'ক্রিকেট তার প্রিয় বন্ধুকে হারাল'

ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ও পেসার বব উইলিস। ছবি: এএফপি
ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ও পেসার বব উইলিস। ছবি: এএফপি

ইংল্যান্ডের ১৯৮১ অ্যাশেজ জয়ের সঙ্গে তাঁর নামটা জুড়ে গেছে চিরকালের মতো। ঝাঁকড়া চুল আর লম্বা রান আপের সঙ্গে আগ্রাসী পেস বোলিং দিয়ে ‘রোল মডেল’ হয়েছিলেন অনেক ইংলিশ তরুণের। সেই রোল মডেল বব উইলিসকে হারাল ইংল্যান্ড। গলার গ্রন্থির ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন বেশ কিছুদিন ধরেই। আজ আর পারলেন না। ৭০ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি এ পেসার। তাঁর পরিবার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছে।

বব উইলিসের পরিবারের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রিয় ববকে হারিয়ে আমাদের হৃদয় ভেঙে গেছে। সে ছিল অবিশ্বাস্য একজন স্বামী, বাবা, ভাই ও দাদা। আমরা তাকে ভীষণ মিস করব।’ ১৯৭১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাশেজে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন উইলিস। ১৯৮৪ সালে অবসর নেওয়ার আগে ইংল্যান্ডের জার্সিতে ৯০ টেস্টে ২৫.২০ গড়ে নিয়েছেন ৩২৫ উইকেট। তখন উইলিস ছিলেন ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি, আর সব মিলিয়ে ডেনিস লিলির পর দ্বিতীয়।

>

ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক কিংবদন্তি পেসার বব উইলিস মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরে গলার গ্রন্থির ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি

এখন জিমি অ্যান্ডারসন, ইয়ান বোথাম ও স্টুয়ার্ট ব্রডের পর টেস্টে ইংল্যান্ডের চতুর্থ সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হয়ে ফিরতে হলো উইলিসকে। ওয়ানডে খুব বেশি খেলা হয়নি। ৬৪ ওয়ানডেতে ২৪.৬০ গড়ে ৮০ উইকেট নিয়েছেন উইলিস। ১৯৮১ অ্যাশেজ সিরিজের তৃতীয় টেস্টে মাত্র ১৩০ রানের লক্ষ্যে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল কিম হিউজের অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ডের নিশ্চিত হারের এ ম্যাচটা অবিশ্বাস্যভাবে জিতিয়ে দেন উইলিস। সে ইনিংসে তাঁর বোলিং ফিগার ছিল ১৫.১-৩-৪৩-৮!

খেলোয়াড়ি জীবনেই শরীরের ওপর দিয়ে বেশ ধকল গেছে ইংল্যান্ডের সাবেক এ অধিনায়কের। ১৯৭৫ সালে দুই হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করেও খেলে গেছেন অনেক দিন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৩০৮ ম্যাচে নিয়েছেন ৮৯৯ উইকেট। অবসর নেওয়ার পর ধারাভাষ্য ও ক্রিকেট বিশ্লেষক হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেন উইলিস। মৃত্যুর আগে যুক্ত ছিলেন স্কাই স্পোর্টসের সঙ্গে।

ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) পক্ষ থেকে শোকবার্তায় বলা হয়, ‘ইংলিশ ক্রিকেটের কিংবদন্তি ৭০ বছর বয়সী বব উইলিসকে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বিদায় জানাচ্ছে ইসিবি। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ইংলিশ পেস আক্রমণের নেতৃত্ব দিয়েছে বব। অসাধারণ ক্যারিয়ারের জন্য তাকে সব সময়ই মনে রাখা হবে। বিশেষ করে ১৯৮১ সালে হেডিংলি টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো বোলিংয়ের জন্য। তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে ইসিবি। ক্রিকেট তার এক প্রিয় বন্ধুকে হারাল।’

উইলিসের মৃত্যুতে ইংল্যান্ডের সাবেক ফুটবলার গ্যারি লিনেকার টুইট করেন, ‘বব উইলিসের মৃত্যুর খবর শুনে খারাপ লাগছে। আমাদের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার।’ ভারতের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিসিআইয়ের বর্তমান সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির টুইট, ‘বব উইলিসের খবর শুনে খুব খারাপ লাগছে। তার আত্মা শান্তি পাক। ভারত তাকে মিস করবে।’ ভারতের ধারাভাষ্যকার ও বিশ্লেষক হর্শা ভোগলে টুইট করেন, ‘বব উইলিসের মৃত্যুতে ক্রিকেট বিশ্ব শোকগ্রস্ত। উঁচুমানের ক্রিকেটার, বিশ্লেষণে সোজাসাপ্টা কথা বলতেন।’