ভুটান পারে, বাফুফে পারে না

এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ বাছাইপর্বের এই ম্যাচে ভুটানের কাছে হেরে যায় বাংলাদেশ। বাফুফে ফাইল ছবি
এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ বাছাইপর্বের এই ম্যাচে ভুটানের কাছে হেরে যায় বাংলাদেশ। বাফুফে ফাইল ছবি
>ঘরোয়া টুর্নামেন্টে বাফুফে-ফর্টিজ একাডেমি খেলবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। কিন্তু কয়েক মাসের ব্যবধানে সেই পরিকল্পনা থেকে সড়ে এসেছে বাফুফে


বিশ্ব ফুটবলে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোর উন্নতির পথে নতুন প্যাকেজ—বয়সভিত্তিক জাতীয় দল ও একাডেমি দলকে ঘরোয়াতে খেলিয়ে তৈরি করে নেওয়া। প্রতিবেশী ভারতই অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ‘ইন্ডিয়ান অ্যারোজ’ নামে আই লিগে খেলায়। ভুটান তো এই পথে হেঁটে প্রথমবারের মতো এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বে বাংলাদেশকে হারিয়েই দিয়েছে।

এর সবচেয়ে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তাজিকিস্তান, মধ্য এশিয়ার দেশটি ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলার লক্ষ্য নির্ধারণ করে এই পরিকল্পনায় হেঁটে খেলে ফেলেছে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ। তাদের অনূর্ধ্ব-১৯ দলটিও টানা দ্বিতীয়বার গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে খেলছে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ।

বাফুফে-ফর্টিজ একাডেমির অনূর্ধ্ব-১৮ দলকে ঘরোয়া টুর্নামেন্টে (ফেডারেশন ও স্বাধীনতা কাপ) খেলার সুযোগ করে দিয়ে মডেলটা অনুসরণ করার ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনও। বাফুফের সেই পরিকল্পনার কথা ভুলে যেতে কয়েক মাসও লাগল না। ১৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া ফেডারেশন কাপে নেই বাফুফে একাডেমি।

একাডেমি নিয়ে নিজেদের পরিকল্পনার কথা বাফুফে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছিল ২৬ আগস্ট। ডিসেম্বরে আসতেই পরিকল্পনা থেকে সড়ে যাওয়া। কিন্তু কেন? মূলত বাফুফে একাডেমির ক্লাব লাইসেন্স নেই বলেই এএফসি এই পরিকল্পনা গ্রহণ করেনি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ, ‘এএফসির সঙ্গে এটি নিয়ে আলাপ আলোচনা করেছিলাম। কিন্তু তারা মানা করেছে। বাফুফের ক্লাব লাইসেন্স না থাকলে এটা খেলা যাবে না।’

ক্লাব লাইসেন্সের বিষয়টি যেহেতু বাফুফের হাতেই, তাহলে কেন করা হলো না? এই বছর তা বাফুফে চাইনি বলেই জানিয়েছেন আবু নাঈম, ‘আমরা এই বছর চাইনি। এখন আমরা চাচ্ছি আগামী মৌসুমের বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে খেলুক বাফুফে একাডেমি।’

এএফসি বা বাফুফে ক্লাব লাইসেন্স, যে দোহাই-ই দিক না বাফুফে, আগে বাফুফের হাতে খেলার মতো দল তো থাকতে হবে। এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ ও অনূর্ধ্ব-১৯ টুর্নামেন্ট খেলে আসার পরেই বাফুফে একাডেমির কার্যক্রম বন্ধ। অনূর্ধ্ব-১৬ দলের খেলা শেষ হয়েছে সেপ্টেম্বরে ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলের খেলা শেষ হয়েছে নভেম্বরে। অনূর্ধ্ব-১৬ দলের খেলোয়াড়দের নিয়ে এর পরে কেবল ৭ দিনের একটা কার্যক্রম ছিল একাডেমির।

নেপালে অনুষ্ঠিত সদ্য সমাপ্ত এসএ গেমসের পাঁচ দলের মধ্যে তৃতীয় হয়েছে বাংলাদেশ। গেমসের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ভুটানের কাছেও হেরেছে বাংলাদেশ। স্বাভাবিকভাবে সবাই যখন পরিকল্পনা করে এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে মানসম্মত খেলোয়াড় তৈরি করার কার্যত কোনো পরিকল্পনা নেই বাংলাদেশের। কিন্তু সবাই যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, এভাবে আর বেশি দিন চালিয়ে নেওয়া যাবে না বলে মনে করেন ফুটবল বোদ্ধারা। ভুটানকে দেখেও যদি চোখ খোলে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের।