মেসির হ্যাটট্রিকের দিনে জাপানি মেসিকে দুয়ো ন্যু ক্যাম্পের

দল হারলেও ভালো খেলেছেন কুবো। ছবি: এএফপি
দল হারলেও ভালো খেলেছেন কুবো। ছবি: এএফপি

গতকাল আরও একবার ন্যু ক্যাম্প রাঙিয়েছেন মেসি। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে টপকে লা লিগার সর্বোচ্চ হ্যাটট্রিকের মালিক হয়ে গেছেন লিওনেল মেসি। অধিনায়কের আলোকছটায় মায়োর্কাকে ৫-২ গোলে উড়িয়ে লিগের শীর্ষস্থান বুঝে নিয়েছে বার্সেলোনা। একদিকে যখন মেসির জন্য গান গাইছিল ন্যু ক্যাম্পের দর্শকেরা। মাঠের অন্য প্রান্তে বল ছুঁলেই দুয়ো শুনতে হয়েছে জাপানি মেসিকে।

তাকেফুসো কুবোর গল্পটা বেশ চমকপ্রদ। মাত্র ১১ বছর বয়সেই পায়ের ছন্দে বার্সেলোনার কোচদের মুগ্ধ করে ফেলেছিলেন জাপানি এই ফুটবলার। বার্সেলোনা বিখ্যাত লা মেসিয়াতে নিয়ে এসেছিল তাঁকে। বাঁ পায়ের ফুটবলার, মাঠের ডান উইংয়ে খেলেন। পায়েও মন্ত্রমুগ্ধ করা ছন্দ, আর ডিফেন্ডারদের খাবি খাওয়ানো ড্রিবলিং স্কিল। জাপানি মেসি তকমা পেতে দেরি হয়নি। একদিন বার্সেলোনার জার্সিতে লা লিগার প্রতিপক্ষদের পরীক্ষা নেবেন, এ নিয়ে সন্দেহ ছিল না কারও। কিন্তু সেই কুবো যখন প্রথমবারের মতো ন্যু ক্যাম্পে পেশাদার ফুটবল খেলতে নামলেন, তখন তাঁর গায়ে মায়োর্কার জার্সি।

মায়োর্কার হয়ে কাল দারুণ খেলেছেন কুবো। বুদিমির দুটি গোল করলেও সদলটির সেরা খেলোয়াড় ছিলেন কুবো। প্রতিপক্ষের সেরা খেলোয়াড়কে সম্মান করতে কখনোই বাঁধে না বার্সা সমর্থকদের। কিন্তু কুবোর গায়ের জার্সিটা পাকাপাকিভাবে মায়োর্কার হলেও কাল হয়তো কুবোকে ন্যু ক্যাম্পের দুয়ো শুনতে হতো না। কাল মায়োর্কার হয়ে খেললেও, জাপানি মেসি যে এখন পাকাপাকিভাবে রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়।

কুবোর মতো কিশোর ফুটবলারদের দলে টানায় অনিয়ম করায় দলবদলে নিষেধাজ্ঞা জুটেছিল বার্সেলোনার। আর কিশোর সব ফুটবলারদের নিজ নিজ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। জাপানে ফিরে যেতে হয়েছিল কুবোকে। এ মৌসুমের শুরুতে ১৮ ছোঁয়ার পর কুবোর আবার ইউরোপে আসার সুযোগ সৃষ্টি হয়। বিস্ময়করভাবে বার্সেলোনা সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ ছোঁ মেরে নিয়ে গেছে তাঁকে। গতকাল বার্সেলোনার বিপক্ষেই কুবো দেখিয়েছেন কত বড় ভুল ছিল বার্সেলোনার সে সিদ্ধান্ত। এ নিয়ে কালও সমর্থকেরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্লাবের পরিচালকদের ধুয়ে দিয়েছেন। আর মাঠে সে ক্ষোভটা উগরে দিয়েছেন কুবোর দিকে।

ম্যাচে বেশ কয়েকবারই দুয়ো শুনতে হয়েছে কুবোকে। এ নিয়ে অবশ্য মনে কোনো দুঃখ নেই তাঁর। একসময় বার্সেলোনার জার্সি গায়ে চাপানো কুবো ব্যাপারটি দেখছেন পেশাদারি চোখ দিয়ে, ‘ওদের (দর্শকের) দুয়ো দেওয়ার অধিকার আছে। আমিই রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এক দিক থেকে এটাই আমার প্রাপ্য। কিন্তু এর মাঝেও কিছু মানুষ আমাকে হাততালি দিয়ে শক্তি জুগিয়েছে। ওরা আমাকে আর একজজন ১৮ বছরের ছেলে যে ভালো কিছু করতে পারত, এমন কিছু ভাবে না। বরং আমাকে এখন প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখে। আমি এতে খুশিই।’