'ধোনির কারণে বিশ্বকাপ ফাইনালে সেঞ্চুরি পাইনি'

২০১১ সালের ফাইনালে ১০৯ রানের জুটি গড়েন দুজন। ছবি : এএফপি
২০১১ সালের ফাইনালে ১০৯ রানের জুটি গড়েন দুজন। ছবি : এএফপি
>আর তিন রান করতে পারলে ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালে সেঞ্চুরি করতে পারতেন গৌতম গম্ভীর। বিশ্বকাপ জয়ের মতো দলগত অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তিগত অর্জনের একটা পালকও যুক্ত হতো তাঁর মুকুটে। কিন্তু সেটা হয়নি। কেন হয়নি? গম্ভীর দুষলেন সে সময়ের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিকে।

২০১১ বিশ্বকাপের সময় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে দলের বেশ কিছু সদস্যের সম্পর্ক ভালো ছিল না, এ কথা আজকের নতুন নয়।

সে বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলতে থাকা যুবরাজ সিংকে ফাইনালে আগে ব্যাট করতে না নামিয়ে নিজেই নেমে যান ধোনি। পরে ফাইনালে ম্যাচসেরাও হয় ভারত অধিনায়ক। এ নিয়ে যুবরাজের ক্ষোভের কথা অজানা নয়। এবার ধোনির বিপক্ষে মুখ খুললেন সাবেক ব্যাটসম্যান গৌতম গম্ভীর। অভিযোগ করলেন, ধোনির কথায় মনঃসংযোগে বিঘ্ন না ঘটলে সেদিন সেঞ্চুরি করেই বাড়ি ফিরতেন তিনি।

ফাইনালে শ্রীলঙ্কার ছুঁড়ে দেওয়া ২৭৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩১ রানেই দুই ওপেনার শচীন টেন্ডুলকার ও বীরেন্দর শেবাগের উইকেট খুইয়ে বসে ভারত। কিছুক্ষণ পর আউট হয়ে যান বিরাট কোহলিও। ক্রিজে জুটি বাঁধেন গৌতম গম্ভীর ও মহেন্দ্র সিং ধোনি। দুজন গড়েন ১০৯ রানের জুটি। তাতেই মোটামুটি বিপদ কেটে যায় ভারতের। কিন্তু ঝামেলা করে বসেন গম্ভীর। ৪২ তম ওভারে থিসারা পেরেরাকে তেড়ে মারতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান। ৯৭ রানে থেমে যায় গম্ভীরের ইনিংস। একটুর জন্য বিশ্বকাপ ফাইনালে সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব পাওয়া হয়নি গম্ভীরের। এত দিন পর তিনি বললেন, ফাইনালে ওই সময়ে ধোনি মনঃসংযোগে বিঘ্ন না ঘটালে সেঞ্চুরি করেই ফিরতেন তিনি, '৯৭ রানে ব্যাট করার সময়ে আমার মাথায় কী চলছিল, বহুবার এই প্রশ্নটা আমাকে শুনতে হয়েছে। ৯৭ রানে পৌঁছানোর আগে ব্যক্তিগত রান, মাইলফলক এসব নিয়ে নিয়ে মাথা ঘামাইনি আমি। শ্রীলঙ্কার রান তাড়া করা কীভাবে সম্ভব, কীভাবে ব্যবধান কমানো সম্ভব, তা নিয়েই চিন্তাভাবনা করছিলাম। আমার রান যখন ৯৭, ধোনি এগিয়ে এসে আমাকে বলল, আর ৩ রান করতে পারলেই তুমি সেঞ্চুরি করে ফেলবে। ৯৭ রানে ব্যাট করার সময়ে আমার মনঃসংযোগ ঠিকই ছিল। ধোনির ওই কথার পর সেই যে মাথায় সেঞ্চুরি করার বাড়তি একটা চাপ ঢুকে গেল, সেই চাপ থেকে আর মুক্ত হতে পারিনি। সেঞ্চুরি করার তাগিদ অনুভব করতে থাকি। আর ওই কারণেই আউট হই।'

ব্যক্তিগত মাইলফলকের কথা চিন্তা করতে গিয়েই সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি গম্ভীরের, এটা মানেন তিনি, 'যখনই ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স, ব্যক্তিগত স্কোর নিয়ে বেশি ভাবনাচিন্তা করা হয়, তখনই রক্তের গতি বেড়ে যায়। আগে শ্রীলঙ্কার রান নিয়ে চিন্তাভাবনা করছিলাম। সেটার দিকেই যদি মনোযোগ দিতাম, তাহলে হয়তো সেঞ্চুরি করেই ফিরতাম। আউট হয়ে যখন প্যাভিলিয়নে ফিরছিলাম, তখন নিজের মনেই কথা বলছিলাম। বলছিলাম, এই তিন রানের আক্ষেপ আমার সারা জীবন থাকবে। সত্যি কথা বলতে কী, সেটাই হয়েছে। মানুষ এখনো আমাকে প্রশ্ন করে, সেদিন কেন ৩ রান করতে পারলাম না!'