কোহলিকে হারাতে পারল না পুরো ওয়েস্ট ইন্ডিজ

ম্যাচ জেতানো ইনিংসের পর কোহলির বুনো উল্লাস। ছবি: এএফপি
ম্যাচ জেতানো ইনিংসের পর কোহলির বুনো উল্লাস। ছবি: এএফপি

ভারতকে হারানোর জন্য সর্বোচ্চটাই দিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্যাটসম্যানরা অম্লান বদনে ছক্কা হাঁকিয়েছেন, সীমানা পার করেছেন বল। বোলাররাও নিজেদের সব অস্ত্র প্রদর্শন করেছেন। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। বিরাট কোহলির আরেকটি ‘কোহলিময়’ ইনিংসের কাছে হেরেছে সফরকারীরা। ২০৭ তাড়া করতে নেমে ৬ উইকেটে জিতেছে ভারত। নিজের ষষ্ঠ ছক্কা হাঁকিয়ে যখন মাঠ ছাড়ছেন কোহলি, ম্যাচের তখনো ৮ বল বাকি।

টি-টোয়েন্টিতে অবিশ্বাস্য এক রেকর্ড রয়েছে রোহিত শর্মার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চারবার সেঞ্চুরি করেছেন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রানও (২৫৪৭) তাঁর। কিন্তু আজকের পর তাঁর চেয়ে মাত্র ৩ রান পিছিয়ে থাকা কোহলি যে আরও ভয়ংকর সেটা বোঝা যায় একটি সহজ পরিসংখ্যানে। রোহিতের চেয়ে ২৬ইনিংস কম খেলেই সঙ্গীর ঘাড়ের ওপর নিশ্বাস ফেলছেন কোহলি। আর রান তাড়া করায় কোহলির চেয়ে সেরা ক্রিকেট ইতিহাসেই হয়তো আর কেউ ছিলেন না কখনো। আজ হায়দরাবাদে তাঁর ৫০ বলের ৯৪ রানের ইনিংস আরও একবার সে কথা জানিয়ে দিল।

২০৮ রানের লক্ষ্য। দলীয় ৩০ রানে ফিরে গেছেন রোহিত। অন্যদিকে লোকেশ রাহুল রান তোলার গতি ধরে রাখলেও ধীরে এগোচ্ছিলেন কোহলি। প্রথম ২০ বলে মাত্র ২০ করেছিলেন। এমন অবস্থাতেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের সঙ্গে একটু ঝামেলা বেঁধেছিল কোহলির। রান নিতে দৌড়ানোর সময় ধাক্কা লাগা নিয়ে তর্ক আর এ নিয়ে উইন্ডিজ পেসারদের হুমকি ধামকি একদম সহ্য হয়নি কোহলির। সেই যে খেপলেন, এর পর প্রতিটি চার-ছয় এমনকি সিঙ্গেল ডাবলসেও শরীরী ভাষায় হুংকার ছেড়েছেন কোহলি। ৬ চার ও ৬ ছক্কার ইনিংসের শেষ ৩০ বলে নিয়েছেন ৭৪ রান। রাহুলের পর অন্য প্রান্ত থেকে বলার মতো কোনো সহযোগিতা না পাওয়ার পরও ইনিংসের শেষ অর্ধেকে ভারতের জয় নিয়ে কোনো সন্দেহ জাগতে দেননি কোহলি।

এক, দুই রান আর সুযোগ পেলেই বাউন্ডারি বের করে নিতে কবজির সর্বোচ্চ ব্যবহারে উইন্ডিজ বোলারদের নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছেন। অনায়াসে লং অফের ওপর দিয়ে তুলে মেরেছেন, মিড উইকেটের ওপরে আছড়ে ফেলেছেন। তাঁর কারণে ৪০ বলে ৬২ রান তুলেও আড়ালে চলে গেছেন রাহুল। শেষ দিকে বরং ওয়েস্ট ইন্ডিজের রানটা কমই মনে হচ্ছিল। রান আরেকটু বেশি হলেও যে ক্যারিয়ার সেরা রান অপরাজিত ৯৪-এ থামতে হতো না কোহলিকে। আজ হয়তো প্রথম সেঞ্চুরিটাও পেয়ে যেতেন ভারত অধিনায়ক। বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিশ্রামের পর ফিরেই দলের জয় এনে দেওয়া এক ইনিংস খেললেন।

আজ থেকে নতুন চালু হওয়া নো বলের নিয়মও কিছুটা ভূমিকা রেখেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাজে পারফরম্যান্সে। তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে নো বল দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এ ম্যাচে সেটা তিনবার কাজে লেগেছে ভারতের।

এর আগে এভিন লুইস (১৭ বলে ৪০), শিমরন হেটমায়ারের (৪১ বলে ৫৪ রান) এনে দেওয়া ভিত্তি কাজে লাগিয়েছিলেন নতুন অধিনায়ক কাইরন পোলার্ড (১৯ বলে ৩৭) ও সাবেক অধিনায়ক জ্যাসন হোল্ডার (৯ বলে ২৪*)।কিন্তু কোহলির দিনে ২০৭ রানও যে ছোট লক্ষ্য!