হারের পর বাসা থেকে বের হন না বিসিবি সভাপতি

ভারতের বিপক্ষে ইন্দোরে আজ ইনিংস ও ১৩০ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। তবে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হেরে যাওয়ায় আগেই মন ভেঙে গিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসানের


আজ ইন্দোর টেস্টে ভারতের বিপক্ষে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে বাংলাদেশ। একেবারে ইনিংস ও ১৩০ রানের বড় ব্যবধানে হেরে মাঠ ছেড়েছেন মুমিনুল বাহিনী। স্বাভাবিকভাবে এই হারে হতাশ ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু এই হারকে ছাপিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজের হারটা এখনো দগদগে ক্ষতর মতো বয়ে বেড়াচ্ছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান। আজ রাজধানীর পাঁচতারকা এক হোটেলে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানে কোনো রাখ ঢাক না রেখেই জানিয়ে দিলেন তাঁর হতাশার কথা।

তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে নাগপুরের সেই হারটা অবিশ্বাস্যই। ৪৩ বলে বাংলাদেশের দরকার ৬৫ রান, হাতে ৮ উইকেট—এই ম্যাচ তো জিতে বেরিয়ে আস

বে দুনিয়ার যেকোনো দলই। খুব আহামরি বোলিং যে ভারতীয় বোলাররা করছিলেন, এমনটা নয়। কিন্তু ম্যাচটা জিততে পারেনি বাংলাদেশ। জয়ের পথে থেকেও শেষ পর্যন্ত ৩৩ রানের হার সঙ্গী মাহমুদউল্লাহদের। এই হারটা এখনো মানতে পারছেন না বিসিবি সভাপতি।

ইন্দোর টেস্টে এমন হার প্রত্যাশার বাইরে ছিল কিনা? এমন প্রশ্নের নাজমুল জানান, ‘ টেস্টের আগেই মন ভেঙে গেছে। টেস্ট তো পরে। প্রথম কথা হচ্ছে এবারের এই সিরিজে অনেক আশা ছিল টি-টোয়েন্টিতে আমরা জিতব। এর আগে তিন তিনবার ভারতের সঙ্গেই আমরা একেবারে শেষ বলে, শেষ ওভারে জেতা ম্যাচ হেরে এসেছি। এটাতে কোনো সন্দেহ নেই। আপনি বিশ্বকাপ বলেন, নিদাহাস ট্রফি বলেন এমনকি এশিয়া কাপ ফাইনাল বলেন। আমরা কিন্তু প্রতিবার শেষ মুহূর্তে গিয়ে হেরে এসেছি। যেটা নাকি আমাদের জেতার কথা। এর মধ্যে নিশ্চিত জেতার কথা ছিল অবশ্যই বিশ্বকাপের ম্যাচটা এবং নিদাহাস ট্রফি। এই দুইটাতে হারার কোনো কারণই নেই।’

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান। ফাইল ছবি

সেদিনের হারের পর বাসা থেকে বের হন না বলে জানিয়েছেন তিনি , ‘ আমার মনে প্রাণে বিশ্বাস ছিল আমরা জিতব। এই রকম একটা সাহস ছিল এবং প্রথম ম্যাচটা ভালো খেলেছি আমরা। দ্বিতীয় ম্যাচটা ওরা ভালো খেলেছে, এটা তো অস্বীকার করার কোনো উপায়ই নেই। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচটা নিশ্চিত জেতা ম্যাচ। এই হারটা এখন আমি নিজেই হজম করতে পারিনি। আমি বাসা থেকেই বের হই না। আপনারা হয়তো খেয়াল করেছেন, আমি কোথাও যেতেই চাই না। আমি এখনো নিজে এটা মেনেই নিতে পারছি না এই ম্যাচটাও হারব।’

মোহাম্মাদ নাঈম শেখের দুর্দান্ত ইনিংসের ওপর ভর করে জয়ের সুবাস পাচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় হার। তাই বিসিবি সভাপতি কাঠগড়ায় তুলেছেন অভিজ্ঞদের, ‘মিঠুন যদি এই রান করতে পারে, আমাদের টি-টোয়েন্টির বাকি যারা প্লেয়ার; যারা এত বছর ধরে পরিচর্যা করছি। যাদের পেছনে সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় করছি। শুধু আপনি হিসেব করে দেখেন সৌম্য, লিটন, মুশফিক, রিয়াদ; এদের চেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার তো আমাদের আর নেই। এরা যদি ১০ করে ৪০ রানও করত, আমরা সেদিন ম্যাচ জিতে জেতাম। কারণ বাকি যে সাত রান থাকে ওটা বাকিরা করে নিত। ফাইনালে গিয়ে যদি এই অভিজ্ঞদের কাছ থেকে পারফরম্যান্স না পাই, তাহলে এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। এরা তো কেউ খারাপ খেলোয়াড় না। হয় না কেন জানি, কে জানি ভারতের সঙ্গে এলে এটা বেশি হয়। এবার একদম মনে প্রাণে বিশ্বাস ছিল এবার আমরা জিতবই। সেটা হয়নি এবং সেই শোকই এখনো ভুলতে পারিনি।’