বিশ্ব রেকর্ড দিয়ে পাকিস্তানের টেস্ট প্রত্যাবর্তন উদ্যাপন

ইতিহাসে নাম লেখানোর পর আবিদের উল্লাস। ছবি: এএফপি
ইতিহাসে নাম লেখানোর পর আবিদের উল্লাস। ছবি: এএফপি
>
  • শ্রীলঙ্কা: ৩০৮/৬
  • পাকিস্তান: ২৫২/২
  • সেঞ্চুরি পেয়েছেন পাকিস্তানের আবিদ আলী ও বাবর আজম

রেকর্ড যে করতে যাচ্ছেন সেটা হয়তো চা বিরতির সময়ই জেনে গিয়েছিলেন আবিদ আলী। শেষ সেশনে যেভাবে খোলসবন্দী হলেন, তাতে অমনই মনে হচ্ছিল। একের পর এক বল হচ্ছে, আর সেটা নক করেই পার করে দিচ্ছেন, রান নেওয়ার খুব একটা চেষ্টা দেখা যাচ্ছে না। মিড উইকেটে দিয়ে মারা এক চারে গুমোট কাটল, পরের বলেই সেঞ্চুরি পেয়ে গেলেন আবিদ। টেস্ট অভিষেকেই সেঞ্চুরি, আর তাতেই হলো বিশ্ব রেকর্ড। প্রাণহীন এক ড্র হওয়া ম্যাচের বাড়তি প্রাপ্তি এটি।

টেস্ট অভিষেকে সেঞ্চুরির রেকর্ড এমন কিছু অনন্য নয়। প্রায় প্রতিটি দেশেরই কেউ না কেউ এটা করেছেন। ওয়ানডে অভিষেকে কাজটা কঠিন হলেও সেটাও কম দেখা যায়নি। কিন্তু কোনো ব্যাটসম্যান টেস্ট ও ওয়ানডে দুই অভিষেকেই সেঞ্চুরি করছেন, এমন কিছু এর আগে দেখা যায়নি। পাকিস্তানের ৩২ বছর বয়সী ওপেনার আবিদের সুবাদে সেটাই হলো। দেশের মাটিতে টেস্ট খেলার আনন্দে বিশ্ব রেকর্ডকে বাড়তি উপহার হিসেবে পেল পাকিস্তান।

চার দিন বৃষ্টি-বাধার পর আজ রাওয়ালপিন্ডিতে সূর্য হেসেছে। চার দিনের গড়া ২৮২ রানের সঙ্গে আর ২৬ যোগ করেই ইনিংসের সমাপ্তি ডেকেছে শ্রীলঙ্কা। সেঞ্চুরি থেকে ১৩ রান দূরে থাকা ধনঞ্জয়া ডি সিলভা সেঞ্চুরি (১০২*) পেরোতেই পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়ে দিয়েছেন দিমুথ করুণারত্নে। ব্যাটিং অনুশীলনের সুযোগ পায়ে ঠেলেছেন শান মাসুদ। শূন্য হাতে বিদায় নিয়েছেন ইনিংসের শুরুতে নামা এই ব্যাটসম্যান। অন্য ওপেনার আবিদ সে ভুল করেননি।

প্রথমে আজহার আলীকে নিয়ে ৮৭ রানের জুটি গড়েছেন। পরে দলের সেরা ব্যাটসম্যান বাবর আজমের সঙ্গে গড়েছেন অপরাজিত ১৬২ রানের জুটি। জুটির শুরুতে আবিদ নিজেই ছিলেন চালকের ভূমিকায়। চার বিরতির সময় ৯১ রান নিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন আবিদ। তখনই আলোচনা শুরু রেকর্ড কি করতে পারবেন আবিদ? মার্চে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ওয়ানডে অভিষেকের দিনে সেঞ্চুরি করেছিলেন এই ওপেনার। এটাই হয়তো চাপে ফেলে দিয়েছিল তাঁকে।

১৫৫ রানে ৯০ ছোঁয়া আবিদ সেঞ্চুরি পেয়েছেন ১৮৩তম বলে। সেটাও ৯৫ থেকে ১০০-তে গিয়েছেন দুই বলে। আবিদ যখন নব্বই ছুঁয়েছেন, তাঁর সঙ্গী বাবর ছিলেন ৪২-এ। আবিদ ৯৫ রান তুলতে তুলতেই ৭৩ রানে চলে গেছেন বাবর। আবিদের সেঞ্চুরির পরও রান তোলার দায়িত্ব নিজেই বুঝে নিয়েছেন। দারুণ সব স্ট্রোকে ১২৮ বলে সেঞ্চুরি বুঝে নিয়েছেন। শেষ সেশনে ১৮ ওভারে ৭৫ রান তুলেছে পাকিস্তান। এর ১৮ এসেছে আবিদের (১০৯) ব্যাট থেকে। ১০২ রানে অপরাজিত থাকা বাবর তুলেছেন ৫৫ রান। বাবরের সেঞ্চুরির পরই ম্যাচের সমাপ্তি টেনেছেন দুই অধিনায়ক। ২ উইকেটে ২৫২ রান তুলেছিল পাকিস্তান।

ইতিহাসে নাম লেখানো এক ইনিংসের পর বাবরকে ধন্যবাদ দিয়েছেন আবির, ‘কী বলতে পারি আমি? শুধু আল্লাহকে ধন্যবাদ জানাই। আল্লাহকে ধন্যবাদ দিয়ে শেষ করতে পারব না। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে একটু চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু বাবরকে ধন্যবাদ। সে বারবার বলেছে, আমার সময় আসছে। ওকে ধন্যবাদ দিয়ে শেষ করতে পারব না।’