সোনা নিয়েই ফিরছেন সৌম্যরা

টানা দ্বিতীয়বার এসএ গেমসে সোনা জিতলেন বাংলাদেশ পুরুষ ক্রিকেট দল। ছবি: প্রথম আলো
টানা দ্বিতীয়বার এসএ গেমসে সোনা জিতলেন বাংলাদেশ পুরুষ ক্রিকেট দল। ছবি: প্রথম আলো

৯ বছর আগের মিরপুরের স্মৃতিটাই ফিরে এল কাঠমান্ডুর কীর্তিপুরে। ২০১০ সালে এসএ গেমসে প্রথম সোনা জিতেছিল বাংলাদেশ। আজ আরেকটি সোনালি মুহূর্ত উপহার দিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। শ্রীলঙ্কাকে ৭ উইকেটে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো এসএ গেমসে সোনা জিতল বাংলাদেশ পুরুষ ক্রিকেট দল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাফল্যখরায় ভুগতে থাকা বাংলাদেশ অনেক দিন পর কিছুটা হলেও পেল আনন্দের উপলক্ষ।

এসএ গেমসের ফাইনালের আগে একটা শক্তির পরীক্ষা হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার। কাল সে ম্যাচে ব্যাটিং বা বোলিং সব দিক থেকেই হতাশ করেছিল দল। কাল শ্রীলঙ্কার ১ উইকেটের বেশি না নিতে পারায় বোলারদেরই বেশি সমালোচনা শুনতে হয়েছিল কাল। সোনা জয়ের ম্যাচে বোলাররা হতাশ করেননি, নিজেদের কাজটা ঠিকভাবেই করতে পেরেছেন। ফাইনালে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামা শ্রীলঙ্কাকে ১২২ রানের বেশি তুলতে দেননি হাসান-তানভীররা।

১২৩ রানের লক্ষ্য পেরোতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। সাইফ হাসান-সৌম্য সরকারের ওপেনিং জুটি এনে দেয় ৪৭ বলে ৪৪ রান। লক্ষ্যটা বড় নয়, তাড়াহুড়োর কোনো দরকার নেই; এগোতে হবে দেখে-শুনে—টিম ম্যানেজমেন্টের এই বার্তায় হয়তো সৌম্য এগিয়েছেন কিছুটা শ্লথ গতিতে। মেন্ডিসের বলে আউট হওয়ার আগে করেছেন ২৮ বলে ২৭ রান। ৯৬.৪২ স্ট্রাইকরেট ঠিক সৌম্যসুলভ নয়। তবে দেখেশুনে খেলার কাজটা তিনি ভালোভাবেই করেছেন। তাঁর সঙ্গী সাইফ ৩৩ রানের বেশি এগোতে পারেননি রানআউটে কাটা পড়ায়। শুরুটা ভালো হওয়ায় বাংলাদেশকে আর হোঁচট খেতে হয়নি। অধিনায়ক নাজমুলের অপরাজিত ৩৫ রানের অধিনায়কসুলভ ইনিংস ১২ বল বাকি থাকতে বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে দুর্দান্ত এক জয়। হিমালয়ের পাদদেশে এনে দিয়েছে সোনালি হাসি।

ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কার শুরুটাও বেশ ভালো হয়েছিল। প্রথম ৪ ওভারে বাংলাদেশের বোলাররা কোনো প্রভাব ফেলতে পারেননি ম্যাচে। কিন্তু পঞ্চম ওভারে অধিনায়ক নিশান মাদুশঙ্কাকে ফিরিয়ে দিয়ে দলকে ম্যাচে ফেরান সুমন খান। ৩৬ রান ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। পরের ওভারে জোড়া আঘাত হানেন হাসান মাহমুদ। বাংলাদেশি দুই পেসারের সুবাদে ৫ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা অনূর্ধ্ব-২৩ দল। পথ হারানো লঙ্কানরা এরপর ইনিংস মেরামতে মন দিয়েছে। কিন্তু ১০ম ওভারে ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কার বিদায় নিশ্চিত করেছে আজ আর বড় স্কোর পাওয়া সম্ভব নয় লঙ্কানদের! ২৪ বলে ২২ রান করে ফিরেছেন নিশাঙ্কা। একমাত্র শাম্মু আহসানই পেরেছেন বলের চেয়ে বেশি রান (২০ বলে ২৫) তুলতে। ইনিংসের শেষ বলে অলআউট হওয়া লঙ্কানরা শেষ ৬ ওভারে তুলতে পারে ৩৫ রান। ৪ ওভারে ২০ রানে ৩ উইকেট পেয়েছেন হাসান মাহমুদ। ১৮ রানে ১ উইকেট মেহেদী হাসানের। কৃপণ বোলিং করেছেন সুমন খানও, মাত্র ১৬ রানে ১ উইকেট তাঁর।

বোলাররা ভালো করেছেন, ব্যাটসম্যানরা তাঁদের চেষ্টা বৃথা যেতে দেননি। কাঠমান্ডুতে গৌরবের পাতাকাটা উড়িয়েছেন ঠিকই।