সাকিবের ঘটনায় আরও সাবধান বিসিবি

সাকিবের ঘটনা ভীষণ সতর্ক করেছে বিসিবিকে। প্রথম আলো ফাইল ছবি
সাকিবের ঘটনা ভীষণ সতর্ক করেছে বিসিবিকে। প্রথম আলো ফাইল ছবি

কদিন আগের ঘটনা। ঘটেছে কলকাতা টেস্টে। ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের (সিএবি) পক্ষ থেকে বাংলাদেশ দলের জন্য যে দুজন স্থানীয় লিয়াজোঁ দেওয়া হয়, তাঁদের একজনকে ম্যাচ চলার সময় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় ড্রেসিংরুমে ফোন ব্যবহার করতে দেখা যায় । তিনি শুধু ফোনে কথাই বলছিলেন না, খেলোয়াড়দের সঙ্গে ছবি-সেলফিও তুলছিলেন। বিষয়টি দ্রুত নজরে আসে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) দুর্নীতি দমন শাখার (এসিইউ)।

ভেতরে-ভেতরে বিষয়টি নিয়ে সিএবি ও বিসিসিআইয়ের মধ্যে বেশ হুলুস্থুল পড়ে যায়। ম্যাচ চলার সময় ড্রেসিংরুমে মোবাইল ফোন একেবারেই নিষিদ্ধ। তবুও কেন ওই ব্যক্তি ফোন নিয়ে ড্রেসিংরুমে ঢুকেছেন—এ অভিযোগে এসিইউ কঠোর পদক্ষেপ নিতে চেয়েছিল অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সিএবির হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত সেটি হয়নি। অভিযুক্ত ব্যক্তি যে সিএবির একজন অভিজ্ঞ সদস্য। তিনি ভুল করে এ কাজটি করেছেন। তাঁর ম্যাচ পাতানো বা কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না। নেহাতই অসচেতনতা থেকে মুঠোফোন নিয়ে ড্রেসিংরুমে ঢুকেছেন। সামান্য ভুলে কী কেলেঙ্কারি ঘটনাই না ঘটতে যাচ্ছিল!

শুধু কলকাতা টেস্টে নয়, এখন প্রতিটি ম্যাচেই ভীষণ সতর্ক ক্রিকেট বোর্ডগুলো। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) তো আরও ভাবিয়ে তুলেছে বিষয়টি। বিশেষ করে সাকিব আল হাসানের ঘটনায়। তাঁর মতো এত বড় তারকা, অভিজ্ঞ ক্রিকেটার যে ভুল করেছেন, যেটা অবিশ্বাস্যই মনে হয়েছে অনেকের কাছে! একজন জুয়াড়ি বারবার তাঁকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছে, তিনি সেটি ভুলে গেছেন দুর্নীতি দমন শাখাকে জানাতে! সাকিব এখন তাঁর ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করছেন। এক বছর নিষিদ্ধ হয়েছেন ক্রিকেট থেকে।

একজন সাকিবকে না পাওয়া বাংলাদেশের জন্য কত বড় ক্ষতি, সেটি এই ভারত সফরে দেখা গেছে। বারবার তাঁর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে দল। সাকিবের মতো আর কোনো ক্রিকেটার এমন ভুল যেন না করেন সে ব্যাপারে ভীষণ সতর্ক বিসিবি। আজ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান জানিয়েছেন, তাঁরা এখন ম্যাচ পাতানোর মতো অনৈতিক কাজের ব্যাপারে ভীষণ সোচ্চার। এবার বিপিএলের প্রতিটি দলের সঙ্গে দিচ্ছেন দুর্নীতি দমন শাখার সদস্য। নাজমুল বললেন, ‘এটি আগে থেকেই ছিল, এখন আরও বাড়ছে। যত দিন যাচ্ছে, তত বাড়ছে। এটা নিয়ে ওরাই (এসিইউ) সবকিছু করছে। আমাদের শুধু অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হবে। প্রতিটি দলের সঙ্গে যদি দুর্নীতি দমন শাখার লোক নিয়োগ করতে হয় সেখানে বেতন আছে, থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা এসব করতে রাজি হয়েছি। আমরা বলেছি যে যতটা সম্ভব নিরাপদ (খেলা) করতে চাই। ওরা আমাদের বলেছে, আমরা সেভাবেই এগোচ্ছি।’

দুর্নীতি দমন শাখায় কারা কারা কাজ করছেন, সেটিও জানালেন নাজমুল, ‘সাধারণত আমাদের দুর্নীতি দমন শাখায় যারা আছে, তারাই নিয়োগ দেবে। এ কাজে অভিজ্ঞদেরই সাধারণত নিয়োগ দেওয়া হয়। যারা আগে সেনাবাহিনীতে কাজ করেছে। প্রত্যেক দলকে আবার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যারা যারা স্পনসর হয়েছে তাদের দেওয়া হবে। এটা ওরা ওদের মতো করবে। এটার মধ্যে আমরা নাক গলাই না। এখানে কে কে কাজ করছে আমরা জানতেও চাই না। তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া উচিত। এটা স্বাধীন রাখাই ভালো।’