পাকিস্তান নিরাপদ নয় প্রমাণ করতে হবে বাংলাদেশকেই

টেস্ট খেলতে চাইলে পাকিস্তানেই যেতে হবে বাংলাদেশকে, এটা আজ নিশ্চিত করে দিয়েছে পাকিস্তান। ছবি: এএফপি
টেস্ট খেলতে চাইলে পাকিস্তানেই যেতে হবে বাংলাদেশকে, এটা আজ নিশ্চিত করে দিয়েছে পাকিস্তান। ছবি: এএফপি
>পাকিস্তান বোর্ড সভাপতি এহসান মানি বলে দিয়েছেন টেস্ট খেলতে চাইলে পাকিস্তানেই যেতে হবে বাংলাদেশকে। তাঁর চোখে নিরাপত্তার দিক থেকে ভারতের চেয়ে পাকিস্তান এখন বেশি নিরাপদ

বাংলাদেশের পাকিস্তান সফরটা খেলা মাঠে গড়ানোর আগেই জমে উঠেছে বেশ। ২০২০ এর শুরুটা পাকিস্তানে তিন টি-টোয়েন্টি ও দুই টেস্ট দিয়ে শুরু করার কথা বাংলাদেশের। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়েছে, পাকিস্তানে গিয়ে শুধু টি-টোয়েন্টি খেলতে আগ্রহী বাংলাদেশ। টেস্ট আগের মতোই নিরপেক্ষ কোনো ভেন্যুতে খেলতে চায় বিসিবি। এমন আলোচনা ক্ষুব্ধ করে তুলেছে পাকিস্তানকে। দেশটির প্রধান কোচ ও অধিনায়ক এ নিয়ে সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আর বোর্ড সভাপতি এহসান মানি বলে দিয়েছেন টেস্ট খেলতে চাইলে পাকিস্তানেই যেতে হবে বাংলাদেশকে।

পিসিবি চেয়ারম্যান মানি আজ সংবাদমাধ্যমে কড়া বার্তা পাঠিয়েছেন বাংলাদেশের প্রতি। সফলভাবে শ্রীলঙ্কা সিরিজ আয়োজনের পর বাংলাদেশকেও আমন্ত্রণ জানিয়ে দিয়েছেন এভাবে, ‘এখন থেকে পাকিস্তানের ঘরের ম্যাচের টেস্ট কোথায় হবে তা নিয়ে কারও মনেই কোনো ভুল ধারণা থাকা উচিত নয়। পাকিস্তানের সব ম্যাচ সেটা বাংলাদেশ হোক বা অন্য যে কেউ হোক, সেটা পাকিস্তানে হবে। আমি আশা করি বিসিবি এ ব্যাপারটা ভেবে দেখবে এবং পাকিস্তানে না আসার যে কোনো কারণ নেই সেটা মেনে নেবে।’

মাত্র তিন মাসের মধ্যে শ্রীলঙ্কাকে দুবার আতিথ্য দিয়েছে পাকিস্তান। এই শ্রীলঙ্কা দলের ওপরই সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিল। সেই দলই যদি পাকিস্তানে গিয়ে দুবার নিরাপদে ক্রিকেট খেলে আসতে পারে, তবে অন্য কারও পাকিস্তানে যাওয়ায় সমস্যা খুঁজে পাচ্ছেন না মানি, ‘শ্রীলঙ্কা যদি আসতে পারে, তার মানে পাকিস্তান নিরাপদ। কারণ, তাদের আনা খুবই বড় ঝুঁকি ছিল। একদম ক্ষুদ্র কিছু হলেও সবাই বলত, পাকিস্তানে যাওয়া নিরাপদ না। কিন্তু তারা এ দেশের মানুষের ওপর বিশ্বাস রেখেছে এবং যারা এর আগে আসেনি তারাও বলছেন যে আগে না এসে ভুল করেছেন। কারণ, তাদের যা বলা হয়েছে আর এসে যা দেখছেন, তার মধ্যে অনেক পার্থক্য।’

সফর সম্পর্কে বিসিবির সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো চূড়ান্ত কোনো আলোচনা হয়নি পিসিবির। বরং সংবাদমাধ্যমেই বাংলাদেশের ইচ্ছার কথা নাকি শুনেছেন মানি। এ কারণেই তাঁর আশা বিসিবি সফরের পক্ষেই সিদ্ধান্ত নেবে, ‘তারা যখন শ্রীলঙ্কা দলের প্রতিক্রিয়া জানবে, কীভাবে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল তা জানবে, আশা করি তারা আরেকবার ভাববে ও সফর করার সিদ্ধান্ত নেবে।’

এরপরই বাংলাদেশকে সতর্ক করে দিয়েছেন এহসান মানি। কিছুদিন আগেই পাকিস্তানের নারী দল পাঠিয়েছে বিসিবি। অনূর্ধ্ব-১৬ বাংলাদেশ দলও সফর করে এসেছে তখন। এর পর শ্রীলঙ্কা দলের সফরের পর পাকিস্তান যে ক্রিকেটের জন্য নিরাপদ সেটা প্রমাণ করে ফেলেছে পাকিস্তান। আর তাতে দুটি দল পাঠিয়ে অবদান রেখেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডই। এমন অবস্থায় পাকিস্তানকে আর নিরাপদ প্রমাণ করার দায় নেই পাকিস্তানের। বরং সফরে না আসার পেছনে বাংলাদেশকে নিরেট প্রমাণ খুঁজে বের করতে হবে, ‘আমি বহুদিন ধরে আইসিসিতে ছিলাম, আমি জানি কীভাবে এসব কাজ হয়। তাদের প্রমাণ করতে হবে পাকিস্তান নিরাপদ নয়। আমাদের ধারণা পাকিস্তান নিরাপদ এবং আমরা বিশ্বকে দেখিয়েছি আমরা নিরাপদ। দেখুন ক্রাইস্টচার্চে (বাংলাদেশ দলের একটুর জন্য বেঁচে যাওয়া) কী হয়েছিল, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডেও কী হয়। পুরো বিশ্বেই কী হচ্ছে দেখুন। নিরাপত্তার দিক থেকে পাকিস্তানের চেয়ে ভারত এখন বেশি ঝামেলায় আছে। আমি কোনো খেলোয়াড়ের নিরাপত্তা ঝুঁকি নেব না। যারা এখানে আসার ব্যাপারে চিন্তিত, তাদের সব কথা আমরা শুনব কিন্তু ওদের প্রমাণ করতে হবে এখানে আসা নিরাপদ নয়।’