ভারতে ম্যাচ পাতানোর ডাক পেলেই আইফোন

ভয়ংকর সব তথ্য বেড়িয়ে আসছে কর্ণাটকের ম্যাচ পাতানোর ঘটনায়।
ভয়ংকর সব তথ্য বেড়িয়ে আসছে কর্ণাটকের ম্যাচ পাতানোর ঘটনায়।
>
  • কেপিএলে ফিক্সিং নিয়ে সাক্ষাতের জন্য আইফোন উপহার দেওয়া হতো
  • অনেক দলের কোচ ও মালিক জড়িত ছিল ম্যাচ পাতানোয়
  • আইপিএল খেলা দুই খেলোয়াড়কে কেপিএলে স্পট ফিক্সিংয়ের দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে

কর্ণাটক প্রিমিয়ার লিগ (কেপিএল) জাঁকজমকে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ধারে কাছেও নেই। কিন্তু ভারতের আনাচে-কানাচে টি-টোয়েন্টি ছড়িয়ে দেওয়া ও দেশের তরুণ ক্রিকেটারদের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের চাপের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়াতে আইপিএলের মতোই অবদান কেপিএল ও অন্যান্য লিগগুলোর। সেই কেপিএলই বড় এক ধাক্কা দিল ভারতীয় ক্রিকেটকে। ম্যাচ পাতানোর একের পর এক খবর এসে জানিয়ে দিচ্ছে পচন ধরা ক্রিকেট সংস্কৃতির কথা।

২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত কর্ণাটক ক্রিকেটের দায়িত্বে ছিলেন অনিল কুম্বলে। দায়িত্বে থাকার সময় কেপিএল বন্ধ করে দিয়েছিলেন কুম্বলে। কারণ তাঁর মনে হয়েছিল, ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট নয় এমন লোকজন কেপিএলে ঢুকতে পারে। কুম্বলের বিদায়ের পর আবারও ফিরে এসেছে কেপিএল। এবং সাবেক ভারতীয় কোচের সন্দেহই সত্য প্রমাণিত হয়েছে। লিগ সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনকে এরই মাঝে গ্রেপ্তার করেছে বেঙ্গালুরু পুলিশ।

এ সংকটের সবচেয়ে ভয়ংকর দিক হলো, কেপিএল সংশ্লিষ্ট অনেকেই ব্যাপারটিতে কোনো বিস্ময় প্রকাশ করেননি। বরং অনেকেই আশায় ছিলেন, কবে ম্যাচ পাতানোর এ খবরগুলো প্রকাশিত হবে এবং তারা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারবেন। হিন্দুস্তান টাইমসের সঙ্গে কথোপকথনে সাবেক এক কর্ণাটক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘ব্যাপারটা (অভিযোগ ও গ্রেপ্তার) কখনো হবে কি না ছিল না, বরং কখন হবে সেটা।’ কেপিএলে শুরু থেকেই খেলা এক ক্রিকেটার জানিয়েছেন, ‘যখন আমাদের মতো কিছু খেলোয়াড় কোনোভাবেই ম্যাচ পাতানো বা স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত হয় না, তখন তারা খুব সতর্ক হয়ে যেত। যখন আমরা থাকতাম না তখন ওদের খুব সুবিধা হতো।’

হিন্দুস্তান টাইমসের কাছে আরও বেশ কিছু ক্রিকেটার সে সময়কার কথা জানিয়েছেন। তবে নিরাপত্তার সার্থে নাম প্রকাশে রাজি হননি কেউই। তাদের একজনের দাবি, ‘একবার এক খেলোয়াড় এসে বলেছিল তাকে নাকি শুধু একজনের সঙ্গে দেখা করলেই আইফোন দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এক কোচই ছিল, যে একটা ব্যাগভর্তি আইফোন নিয়ে ঘুরত। সে সেগুলো খেলোয়াড়দের দিত।’ আরেক খেলোয়াড় বলেছেন, ‘আমাদের সমস্যা হলো আমাদের গোড়াতেই পচন ছিল। ফলে খেলোয়াড়রা এসব ব্যাপার জানাতে চাইত না কর্তৃপক্ষকে। ওরা যা করতে বলছে সেটা না করতে চাইলেও লাভ নেই। কারণ যখন দলের কোচ আর মালিকই এর সঙ্গে জড়িত তখন কার কাছে এ ব্যাপারে জানাবেন। আমার অধিনায়ক সৎ ছিল। সে বুঝে গিয়েছিল দলের ভেতর কী বাজে ব্যাপার ঘটছে। ফলে দল ঘোষণার কাজটা সে করত একদম শেষে। মাঠে সব খেলোয়াড় যখন গোল হয়ে দাঁড়াতাম আর সব যোগাযোগের মাধ্যম সরিয়ে নেওয়া হতো, শুধু তখনই তিনি একাদশ জানাতেন (যাতে স্পট ফিক্সিং করে সুবিধা না নিতে পারে জুয়ারিরা)।’