জিদানের রিয়াল হাল ছাড়ে না

প্রতিপক্ষের গোলের সামনে হেড করছেন কোর্তোয়া, এমন দৃশ্য দেখার কথা কে কবে ভেবেছেন। ছবি: রিয়াল মাদ্রিদ টুইটার
প্রতিপক্ষের গোলের সামনে হেড করছেন কোর্তোয়া, এমন দৃশ্য দেখার কথা কে কবে ভেবেছেন। ছবি: রিয়াল মাদ্রিদ টুইটার

ভ্যালেন্সিয়ার মাঠে ম্যাচের তখন অন্তিম মুহূর্ত। ৯০ মিনিট শেষ হয় বেশ আগেই। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটের খেলা। করিম বেনজেমার এনে দেওয়া কর্নারে লাফিয়ে উঠলেন ডি-বক্সের ভেতরে থাকা সবাই। কিন্তু বলে মাথা ছোঁয়াতে পারলেন গোলবার ছেড়ে আসা থিবো কোর্তোয়াই। এ গোলরক্ষকের জোরালো হেড ঠেকিয়ে দিলেন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক। কিন্তু ফিরতি বলটি ঠিকই চলে এল বেনজেমার সামনে। এ মৌসুমে দারুণ ফর্মে থাকা বেনজেমার শট ঠিকই আশ্রয় নিল জালে। ১-১! শেষ মুহূর্তের গোলে ভ্যালেন্সিয়ার মাঠ থেকে পয়েন্ট নিয়ে ফিরল রিয়াল মাদ্রিদ।

গোলটি সোনার চেয়েও দামি হয়ে উঠেছে দুটি কারণে। এক. এ গোলের ফলেই লিগে বার্সেলোনার সমান পয়েন্ট এখন রিয়ালের। আর সপ্তাহের মাঝেই এ মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকো। ন্যু ক্যাম্পে এমনিতেই চোট জর্জর এক দল নিয়ে যেতে হচ্ছে রিয়ালকে। বার্সেলোনার মুখোমুখি হওয়ার আগে হারের স্বাদ নিয়ে গেলে মানসিকভাবেও পিছিয়ে থাকত জিনেদিন জিদানের দল। এখন উল্টো ৯৫ মিনিটের গোলের ড্র-ই রিয়ালকে চাঙা করে দিচ্ছে ১৮ ডিসেম্বরের বহু আকাঙ্ক্ষিত এল ক্লাসিকোর জন্য।

কাল প্রথমার্ধে প্রাধান্য ছিল রিয়াল মাদ্রিদের। কিন্তু বেনজেমা, রদ্রিগো ও টনি ক্রুসের শটগুলো আকাঙ্ক্ষিত ফল এনে দিচ্ছিল না। ভ্যালেন্সিয়াও পাল্টা আক্রমণে রিয়াল গোলরক্ষক কোর্তোয়ার পরীক্ষা নিয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধে স্বাগতিক দলই ছড়ি ঘুরিয়েছে। কোর্তোয়া অন্তত দুবার রিয়ালকে বাঁচিয়েছেন। কিন্তু ৭৮ মিনিটে কার্লোস সোলেরের গোল ঠেকানো সম্ভব হয়নি তাঁর পক্ষে। গোলের জন্য মরিয়া জিদান মদরিচকে তুলে নামিয়েছিলেন লুকা ইয়োভিচকে। এই স্ট্রাইকার সমতাও এনে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। এরপরই আবার গোলের সুযোগ পেয়েছিল ভ্যালেন্সিয়া। আবারও রিয়ালকে বাঁচান কোর্তোয়া। পরের মুহূর্তেই সেই কোর্তোয়াই দলকে পয়েন্ট এনে দেওয়া সে গোল এনে দিয়েছেন।

সবার চোখেই গতকাল ম্যাচের সেরা ছিলেন কোর্তোয়া। তবে গ্লাভসের নয়, ম্যাচ শেষে নিজের মাথার কাজ নিয়েই কথা বলেছেন কোর্তোয়া, ‘আমি আমার উচ্চতাকে কাজে লাগিয়েছি। আমি দুই মিটার লম্বা এবং আমি কর্নারে গেলে প্রতিপক্ষ চিন্তায় পড়ে যায়। টনির কর্নার কাছের পোস্টে পড়ছিল, বলটা মাথার কাছে দেখে জোরেই হেড নিয়েছিলাম। বল বেনজেমার কাছে পড়ল আর সে গোল দিল।’

দলের এই হার না মানা মানসিকতায় মুগ্ধ জিদান, ‘কোর্তোয়া নিজেই কর্নারের সময় ওঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছ এবং এটা প্রমাণ করে সবার মধ্যে কতটা ক্ষুধা কাজ করছিল, আমরা হাল ছাড়ি না। এ সমতার জন্য অনেক কষ্ট করেছি আমরা। এটাই রিয়াল মাদ্রিদ, যারা কখনো হাল ছাড়ে না। তারা বিশ্বাস করে এটা করা সম্ভব এবং সেটা করেছে।’