পিএসএলেও কোচ মিসবাহ, স্বার্থসংঘাত?

পাকিস্তানের কোচ ও প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করছেন মিসবাহ। ছবি : এএফপি
পাকিস্তানের কোচ ও প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করছেন মিসবাহ। ছবি : এএফপি

‘সবাইকে সম্ভাষণ। আমি ডিন জোন্স। আপনাদের একটা খবর জানানোর জন্য এসেছি। ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করার পরে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, পিএসএলের আগামী মৌসুম থেকে নতুন কোচ নিয়োগ দেওয়া হবে। একটু হতাশ আমি, বিশেষ করে যেখানে গত চার মৌসুমে দুবার ফ্র্যাঞ্চাইজিটিকে শিরোপা জিতিয়েছি...’

এভাবেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের ছাঁটাইয়ের খবর জানিয়েছেন হতাশ ডিন জোন্স। কিন্তু তাতে ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের কী? তারা ডিন জোন্সের জায়গায় এমন একজনকে পাচ্ছে, যিনি বর্তমানে পাকিস্তান ক্রিকেটেরই হর্তাকর্তা। পাকিস্তান জাতীয় দলের কোচ ও প্রধান নির্বাচক মিসবাহ উল হকের অধীনে এই মৌসুমে খেলবে ইসলামাবাদ। এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না আসলেও ব্যাপারটা মোটামুটি ‘ওপেন সিক্রেট’। আর এই কারণেই পত্রপাঠ বিদায় জানান হলো জোন্সকে।

জাতীয় দলের কোচ ও প্রধান নির্বাচক আবার ‘পিএসএল’এরও দায়িত্ব নেবেন? ব্যাপারটা ভালোভাবে নেয়নি পিএসএলের পাঁচ ফ্র্যাঞ্চাইজি। প্রবল আপত্তি জানিয়েছিল তারা। কিন্তু তাতে পিসিবির থোড়াই কেয়ার! পিসিবিতে দ্বৈত ভূমিকায় থাকার পরেও তাই আরও দায়িত্বে ব্যস্ত থাকতে হবে তাকে। ফলে জাতীয় দলেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। কিছুদিন আগে পিএসএলের খেলোয়াড় ড্রাফটের ব্যাপারে আলোচনায় বসেছিল সব দল। সেখানেই চারটি দল নির্দিষ্ট করে বলে দিয়েছিল, মিসবাহর অংশ গ্রহণ নিয়ে চিন্তিত তারা। অবশ্য পাকিস্তানের আগের কোচ মিকি আর্থারও পিএসএলে জড়িত ছিলেন। নিজেদের উদ্বেগের কথা জানাতে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো সে প্রসঙ্গ তুলে এনেছে। সূত্র জানিয়েছে, ‘এক ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক বলেছেন পিসিবির চেয়ারম্যান এহসান মানিও সাবেক কোচ মিকি আর্থার ও বোলিং কোচ আজহার মেহমুদকে ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের সঙ্গে জড়িত হওয়া আটকাতে পারেননি। কারণ আগের চেয়ারম্যানের কাছে অনুমতি নেওয়া ছিল তাদের।’

>

পাকিস্তানের প্রধান কোচ ও প্রধান নির্বাচক হিসেবে দায়িত্ব পালন তো করছেনই, এখন জানা গেল, পিএসএল এর একটা ফ্র্যাঞ্চাইজির কোচ হিসেবেও দেখা যাবে মিসবাহ উল হককে। ফলে স্বার্থ সংঘাতের প্রশ্ন উঠেছে পাকিস্তানের ক্রিকেট মহলে।

ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর জন্য চিন্তার বিষয় হলো, পিসিবি ও মিসবাহর মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে সেটা অনুযায়ী সাবেক অধিনায়ক চাইলেই এই লিগের যেকোনো দলের সঙ্গে জড়িত হতে পারবেন। সেটাই কাল হয়েছে।

মিসবাহ ইসলামাবাদের কোচ হওয়ার কারণে পিসিবি এখন অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি গুলির কাছ থেকে বেশ চাপের মুখোমুখি হচ্ছে। কিন্তু চাপমুক্তির উপায়? সম্ভাব্য সমাধানগুলির মধ্যে একটি হচ্ছে পিএসএল প্লেয়ার ড্রাফটের দিন মিসবাহকে বাছাই প্রক্রিয়াতে অংশ নেওয়া থেকে বিরত রাখা। তবে পিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াসিম খান যুক্তি দিয়েছেন যে পিএসএলে মিসবাহকে কোচ করার অনুমতি দেওয়ার ফলে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানেরই উপকার হবে। জানা গেছে, পিএসএল চলার সময়ে পাকিস্তান জাতীয় দলের কোচ ও প্রধান নির্বাচক হিসেবে ভূমিকার জন্য পিসিবি থেকে বেতন পাবেন না মিসবাহ।

এর আগে গত মৌসুমে ইনজামাম-উল-হকের ব্যাপারেও এমন আপত্তি তুলেছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। ততকালীন প্রধান নির্বাচক পিএসএলের কমিটির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কিন্তু দাবির মুখে তাঁকে সরে দাঁড়াতে হয়েছিল। পরে এক ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে সম্পর্কও ছিন্ন করতে হয়েছিল তাঁকে।