দুই টেবিল টেনিস তারকাকে দলে নিতে আদেশ আদালতের

মানস চৌধুরী ও মৌমিতা আলম
মানস চৌধুরী ও মৌমিতা আলম
আগামী ১-১০ ডিসেম্বর নেপালে হবে ১৩তম এসএ গেমস। কিন্তু সেই গেমসে টিটির দল থেকে বাদ পড়েছেন দেশের সেরা দুই খেলোয়াড় মানস চৌধুরী ও মৌমিতা আলম।


খেলার দাবিতে আদালতে! বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে এমন ঘটনা বিরলই বলা যায়। দেশের দুই টেবিল টেনিস তারকা মানস চৌধুরী ও মৌমিতা আলম এসএ গেমসের দল থেকে বাদ পড়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন ফেডারেশনে।

অবশেষে আদালত তাদের দাবির যৌক্তিকতা প্রমাণ করেছেন। একই সঙ্গে এই দুই খেলোয়াড়কে এসএ গেমসের দল নির্বাচন প্রক্রিয়ার ভেতরে রাখার আদেশ দিয়েছেন।
টিটির সাবেক জাতীয় চ্যাম্পিয়ন মানস চৌধুরী থাকেন চট্টগ্রামে। ফেডারেশন তাঁকে নিয়মিত দুই বেলা আবাসিক ক্যাম্পে থেকে অনুশীলন করতে বলেছিল। একইভাবে রুমিকেও দুই বেলা অনুশীলন বাধ্যতামূলক করে দেয় ফেডারেশন। কিন্তু পেশায় দন্ত চিকিৎসক মানস ঢাকায় এসে অনুশীলনের ব্যাপারে অপরাগতা প্রকাশ করেন। আর রাজধানীর একটি স্কুলের শিক্ষিকা রুমিও একইভাবে নিজের অসহায়ত্ব স্বীকার করে ফেডারেশনের কাছে একবেলা অনুশীলনের সুযোগ চেয়েছিল। পাশাপাশি এই দুজন খেলোয়াড়ই এসএ গেমসের চূড়ান্ত দলের ট্রায়ালে অংশ নেওয়ার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু তাঁদের সেই আবেদন কোনো আমলেই নেয়নি ফেডারেশন। এরপর তাঁদের বাদ দিয়েই চূড়ান্ত দল গড়া হয়।

এই অবস্থায় কোনো উপায় না দেখে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এবং খেলতে চেয়ে রিট আবেদন করেন মানস চৌধুরী ও মৌমিতা আলম। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মোহাম্মদ খায়রুল আলমের বেঞ্চে দুই সপ্তাহের শুনানি শেষে ১৯ নভেম্বর দুই খেলোয়াড়কে জাতীয় দলের নির্বাচন প্রক্রিয়ার ভেতরে রাখার জন্য আদেশ দিয়েছেন আদালত। মানসের আইনজীবী কাজী জাহেদ ইকবাল আজ শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এসএ গেমসের ১৩ তম আসরকে সামনে রেখে আমার মক্কেল মানস চৌধুরী ও মৌমিতা আলম রুমিকে জাতীয় টেবিল টেনিস দল গঠনের প্রক্রিয়ায় রাখার আদেশ জারি করা হয়েছে। আদালত এ ছাড়া জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও টেবিল টেনিস ফেডারেশনের ওপরে একটি রুল জারি করেছেন। কেন তাঁদের জাতীয় দলে রাখা হয়নি, সেটা পরবর্তী তিন কর্মদিবসের মধ্যে ফেডারেশনকে জানাতে বলা হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা আছে এবং আদালতের প্রতি অনুগত। আমি এখনো কোনো কাগজপত্র হাতে পাইনি। যদি এ সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র পাই তাহলে আমাদের কার্যনির্বাহী কমিটির সব সদস্য এবং আইনজীবীকে নিয়ে বসব। এরপর তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। আমি একা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারব না।’

আদালতের সিদ্ধান্তে খুশি হয়েছেন মানস। আজ তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘আমি ন্যায্য বিচার পেয়েছি। এমনিতেই আমি চট্টগ্রামে নিয়মিত অনুশীলন করছি। আশা করি ফেডারেশন আমাকে জাতীয় দলে সুযোগ দেওয়ার ব্যাপারে সহযোগিতা করবে।’ একই সুরে কথা বলেছেন মৌমিতা, ‘আদালতের এই সিদ্ধান্তে আমার আস্থা আছে। এখন দেখার অপেক্ষায় আছি ফেডারেশন আমাদের জন্য কি ব্যবস্থা নেয়।’