আবেগই জায়গা দিল মুশফিককে...

ফক্স স্পোর্টসের টেস্ট দলে জায়গা পেয়েছেন মুশফিক। এএফপি ফাইল ছবি
ফক্স স্পোর্টসের টেস্ট দলে জায়গা পেয়েছেন মুশফিক। এএফপি ফাইল ছবি

ফক্স স্পোর্টস তাদের বর্ষ সেরা টেস্ট দল ঘোষণা করেছে। অবশ্য এ দল নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা জ্যাকব কুরিপ নিজেই স্বীকার করেছেন, যে কোনো একাদশ নিয়েই বিতর্ক থাকবে। এবং এটাই এসব একাদশ করার মজা। সে সঙ্গে এটাও বলছেন, এটাকে ফক্স স্পোর্টসের দল না বলে তাঁর নিজের একাদশ বলাটাই শ্রেয়।

কুরিপ ‘ফক্স স্পোর্টস নয় তার একাদশ’ বেছে নেওয়ার পেছনে কয়েকটি মানদণ্ড ঠিক করেছিলেন। প্রথমত পুরো দশকের অধিকাংশ সময় তাদের সক্রিয় থাকতে হবে। খেলা আকর্ষণীয়, প্রতিবেদকের আবেগ ও পরিসংখ্যান। এর মাঝে প্রথমটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

এই মানদণ্ড অনুযায়ী কুরিপ তথা ফক্স স্পোর্টসের টেস্ট দলটি হলো:

অ্যালিস্টার কুক (৮৮১৮ রান, ৪৬.৫১ গড়, ২৩ সেঞ্চুরি)
ডেভিড ওয়ার্নার (৭০০৯ রান, ৪৮.৩৩ গড়, ২৩ সেঞ্চুরি)
কুমার সাঙ্গাকারা (৪৮৫১ রান, ৬১.৪০ গড়, ১৭ সেঞ্চুরি)
স্টিভ স্মিথ (৭০৭২ রান, ৬৩.১৪ গড়, ২৬ সেঞ্চুরি)
বিরাট কোহলি (৭২০২ রান, ৫৪.৯৭ গড়, ২৭ সেঞ্চুরি)
এবি ডি ভিলিয়ার্স (৫০৫৯ রান, ৫৭.৪৮ গড়, ১৩ সেঞ্চুরি)
মুশফিকুর রহিম (২৮৬০ রান, ৪০.৮৫ গড়, ৬ সেঞ্চুরি)
রবিচন্দ্রন অশ্বিন( ২৫.৩৬ গড়ে ৩৬২ উইকেট, ২৭ বার ৫ উইকেট)
ডেল স্টেইন (২২.১৯ গড়ে ২৬৭ উইকেট, ১৫ বার ৫ উইকেট)
জেমস অ্যান্ডারসন (২৪.১৯ গড়ে ৪২৭ উইকেট, ২০ বার ৫ উইকেট)
কাগিসো রাবাদা (২২.৫০ গড়ে ১৮৩ উইকেট, ৪০.২ স্ট্রাইকরেট)

দ্বাদশ খেলোয়াড়: কেন উইলিয়ামন।

এ একাদশ নিয়ে যে বিতর্ক হবে সেটা কুরিপ স্বীকার করেছেন। এবং এটাও বলেছেন তাঁর একাদশে সবচেয়ে বিতর্কিত নির্বাচন মুশফিকুর রহিমের নির্বাচন। এবং বাংলাদেশি উইকেটরক্ষককে বেছে নিতে আবেগকে প্রাধান্য দিয়েছেন। কুরিপের ভাষ্যই জানিয়ে দেওয়া যাক।

‘একাদশের সবচেয়ে বিতর্কিত নির্বাচন। এ দশকের সেরা উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নির্বাচনে মুশফিকুর রহিমের নাম অনেকের মাথাতেই আসবে না। তাঁর সুযোগ পাওয়াটা একদিক থেকে প্রতীকী এবং অন্য দিক থেকে তিনি এটা অর্জন করেছেন। এ দশকে বাংলাদেশের মতো উন্নতি কেউ করেনি। এক সময় সবার জন্য অনায়াস জয়ের উপলক্ষ থাকা দলটি ঘরের মাঠে প্রবল শক্তি হয়ে উঠেছে, প্রতিপক্ষের মাঠেও লড়াকু। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় পেয়েছে। তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসানের সঙ্গে মুশফিকও এ পরিবর্তনে মূল ভূমিকা রেখেছেন। ওয়ার্নার ও কুকের একজনকে বাদ দিয়ে তামিমকে কখনো নেওয়া সম্ভব ছিল না। আর দল নির্বাচনের সময়টাতেই সাকিব নিষেধাজ্ঞা কাটাচ্ছেন।

তবে মুশফিককে নির্বাচন করার পেছনে শুধু আবেগই কাজ করেনি। এ দশকে উইকেটরক্ষকদের মাঝে রান সংগ্রহে তৃতীয় মুশফিক। অন্তত এক হাজার রান করেছেন এমন উইকেটরক্ষকদের মাঝে তাঁর চেয়ে ভালো গড় মাত্র তিনজনের। এবি ডি ভিলিয়ার্স (৫৯.৬৯ গড়ে ১৯৭০ রান), দীনেশ চাণ্ডিমাল (৪১.০৭ গড়ে ১৬০২) এবং বিজে ওয়াটলিং (৪২.৬০ গড়ে ৩১৯৫ রান)। ডি ভিলিয়ার্স ও চাণ্ডিমাল সব সময় উইকেট রক্ষা করেনি। ফলে আমার নির্বাচনে তারা সুযোগ পেতেন না উইকেটরক্ষক হিসেবে। এটা সত্যি, সে ক্ষেত্রে ওয়াটলিংকে বেছে নেওয়াই যুক্তিযুক্ত হতো। কিন্তু এতটা কাছাকাছি নির্বাচনে আবেগই জিতেছে।’

আবেগী ক্রিকেটার হিসেবে মুশফিকুর রহিমের বেশ নামডাক আছে। ফক্স স্পোর্টসের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদমাধ্যমের দশক সেরা একাদশে তাঁর সুযোগ পাওয়াতে কি না সেই আবেগই ভূমিকা রাখল একটু হলেও!