ব্যাটিং বিপর্যয়ে সাংবাদিকদের দায় দেখছেন অধিনায়ক

আজ ব্যাটসম্যানদের দক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন জেগেছে। ছবি: এএফপি
আজ ব্যাটসম্যানদের দক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন জেগেছে। ছবি: এএফপি

মুমিনুল হককে এখন দুটো পরীক্ষা দিতে হচ্ছে এক সঙ্গে। একটা মাঠে, আরেকটি সংবাদ সম্মেলনে। ভারতীয় বোলারদের কঠিন সব বল যেমন খেলতে হয়েছে, অধিনায়ক হিসেবে সংবাদ সম্মেলনেও দিতে হচ্ছে কঠিন কঠিন সব প্রশ্নের উত্তর।

আজ বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়কের কাছে জানতে চাওয়া হলো, ভারতীয় বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের এত ভীত দেখাল কেন? মুমিনুল বললেন, ‘উইকেট আনপ্লেয়েবল ছিল না। টেস্টে তারা এক নম্বর দল। তাদের সঙ্গে খেলতে হলে আমাদের অনেক বেশি শক্ত হতে হবে। আমার কাছে মনে হয় এ জায়গায় একটু পিছিয়ে গিয়েছিলাম। আনপ্লেয়েবল হলে হয়তো অনেকে চোটে পড়ত, বল এখানে-ওখানে লাগত। যে রান করেছি, মুশফিক ভাই যতটুকু রান পেয়েছে সেটা করতে পারত না।’

মানসিকভাবে শক্ত না হওয়ার অর্থ আগেই ঘাবড়ে যাওয়া। বাংলাদেশ যেন ম্যাচের আগেই হেরে বসেছে! ধরে নিয়েছে এদের সঙ্গে পারা যাবে না। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা বল দেখে খেলেননি যেন তাঁরা বোলারের নাম দেখে খেলেছেন! কেন? এখানে অবশ্য সংবাদমাধ্যমের দায় দেখছেন মুমিনুল, ‘তারা মানসিকভাবে তৈরি হয়ে নেমেছে। যদি বলি আপনাদের কাছে হয়তো হাস্যকর লাগবে। আমরা যখন কোনো সিরিজ খেলতে নামি আপনাদের একটা বড় ভূমিকা থাকে। কথাটা হয়তো আমার বিপক্ষে যেতে পারে। আপনারা কিছু মনে করবেন না প্লিজ, এমনভাবে সব প্রশ্ন করেন, যেমন ধরুন রশিদ খান আছে, সেটা বারবার মনে করিয়ে দিতে থাকেন। আপনি যতই সেটা চিন্তা না করতে চান, আপনাকে ভাবিয়ে তুলবেই।’

সিরিজের আগে প্রতিপক্ষের শক্তি-দুর্বলতার কথা বারবার মনে করিয়ে দিতে পারে সংবাদমাধ্যম। বারবার একই প্রসঙ্গ আসতেও পারে। সংবাদমাধ্যমে আলোচিত বিষয় ভেবে নিশ্চয়ই একজন খেলোয়াড় তাঁর গেম প্ল্যান তৈরি করেন না। তাঁর কাছে সংবাদমাধ্যমের চাপের চেয়ে মাঠ চাপটা সব সময়ই বেশি থাকে। সে চাপ যদি সামলাতে পারেন, সংবাদমাধ্যমে কী আলোচনা হলো সেটি বেশি ভাবাবে কেন? আর খেলোয়াড়েরা যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উঠে আসেন, যে পর্যায়ে লম্বা সময় ধরে খেলেন, এ ধরনের চাপ সামলাতে তাঁদের সিদ্ধহস্ত হওয়ার কথা।

এ যুক্তিতে মুমিনুল দ্বিমত পোষণ করছেন না। তবে আবারও বললেন, কোনো একটি বিষয় বারবার আলোচনা হলে সেটি তাঁদের মাথায় ঘুরতে থাকে, ‘হ্যাঁ, আমাকে যে প্রশ্ন করেন সেটির উত্তর আমাকেই দিতে হবে। কিন্তু মাঝে মাঝে একই প্রশ্ন করলে কী হয়, দেখা গেল আগে কখনো যেটা ভাবিনি, সেটা মাথায় ঢুকে যায়। একবার ঢুকে গেলে হয়তো মাথায় সেটাই খেলতে থাকে। তবে হ্যাঁ, এখানে আমাদের সবার মানসিকভাবে আরও শক্ত হতে হবে।’

ভারতীয় দল খেলছে প্রায় ১৫০ কোটি মানুষের চাপ নিয়ে; শত শত পত্রিকা-টিভি চ্যানেলের চাপ নিয়ে। এত চাপের মধ্যে, এত আলোচনা-কথার মধ্যে কোহলিরা যদি দুর্দান্ত খেলতে পারেন; ১৬-১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা মুমিনুলরা কেন পারবেন না?