আবারও স্পেনের কোচ হচ্ছেন এনরিকে

মেয়ের অসুস্থতার জন্য দায়িত্ব ছেড়েছিলেন সাবেক বার্সা কোচ। ছবি : এএফপি
মেয়ের অসুস্থতার জন্য দায়িত্ব ছেড়েছিলেন সাবেক বার্সা কোচ। ছবি : এএফপি
>বছরখানেক দায়িত্বে থাকার পর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে স্পেনের কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন লুইস এনরিকে। এনরিকের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন তারই সহকারী, রবার্তো মরেনো। বলা হয়েছিল, আগামী ইউরো পর্যন্ত মরেনোর হাতেই থাকবে স্পেনের দায়িত্ব। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে স্পেন।

সেই গত বিশ্বকাপের আগ থেকেই স্পেনের কোচ ভাগ্য ঠিক সুপ্রসন্ন নয়।

স্পেনের দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও রিয়াল মাদ্রিদের কোচ হওয়ার জন্য সম্মতি দিয়েছিলেন সাবেক কোচ হুলেন লোপেতেগি। আর তাতেই ক্ষেপে যায় স্পেনের ফেডারেশন। ছাঁটাই করে লোপেতেগিকে। তাড়াহুড়ো করে বিশ্বকাপের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় সাবেক রিয়াল কিংবদন্তি ফার্নান্দো হিয়েরোকে। ফলে যা হওয়ার তাই হয়, অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি হয় স্পেনের ড্রেসিংরুমে। বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই বাদ পড়ে যায় স্পেন, পুঁচকে রাশিয়ার কাছে হেরে। বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর হিয়েরোকেও আর রাখেনি স্পেন, হটসিটে চলে আসেন সাবেক বার্সা, রোমা ও সেল্টা ভিগোর কোচ লুইস এনরিকে।

লুইস এনরিকের অধীনে নিজেদের আবারও ফিরে পায় স্পেন। গত বছরের ৯ জুলাই দায়িত্ব পাওয়ার পর উয়েফা ন্যাশনস লিগের গ্রুপ পর্বে ওয়েম্বলিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১ গোলের জয় দিয়ে অভিষেক হয়েছিল এনরিকের। তবে বেশি দিন স্পেনের কোচ থাকা হয়নি এনরিকের। পারিবারিক সমস্যার জন্য ২০২০ ইউরো বাছাইপর্বে মাল্টা, ফারো আইল্যান্ড এবং সুইডেনের বিপক্ষে ম্যাচে অনুপস্থিত ছিলেন এনরিকে। মূল কোচ হওয়ার আগে এনরিকের অনুপস্থিতিতে এই তিন ম্যাচে দায়িত্ব পালন করেছিলেন সহকারী মরেনো। জানা যায়, ক্যানসারের সঙ্গে লড়ছেন এনরিকের ছোট্ট মেয়ে জানা। মৃত্যুপথযাত্রী মেয়ের সঙ্গে সর্বক্ষণ থাকার জন্য পরে স্পেনের দায়িত্ব ছেড়ে দেন এনরিকে। স্পেনের দায়িত্ব দেওয়া হয় মরেনোকেই। আগামী ইউরো পর্যন্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।

তবে মরেনো যতই স্পেনের চাকরিটা চান না কেন, তিনি বেশ ভালোই জানতেন, গুরু এনরিকের মতো নামকরা কোচ তিনি নন। যে কারণেই আগেই বলে দিয়েছিলেন, এনরিকে স্পেন দলে ফিরতে চাইলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে সরে দাঁড়াবেন। সেটাই হচ্ছে।

ক্যানসারের সঙ্গে লড়াইয়ে পেরে ওঠেনি জানা। কিছুদিন আগে না ফেরার দেশে চলে গেছে সে। এনরিকেও এখন মোটামুটি ধাতস্থ হয়েছেন। স্পেনের ফেডারেশনও এই সুযোগে এনরিকেকে ফেরাতে চাইছে আবার।

ওদিকে স্পেনের দায়িত্বে কী তিনি আসলেই থাকবেন নাকি থাকবেন না, মরেনোর কাছে বোর্ডের ভূমিকা ছিল ধোঁয়াচ্ছন্ন। তিনি নিজেও হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন, স্পেনের দায়িত্বে থাকা হচ্ছে না তাঁর। মাল্টার বিপক্ষে গত সপ্তাহে ম্যাচের পর স্পেনের বোর্ডপ্রধান রুবিয়ালেস বলেছিলেন, ইউরো ২০২০ তে মরেনোর অধীনের স্পেন খেলবে কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন তিনি। যে কারণে সেদিন রোমানিয়াকে বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচে ৫-০ গোলে হারানোর পর অশ্রুসিক্ত চোখে স্প্যানিশ সমর্থকদের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে সরাসরি ড্রেসিংরুমে চলে যান মরেনো। সংবাদ সম্মেলনেও আসেননি তিনি।

এদিকে আজ জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন স্পেনের বোর্ডপ্রধান লুইস রুবিয়ালেস। ফলে দুয়ে দুয়ে চার মিলিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে না কারওর। দায়িত্ব হারাতে চলেছেন মরেনো, আর নিজের জায়গায় আবারও ফিরতে চলেছেন লুইস এনরিকে। খবর দিয়েছে মার্কা, স্পোর্তের মতো বাঘা বাঘা স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমগুলো।

হয়তো আজই এনরিকের প্রত্যাবর্তনের পাকা খবর চলে আসবে। রামোস-পিকেরা ফিরে পাবেন তাঁদের পুরোনো গুরুকে।