তাহলে গেইলের নাম কীভাবে এল বিপিএল ড্রাফটে?

বিপিএলে আসছেন না গেইল? প্রথম আলো ফাইল ছবি
বিপিএলে আসছেন না গেইল? প্রথম আলো ফাইল ছবি
ক্রিস গেইল বলছেন, তিনি জানেনই না বিপিএলের নিলামে কীভাবে তাঁর নাম উঠেছে! ক্যারিবীয় ওপেনারের না খেলার সিদ্ধান্তে বিপাকে তাঁর দল চট্টগ্রাম। বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা করছে বিসিবি


ক্রিস গেইল এক বোমাই ফাটিয়েছেন! ১৭ নভেম্বর বিপিএল ড্রাফট থেকে ক্যারিবীয় বিস্ফোরক ওপেনারকে দলে টেনেছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। অথচ গেইল এখন বলছেন, বিপিএলের ড্রাফটে কে তাঁর নাম পাঠিয়েছে, কীভাবে তাঁর নাম নিলামে উঠল, কোন দলের হয়ে খেলবেন—কিছুই জানেন না! এও জানিয়ে দিয়েছেন, বছরের বাকি সময়টা কোথাও তাঁর খেলার ইচ্ছে নেই।

টুর্নামেন্ট শুরু হতে বেশি দেরি নেই। গেইলের এ সিদ্ধান্তে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবির চেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে তাঁকে দলে টানা চট্টগ্রাম। দলটির পরিচালক জালাল ইউনুস প্রথম আলোকে বললেন, ‘ড্রাফটে নাম দেখেই তো তাকে আমরা নিয়েছি। এখন গেইলের বিকল্পও হাতে নেই যে নেব। সে ড্রাফটের খেলোয়াড়। ড্রাফটে ‘এ’ প্লাস ক্যাটাগরির আর খেলোয়াড় নেই। আমার ভীষণ বিপাকে পড়ে গেছি।’

গেইল যেহেতু দাবি করছেন তিনি কিছুই জানেন না, তাহলে ড্রাফটে তাঁর নাম কীভাবে উঠল? আর এ অভিযোগ তিনি কেন ড্রাফটের ১০ দিন পরে তুলছেন? নিলামে খেলোয়াড়দের নাম আসে এজেন্টের মাধ্যমে। সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়ের সই দেওয়া চিঠি (কনসার্ন লেটার) পেলে তবেই ড্রাফটে নাম তোলা হয়। যে চিঠিটা সরবরাহ করে থাকে যাঁর যাঁর এজেন্ট। বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, গেইলের সই করা চিঠি পেয়েই তাঁকে নিলামে তোলা হয়েছে। আজ বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরীও সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছেন, সব প্রক্রিয়া মেনেই জ্যামাইকান ওপেনারকে নিলামে তোলা হয়েছে, ‘কোনো নির্দিষ্ট খেলোয়াড়ের ব্যাপারে বলব না। প্রক্রিয়াটা বলি, জাতীয় দলের কোনো খেলোয়াড়ের নাম যখন আসে, আমরা আদর্শ একটা প্রক্রিয়া মানি। খেলোয়াড় বা খেলোয়াড়ের এজেন্ট আগ্রহ দেখালে তার নাম চলে আসে। এটা একটা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়ে থাকে। আমরা যাচাই করে দেখেছি প্রক্রিয়া মেনেই সব করা হয়েছে।’

বিসিবি যদি সঠিক প্রক্রিয়া মেনে গেইলকে নিলামে তুলে থাকে তাহলে অভিযোগের তির তাঁর এজেন্টের দিকে যায়। বিপিএলে উইন্ডিজ ব্যাটসম্যানের নাম গতবার যে ভারতীয় এজেন্ট দিয়েছিলেন, এবারও তিনিই দিয়েছেন। গেইল যদি দাবি করে থাকেন, তিনি কিছুই জানেন না—তবে কি তাঁর সই নকল করে দিয়েছেন এজেন্ট? ক্যারিবীয় ওপেনারকে ১ লাখ ডলারে (বাংলাদেশি টাকায় ৮৫ লাখ টাকা) ‘এ প্লাস’ ক্যাটাগরি থেকে নিয়েছে চট্টগ্রাম। সূত্র জানিয়েছে, গেইলের ভারতীয় এজেন্ট নাকি এখন আরও বেশি টাকা দাবি করছেন। টাকার অঙ্কটা সামান্যও নয়, বর্তমান পারিশ্রমিকের দ্বিগুণেরও বেশি, যেটি বিসিবি দিতে রাজি নয়। নিলামের ১০ দিন পর গেইলের সিদ্ধান্তে ভীষণ বিপাকে পড়ায় ভবিষ্যতে এ ধরনের এজেন্টদের প্রশ্রয় না দেওয়া কিংবা কালো তালিকাভুক্ত করার দাবিও ভেতরে-ভেতরে উঠছে।

বিসিবির প্রধান নির্বাহী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট দলের সঙ্গে এজেন্টদের যোগাযোগ হচ্ছে। তিনি আশাবাদী, বিষয়টির সমাধান হয়ে যাবে।