ইডেন টেস্ট তিন দিনেই শেষ, মুমিনুল কী বলেন

ইডেন গার্ডেন গত দুদিনে কথাটা অনেকবার শোনা গেল, কলকাতায় দিবারাত্রির টেস্ট শেষ হয়ে যেতে পারে তিন দিনেই! এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক কী বলেন


বেঙ্গলের সাবেক ক্রিকেটারদের (পুরুষ-নারী উভয়ই) কাল সন্ধ্যায় ডেকেছিল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল (সিএবি)। সিএবি কার্যালয়ে এসে স্থানীয় পরিচিত সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখা হতেই তাঁদের কারও কারও রসিকতা, ‘এই টেস্ট তো তিন দিনেই শেষ হয়ে যাবে, কী বলো?’

কলকাতার সাংবাদিকেরা খুব একটা দ্বিমত পোষণ করছেন না। ইডেনের সবুজ উইকেট, গোলাপি বলের জটিল আচরণ, আগে কখনো রাতে টেস্ট না খেলা আর ইন্দোর টেস্টে বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্স দেখে তাঁদের ধারণা— ইডেন টেস্ট তিন দিনের বেশি যাবে না! যদি তাই হয়, তাহলে এত আয়োজন, এত রোমাঞ্চ তিন দিনেই শেষ হয়ে যাবে? আয়োজকেরা খুব ভালো করেই জানেন, টেস্ট যদি চতুর্থ কিংবা পঞ্চম দিনে নেওয়া যায়, তবেই লাভ। লাভটা ক্রিকেটীয় দিক দিয়ে, লাভটা বাণিজ্যিক ও সাংগঠনিকভাবেও।

ইডেনের উইকেট তাই ব্যাটসম্যানদের মৃত্যুকূপ নয়, সিএবি চাইছে যতটা সম্ভব স্পোর্টিং করতে। কাল যতটা সবুজ দেখা গেছে, আজ সবুজাভ রং অনেকটা কমেছে। কাল ম্যাচ শুরুর আগে সেটি নাকি আরও কমবে। দিন যত গড়াবে এই উইকেটে ব্যাটিং করা ততই সহজ হবে। যদি ব্যাটসম্যানরা উইকেট দিয়ে না আসেন, গোলাপি বলের আচরণ দ্রুত ধরে ফেলতে পারেন—ইডেন টেস্ট অনায়াসে চার দিনে গড়াবে বলেই জানালেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের এক কিউরেটর। শুধু শুধু উইকেট-আতঙ্কে ভোগার কারণ তিনি দেখেন না।

কলকাতার সংবাদমাধ্যমে যেভাবে ‘তিন দিনেই শেষ হয়ে যাতে পারে টেস্ট’ বলে রব তোলা হচ্ছে, বাংলাদেশের কাছে সেটি কিছুটা ‘অপমানের’ও। এ কথায় পরোক্ষভাবে টেস্টে বাংলাদেশের সামর্থ্য নিয়েই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। আজ বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে প্রসঙ্গটা উঠতে বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক না হেসে পারলেন না, ‘একজন খেলোয়াড় হিসেবে আমি বলতে পারি না খেলা তিন দিনে শেষ হবে! ঘাস থাকলেই যে খেলা তিন দিনে শেষ হবে এমন কোনো কথা নেই। হয়তো ঘাস থাকার পরও শক্ত উইকেটের জন্য বল ভালোভাবে ব্যাটে আসতে পারে। কিউরেটর স্পোর্টিং উইকেটের কথা বলেছেন। আমার মনের হয় স্পোর্টিং উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো।’

ইডেন টেস্ট নিয়ে নিজের প্রত্যাশার কথা জানালেন মুমিনুল। ফাইল ছবি
ইডেন টেস্ট নিয়ে নিজের প্রত্যাশার কথা জানালেন মুমিনুল। ফাইল ছবি

শক্তিমত্তায় দুই দলের অনেক পার্থক্য থাকলেও এই একটি জায়গায় বাংলাদেশ-ভারত শুরু করতে যাচ্ছে এক বিন্দু থেকে। দুই দলের অভিজ্ঞতা নেই গোলাপি বলের টেস্ট খেলার। প্রথমবারের মতো বলেই কলকাতায় দিবারাত্রির টেস্ট ঘিরে তৈরি হয়েছে অন্যরকম আগ্রহ, উন্মাদনা, উত্তেজনা আর রোমাঞ্চ। দুই দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে ক্রিকেট কিংবদন্তি, অন্য খেলার তারকাদের উপস্থিতি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কী থাকছে না!

চারদিকে এত হইচই, কোলাহল, আলোচনা—সব এড়িয়ে খেলায় মনোযোগ রাখা নিশ্চয়ই কঠিন। মুমিনুলের কাছে অবশ্য এটি কোনো চাপই মনে হচ্ছে না, ‘বাইরে কি হচ্ছে না হচ্ছে পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে এটা আমাদের প্রভাবিত করবে বলে মনে হয় না। এই চাপ আসাও উচিত না। যে যার কাজ ঠিকমতো করছি। চাপ আসার কোনো সুযোগ নেই।’