এর চেয়ে ভয়ংকর বোলিং আর কী খেলবেন মুমিনুলরা

ভারতীয় পেসারদের সামনে অসহায় মনে হয়েছে অধিকাংশ বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের। ছবি: এএফপি
ভারতীয় পেসারদের সামনে অসহায় মনে হয়েছে অধিকাংশ বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের। ছবি: এএফপি

দলের মিডিয়া ম্যানেজার জানিয়েছেন, কাল বিকেল ৪টায় হোলকার স্টেডিয়ামে ঐচ্ছিক অনুশীলন করবে বাংলাদেশ। যে সময়ে খেলার কথা ছিল টেস্ট, সে সময় বাংলাদেশ দলকে করতে হচ্ছে অনুশীলন।

ইন্দোর টেস্ট শেষ হয়ে গেছে তিন দিনেই। ভারতে হুট করে এক প্রদেশ থেকে আরেক প্রদেশে যাওয়া কঠিন। দল হিসেবে হঠাৎ জায়গা বদল আরও কঠিন। হোটেল-বিমান সবকিছুই নির্ধারিত থাকে আগ থেকে। বাংলাদেশ দল চাইলেই তাই এখনই কলকাতায় যেতে পারছে না। ইন্দোরে তাদের থাকতে হবে আরও দুটি দিন। ইন্দোর থেকে বাংলাদেশ কলকাতায় যাবে ১৯ নভেম্বর। পুরো পাঁচ দিন খেলতে পারলে এ সময়েই যেতে হতো।

পূর্ব নির্ধারিত ভ্রমণ তারিখের যেহেতু হেরফের হবে না, সময়টা কাজে লাগাতে বাংলাদেশ হোলকার স্টেডিয়ামে বাকি দুদিন ঝালিয়ে নেবে। এবার মুমিনুলদের সামনে আরেক পরীক্ষা—গোলাপি বলে ইডেনে খেলতে হবে ভীষণ আলোচিত দিবারাত্রির টেস্ট। ইন্দোরেই ভারতীয় পেসারদের সুইংয়ে কাবু হয়ে গেছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। গোলাপি বলে সুইং আরও বেশি হয়। দিবারাত্রি টেস্টের এ কঠিন চ্যালেঞ্জ কীভাবে নেবে বাংলাদেশ?

এ প্রশ্নে মুমিনুল হক ম্লান হাসলেন। তাঁর বিষণ্ন মুখটা যেন বলছিল, বিপন্ন সময়ে আবার হারানোর ভয় কী! বাংলাদেশ অধিনায়ক মনে করেন ভারতের ভয়ংকর বোলিং আক্রমণ খেলার অভিজ্ঞতা তাদের হয়ে গেছে, নতুন করে তাই ভয় পাওয়ার কিছু নেই, ‘ফ্লাড লাইটের আলোয় যতটুকু অনুশীলন করা যায় ততটুকুই ভালো। এখানে আমরা যে সুইংয়ে খেলেছি, এর চেয়ে বেশি সুইং মনে হয় না আর হবে! সুইং বলে অনেক ভালো অনুশীলন হয়ে গেছে! একটু চ্যালেঞ্জ থাকবে। এই চ্যালেঞ্জটা আমাদের ভালোভাবে ও ইতিবাচকভাবে নেওয়া উচিত।’

ভারতের বিপক্ষে বাজে পারফরম্যান্সে নিজেদের অনভিজ্ঞতাকেই বড় করে দেখছেন মুমিনুল, ‘আমরা খুব বেশি টেস্ট খেলি না। যদি দেখেন গত সাত মাসে দুই টেস্ট খেলেছি। এ ব্যর্থতার মূল কারণ পর্যাপ্ত টেস্ট না খেলা।’

টেস্টে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের অভিজ্ঞতার ঘাটতি নতুন নয়। কিন্তু উপমহাদেশের একটি দলের পেস বোলিং আক্রমণের সামনে এভাবে মুখ থুবড়ে পড়তে বাংলাদেশকে কমই দেখা গেছে। ব্যাটসম্যানদের ভাবনা-টেকনিক সবকিছু নিয়েই তাই উঠেছে প্রশ্ন। মুমিনুল মনে করেন না তাঁদের চিন্তাভাবনায় কোনো গলদ ছিল, ‘আমার কাছে মনে হয়, ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ ঠিক ছিল। আমাদের বোঝা উচিত ছিল এমন প্রতিপক্ষের সঙ্গে কীভাবে ধৈর্য ধরে ব্যাটিং করতে হবে। আপনারা দেখেছেন, ওরা বাজে বল খুব কমই করে। ওপেনার বা টপ অর্ডারে যারা ব্যাটিং করে তাদের আরও বেশি ধৈর্য নিয়ে খেলা উচিত।’

মুমিনুল যে ধৈর্যের কথা বললেন, বাংলাদেশের বেশির ভাগ ব্যাটসম্যানের এ সমস্যা আছে। ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে কাল কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলেছেন, দলের কাঠামোগত পরিবর্তন আনা জরুরি। টেস্টের জন্য আলাদা দল গড়ার ইঙ্গিত মিলেছে তাঁর কথায়। ডমিঙ্গোর সঙ্গে একমত অধিনায়ক মুমিনুলও, ‘টেস্ট ফরম্যাটে আলাদা যদি কাঠামো তৈরি হয় তাহলে সেটা হয়তো বেশি কাজে দেবে। আপনি যখন একটা সংস্করণ নিয়ে চিন্তা করবেন তখন সেখানেই টিকে থাকার চিন্তা করবেন। আপনার মাথায় ওই সংস্করণের বিষয়গুলো বেশি আসবে। এভাবেই করা উচিত বলে আমার মনে হয়। তবে কিছুটা সময় লাগবে (একটা দল হিসেবে দাঁড়াতে)।’