি এবং সেভাবে যেন তৈরি থাকি।’

এমনিতেই দেশের ক্রিকেটে টালমাটাল অবস্থা। এর মধ্যে প্রতিকূল পরিবেশে দিল্লির দূষিত বায়ুর সঙ্গে লড়াই করে বিশ্বের অন্যতম সেরা দলকে হারানো অভিজ্ঞতাটা কেমন ছিল? মাহমুদউল্লাহ জানিয়েছেন সেটা, ‘ভারতের বিপক্ষে শুরু থেকে আমাদের ওপর চাপ ছিল। প্রথম ম্যাচের আগে আমরা বলেছিলাম আমাদের হারানোর কিছু নেই। আগামীকাল আমাদের আরেকটি সুযোগ আছে বাংলাদেশের হয়ে আরেকটি ম্যাচ জেতার।’

সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে কেমন একাদশ নিয়ে খেলবে বাংলাদেশ? মাহমুদউল্লাহ আভাস দিলেন প্রথম ম্যাচ জয়ের পরীক্ষিত সৈনিকদের ওপর ভরসা রাখার, 'এই মুহূর্ত পর্যন্ত না (প্রথম ম্যাচের একাদশে পরিবর্তন আনার ইচ্ছে নেই)। কালকে বিকেল পর্যন্ত আমরা যদি দেখি উইকেট শুষ্ক তাহলে একাদশে পরিবর্তন হলেও হতে পারে। এই মুহূর্তে আমরা উইনিং কম্বিনেশনে থাকার চেষ্টা করব। আমরা এখনো এটা নিয়ে চিন্তা করছি। আমরা যখন মাঠে যাব, উইকেট দেখব। তখন বলতে পারব কোন কম্বিনেশন ভালো হবে আগামীকালের খেলার জন্য।'

প্রথম ম্যাচ হেরেছে বলে ভারত যে দ্বিতীয় ম্যাচে আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে মাঠে নামবে, সে কথা বেশ জানেন মাহমুদউল্লাহ। প্রতিপক্ষকে তাই একদমই খাটো করে দেখছেন না তিনি, ‘তাদের বোলিং আক্রমণ খুবই ভার্সেটাইল। তাদের বোলিং আক্রমণ খুব ভালো। তাদের ভালো কিছু স্পিনারের সঙ্গে ভালো ফাস্ট বোলার আছে। তারা টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টেও ভালো খেলে। আমরা প্রথম বল থেকে যদি ভালো খেলি এবং মোমেন্টামটা ধরে রাখতে পারি তাহলে এগিয়ে যেতে পারব খেলায়। তাঁরা দুই দিক থেকেই চাপে থাকবে। তাঁরা ভালো ভাবে পরিকল্পনা কাজে লাগাতে চাইবে।’

সিরিজ জয়ের জন্য প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও ঝলসে উঠতে হবে তরুণদের, এটা মানছেন মাহমুদ উল্লাহ, ‘শুরু থেকেই আমি অ্যাপ্রোচের কথা বলছি। এটা সব সময় শীর্ষে থাকতে হবে, আমরা হারি বা জিতি এটা কোনো ব্যাপার না। এটা ঠিকঠাক ভাবে থাকতে হবে। তাহলেই আমাদের জেতার সুযোগ থাকবে। আপনি আফিফ-নাঈম-বিপ্লবদের কথা বলেছেন। তাঁরা খুব তরুণ ভালো ক্রিকেটার। তাঁরা প্রমাণ করেছে তাদের সামর্থ্য আছে ভালো করার। তাঁরা এই জায়গা ডিজার্ভ করে। তাঁরা যেভাবে শুরু করেছে এটা ধরে রাখতে পারবে বলে আশাবাদী আমি। আমরা তরুণদের সুযোগ দিচ্ছি, যেন তাঁরা নিজেদের প্রমাণ করতে পারে। আমি যে তিনজনের কথা বললাম তাঁরা নিজেদের প্রমাণ করেছে। যারা পাইপলাইন থেকে এসেছে আমরা সবাই মিলে ভালো ক্রিকেট খেলব আগামীকাল।'

ব্যাটিং ও বোলিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিংয়েও বাড়টি গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ, ‘আমাদের সব সময় এমন ড্রিল করানো হয়ে থাকে, কারণ ফিল্ডিংয়ে আমরা গুরুত্ব বেশি দিচ্ছি। আমাদের ফিল্ডিং কোচ রায়ান চেষ্টা করে যাচ্ছে যে আমরা যেন সেরা প্রচেষ্টাটুকু ফিল্ডিংয়ে দিতে পারি সব সময়। আমরা যেন ভালো ফিল্ডিং সাইড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারি। এ জন্যই কষ্টটা করা।’