আরব আমিরাতের যে পেসার খেলতে পারেন আইপিএলে

আরব আমিরাতের এই পেসার কি সুযোগ পাবেন আইপিএলে? ছবি: দ্য ন্যাশনাল
আরব আমিরাতের এই পেসার কি সুযোগ পাবেন আইপিএলে? ছবি: দ্য ন্যাশনাল

১৯ ডিসেম্বর আগামী আইপিএলের নিলাম হবে কলকাতায়। ক্রিস লিন, প্যাট কামিন্স বা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলদের নিয়ে যে টানাটানি হবে সেটা জানা। তবে নিলামে এরা ছাড়াও আকর্ষণ ছড়াতে পারে আরও বেশ কটি নাম। এরই মাঝে ১৫ বছর বয়সী আফগান চায়নাম্যান নুর আহমেদকে নিয়ে আগ্রহ জন্মেছে। বয়সে তার দ্বিগুণ বয়সী এক পেসারও কিন্তু চমক জাগাতে পারেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতের জহুর খান হতে পারেন এবারের আইপিএলের তুরুপের তাস।

আইপিএলে এর আগেও আরব আমিরাতের খেলোয়াড়কে দলে টেনেছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। ২০১৭ সালে চিরাগ সুরিকে নিয়েছিল গুজরাট লায়ন্স। তবে কোনো ম্যাচেই নামা হয়নি সুরির। এবার সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে তিন ক্রিকেটার সুযোগ পেয়েছেন আইপিএলে। সিপিএলে নজর কারা যুক্তরাষ্ট্রের পেসার আলি খান ও স্কটল্যান্ডের ব্যাটসম্যান জর্জ মানসের সঙ্গে নাম আছে জহুরের। আর সুযোগ পেলে জহুরের ক্ষেত্রে সুরির মতো বসে থাকার সুযোগ নেই। ২০ লাখ রুপির ভিত্তি মূল্যের এই পেসার যে এর মাঝেই বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে নাম কামিয়েছেন।

কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগের সবচেয়ে কিপটে বোলার ছিলেন জহুর। আবুধাবিতে টি-টেন লিগেও দারুণ করেছেন এই পেসার। আইপিএলেও সুযোগ মেলার অপেক্ষায় জহুর, ‘আমি এখনো আমার লট নম্বর জানি না। তবে নিলাম অবশ্যই দেখব। যদি সুযোগ পাই তাহলে এর চেয়ে বড় কিছু আর হয় না। আইপিএলের চেয়ে বড় আর কোনো টি-টোয়েন্টি লিগ নেই যেখানে খেলোয়াড়রা খেলতে চায়।’

জহুরকে নিলামে রাখার জন্য আইপিএল কর্তৃপক্ষই আগ্রহ দেখিয়েছে। টি-টেন লিগে লেন্ডল সিমন্সের বিপক্ষে এক স্পেল দিয়েই সবার নজর কেড়েছেন জহুর। ডেকান গ্ল্যাডিয়র্সের বিপক্ষে ভয়ংকর ফর্মে ছিলেন সিমন্স। মাত্র ৩৯ বলে ৭০ করা সিমন্সের স্ট্রাইকরেট সেদিন আরও বেশি হতো পারত যদি না জহুর না থাকতেন। আর আমিরাতের পেসারের টানা বলে কোনো রান নিতে পারেননি সিমন্স। পরে জহুরের বলেই আউট হয়েছেন আইপিএলের নিয়মিত মুখ সিমন্স। সে ম্যাচে জহুরের ১২ বলের ১০টিই ছিল ডট।

জহুরের পারফরম্যান্স মনে ধরেছে সে ম্যাচে তাঁর অধিনায়ক শেন ওয়াটসনের, ‘জহুর খুবই ভালো মানের বোলার। লেন্ডল সিমন্স বিশ্ব মানের খেলোয়াড়। কিন্তু সে ওর বলে ব্যাট ছোঁয়াতেও পারেনি।’ দুর্দান্ত ইয়র্কারের সঙ্গে বুদ্ধিদীপ্ত বাউন্সার দিতে পারেন এই পেসার। সিমন্সকে যদিও বোকা বানিয়েছেন অন্যভাবে, ‘কানাডায় আমার দলে ছিল সিমন্স। সে জানত আমার ভালো ইয়র্কার আছে। আমি তাই ইয়র্কারের জন্য মাঠ সাজিয়ে স্লো বাউন্সার দিয়েছি। আমি সিমন্সের সঙ্গে খেলছিলাম!’

আইপিএলের নিয়মিত দুই মুখ ওয়াটসন ও সিমন্সকে মুগ্ধ করলেও জহুরের পথে বাধা হয়ে আছে অন্য একটি ব্যাপার। এখন আরব আমিরাতের জাতীয় দলে খেললেও তাঁর জন্ম যে পাকিস্তানে। আপাতত সে তথ্যটা মাথায় না এনে নিজের দক্ষতার বর্ণনা দিয়েছেন জহুর; যেন আইপিএলের দলগুলো তাঁর দক্ষতা চিন্তা করে হলেও দলে টানেন তাঁকে,‘ আমি পাকিস্তানে টেপ টেনিসে খেলেছি, অনেক কিছু শিখেছি। আর আরব আমিরাতে সীমানা অনেক ছোট, ওখানে অনেক ভয়ংকর ব্যাটসম্যান আছে যারা নেমেই মারতে শুরু করে। তাই আমাকে অনেক নতুন কৌশল শিখতে হয়েছে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছি। আমার কোচেরা আমাকে দিয়ে অনেক ইয়র্কার, স্লো ইয়র্কার, ওয়াইড ইয়র্কার করিয়েছেন। আমি সব বৈচিত্র্য নিজে নিজে শিখেছি। রাত ৯টায় খেলার কারণে শিশিরে ভেজা বলে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা দরকার হয়। যদি কোনো বল ১৪০ কিলোমিটারে করি, পরেরটা ১২০ কিলোমিটারে বাউন্সার দেব। পরের বলটা হয়তো ১১০ গতিতে। সিমন্সকে আউট করা বলটা ১০৫-এর ছিল। আমি চেষ্টা করছি। আমার তিনটা ভিন্ন স্লোয়ার বাউন্সার আছে। আমি আত্মবিশ্বাসী।’ দ্য ন্যাশনাল অনুযায়ী।